শক্তিশালী পাসপোর্টের সূচকে ৩ ধাপ এগিয়েও ফিলিস্তিনের কাতারে বাংলাদেশ
Published: 23rd, July 2025 GMT
বিশ্বের শক্তিশালী পাসপোর্টের সূচকে গত বছরের তুলনায় এবার তিন ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। শক্তিশালী পাসপোর্টের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৯৪তম। তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে আছে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ফিলিস্তিন ও আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া।
গত বছরের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৭তম। তার আগের বছর ১০১তম।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স প্রকাশিত সূচকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গত শুক্রবার এ সূচক প্রকাশ করা হয়েছে।
সূচকে প্রকাশিত তথ্য বলছে, এখন বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরা আগাম ভিসা ছাড়া বিশ্বের ৩৯টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে ভালো ছিল ২০০৬ সালে, ৬৮তম। সবচেয়ে তলানিতে ছিল ২০২১ সালে, ১০৮তম।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে ভালো ছিল ২০০৬ সালে, ৬৮তম। সবচেয়ে তলানিতে ছিল ২০২১ সালে, ১০৮তম।শীর্ষে সিঙ্গাপুরএ বছরের সূচকে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সিঙ্গাপুরের। দেশটির পাসপোর্টধারীরা ১৯৩টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন। গত বছরের সূচকেও শীর্ষে ছিল সিঙ্গাপুর।
সূচকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। দেশ দুটির পাসপোর্টধারীরা ১৯০টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সাতটি দেশ। দেশগুলো হলো—ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি ও স্পেন। এসব দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৮৯টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পর্তুগাল ও সুইডেন রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে। এসব দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৮৮টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন। এ ছাড়া পঞ্চম অবস্থানে থাকা নিউজিল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডের পাসপোর্টধারীরা ১৮৭টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
সূচকে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারীরা ১৮৬টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন। সপ্তম অবস্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, চেক রিপাবলিক, হাঙ্গেরি, মাল্টা ও পোল্যান্ড। এসব দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৮৫টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
এ বছরের সূচকে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সিঙ্গাপুরের। দেশটির পাসপোর্টধারীরা ১৯৩টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন। গত বছরের সূচকেও শীর্ষে ছিল সিঙ্গাপুর।কানাডা, এস্তোনিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) রয়েছে অষ্টম অবস্থানে। এই তিন দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৮৪টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন। নবম অবস্থানে থাকা ক্রোয়েশিয়া, লাটভিয়া, স্লোভাকিয়া ও স্লোভেনিয়ার পাসপোর্টধারীরা ১৮৩টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
সূচকে দশম অবস্থানে রয়েছে দুটি নাম। যুক্তরাষ্ট্র ও লিথুয়ানিয়া। দেশ দুটির পাসপোর্টধারীরা ১৮২টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
তলানিতে আফগানিস্তান
অন্যদিকে শক্তিশালী পাসপোর্টের সূচকে এ বছর সবচেয়ে তলানিতে রয়েছে আফগানিস্তান। দেশটির অবস্থান ৯৯তম। আফগান পাসপোর্টধারীরা আগাম ভিসা ছাড়া ২৫টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। সূচকে আফগানিস্তানের ওপরে রয়েছে সিরিয়া (৯৮তম), ইরাক (৯৭তম) এবং পাকিস্তান, ইয়েমেন ও সোমালিয়া (৯৬তম)। নেপাল ও লিবিয়া রয়েছে ৯৫তম অবস্থানে।
আরও পড়ুনশক্তিশালী পাসপোর্টের সূচকে সেরা কোন দেশ, বাংলাদেশ কত নম্বরে১১ জানুয়ারি ২০২৪বাংলাদেশের ঠিক ওপরে ৯৩তম অবস্থানে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। সুদানের অবস্থান ৯২তম। ইরান ও শ্রীলঙ্কা রয়েছে ৯১তম অবস্থানে। ৯০তম অবস্থানে রয়েছে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও দক্ষিণ সুদান।
সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে মালদ্বীপ ৫৩তম, ভারত ৭৭তম এবং ভুটান ৮৪তম অবস্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুনকীভাবে করবেন ই-পাসপোর্ট০১ জুন ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল দ শ র অবস থ ন ভ রমণ করত গত বছর র আগ ম ভ স আফগ ন সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
টেক্সটাইল শিক্ষকদের দিকে তাকান
একটা রাষ্ট্রের উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার কিছু মানদণ্ড আছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মানসম্পন্ন যুগোপযোগী শিক্ষার প্রসার করা। শিক্ষকদের দুর্বল বেতনকাঠামো দিয়ে এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। শুধু তা–ই নয়, অনেক সময় নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় শিক্ষকদের বেতনও আটকে যায়। যেমন আমরা দেখছি সারা দেশে মোট ১০টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষক–কর্মচারীরা ১৪ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে গুরুত্বারোপ করা হলেও সেখানে নানা অবহেলা বিদ্যমান। এটি খুবই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০০৬ সাল থেকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বস্ত্র অধিদপ্তরের অধীন দেশের ১০টি জেলায় টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প শুরু হয়। ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ছিল। এরপর তিনবার প্রকল্পের মেয়াদ বর্ধিতকরণ হওয়ার পর ২০১৪ সালের জুনে শেষ হয়। ২০০৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পেতেন। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত অনিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। তবে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ মাস ধরে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।
শিক্ষকদের অভিযোগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। ফলে বাড়িভাড়া, সন্তানের শিক্ষা ও চিকিৎসা—সবই ব্যাহত হচ্ছে। অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষকেরা যে আর্থিক ও মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা তাঁদের পেশাদার জীবন এবং ব্যক্তিগত জীবন উভয়কেই বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
যে শিক্ষকেরা দেশের টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষ জনশক্তি তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছেন, তাঁদের এমন করুণ দশা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এই শিক্ষকেরা মনোবল হারিয়ে ফেলছেন, ক্লাসে স্বাভাবিক মনোযোগ দিতে পারছেন না এবং এর নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ছে। এমন অবস্থায় কীভাবে দেশের টেক্সটাইল খাতকে শক্তিশালী ও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলা সম্ভব, তা একটি বড় প্রশ্ন।
শিক্ষকদের এই দুর্দশা কোনো নতুন ঘটনা নয়। ২০০৬ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পের অধীনে স্থাপিত এই ইনস্টিটিউটগুলো বহু বছর ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে চলছে। আদালতের রায়ের পরও এ অচলাবস্থা কাটছে না। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট এবং চলতি বছরের ২১ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শিক্ষকদের পক্ষে রায় দিলেও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় তা কার্যকর করছে না। এই দীর্ঘসূত্রতা এবং বিচার বিভাগের আদেশকে উপেক্ষা করার প্রবণতা রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তৈরি করে।
আমরা আশা করব টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের এ দুর্দশা দ্রুত কেটে যাবে। সরকারের নীতিনির্ধারকেরা তাঁদের দিকে সুদৃষ্টি দেবেন।