ভারতের তেলেগু সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা প্রভাস। ‘বাহুবলি’ সিনেমার সাফল্যের পর রীতিমতো তারকা বনে যান তিনি। সিনেমাটির জন্য দীর্ঘদিন সময় দিয়েছেন এই অভিনেতা। এর প্রতি মনোযোগ যেন নষ্ট না হয়, এজন্য বিয়ে পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছিলেন বলেও তখন শোনা যায়। 

‘বাহুবলি’ সিনেমা মুক্তির পর প্রভাসের প্রেম-বিয়ে নিয়ে অনেক গুঞ্জন শোনা গেছে। সিনেমাটিতে তার সহ-অভিনেত্রী আনুশকা শেঠিকে বিয়ে করছেন বলেও খবর চাউর হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সবই গুঞ্জনেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফের বিয়ের ইস্যু নিয়ে খবরের শিরোনাম হলেন প্রভাস। খুব শিগগির তার বিয়ে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রভাসের কাকি। 

২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মারা যান অভিনেতা কৃষ্ণা রাজু। বরেণ্য এই অভিনেতা সম্পর্কে প্রভাসের কাকা। অভিনেতা কৃষ্ণা রাজুর স্ত্রী শ্যামলা দেবী প্রভাসের বিয়ে নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছেন। পাপারাজ্জিদের সঙ্গে আলাপকালে শ্যামলা দেবী বলেন, “মহাদেবের আশীর্বাদ যখন হবে, তখনই প্রভাসের বিয়ে হবে। আমরা সবাই তার বিয়ের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করছি, মহাদেবের কৃপায় খুব শিগগির তা বাস্তবায়িত হবে।” 

আরো পড়ুন:

ধানুশের সঙ্গে প্রেম নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন ম্রুণাল

ব্যর্থ পবন, লোকসান ১৭৩ কোটি টাকা

গত বছরের শেষের দিকে প্রভাসের বিয়ে নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছিলেন শ্যামলা দেবী। তিনি জানিয়েছিলেন, খুব শিগগির বিয়ের ঘোষণা দেবেন প্রভাস। তবে প্রভাসের হবু স্ত্রী কে তা জানতে চাইলে টুঁ-শব্দও করেননি শ্যামলা দেবী।  

প্রভাসের নাম যত নায়িকার সঙ্গে জড়িয়েছে, তার মধ্যে জোরালো গুঞ্জন রয়েছে ৪৩ বছর বয়সি আনুশকা শেঠির সঙ্গে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনিও অবিবাহিত। এক সাক্ষাৎকারে এ অভিনেত্রী বলেছিলেন—“আমি প্রভাসকে ১৫ বছর ধরে চিনি। সে আমার এমন বন্ধু যাকে রাত ৩টা সময়ও ফোন কল করতে পারি।” 

প্রভাস অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’। গত বছরের ২৭ জুন মুক্তি পায় এটি। সিনেমাটির প্রচার অনুষ্ঠানে গিয়ে এ অভিনেতা জানিয়েছিলেন, এখনই বিয়ে করছেন না তিনি। বিয়ে না করার কারণ ব্যাখ্যা করে ৪৫ বছর বয়সি প্রভাস বলেছিলেন, “আমি খুব দ্রুত বিয়ে করছি না। কারণ আমি আমার নারী ভক্তদের হৃদয় ভাঙতে চাই না।” 

প্রভাসের হাতে এখন চারটি সিনেমার কাজ রয়েছে। এগুলো হলো—‘দ্য রাজাসাব’, ‘ফৌজি’, ‘স্পিরিট’, ‘সালার টু’। 

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

দূর সমুদ্রে ভাসে ফেনায়িত বোধ

বৃষ্টিযাপনের জন্য একটি নির্জন বাড়ি

চলো আজ বৃষ্টিযাপনের জন্য একটা গল্প তৈরি করি

ধনুকের ছিলার মতো টান টান উত্তেজনাময়...

প্রথমেই তৈরি করি একটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি

ঘন বনের ভেতর বেছে নিই

কোনো একটি নির্জন স্থান

বনের পাশে থাকা চাই একটি মাঝারি উচ্চতার পাহাড়ও

ইকোট্যুরিজমের কথা মাথায় রাখতেই হবে

বাড়ি তৈরিতে অবশ্যই চাই বাঁশ, কাঠ, ছন ইত্যাদি উপকরণ

দোতলা এই বাড়িটি বনের ভেতর সাহসী বনরক্ষীর মতো

দাঁড়িয়ে থাকবে কোনো এক অন্তরঙ্গ যুগলের জন্য

আমরাই হব এই বাড়ির কাঙ্ক্ষিত প্রথম যুগল

চারদিক অন্ধকার করে

হঠাৎ ঝুমবৃষ্টি নেমে এলে

বাড়ির টেরেসে দাঁড়িয়ে

আমরা ভিজতে ভিজতে

খুনসুটিতে

পরস্পরের গায়ে হেলে পড়ব

তৈরি হবে ঘনসম্পর্কের সংবেদনময় দৃশ্য

কে জানে কোনো ধূর্ত পাপারাজ্জি

বাড়ির আড়ালে লুকিয়ে আছে কি না!

তুমি কি চাও এই অন্তরঙ্গতা ছড়িয়ে পড়ুক অন্তর্জালে?

আমি কিন্তু এই প্রশ্নের জবাবে নিরুত্তর থাকতে চাই!

কারণ, তোমাকে ছাড়া আমার পৃথিবী একদমই অচল!

কখনো কোনো অজুহাতে তুমি যেন আর

নতুন কোনো বাড়ি রচনা করতে না পারো

আমি তো তা-ই চাই!

হয়তো ওই পাপারাজ্জিই আমাদের সম্পর্কের

একমাত্র রাজসাক্ষী হয়ে থাকবে!

চলো, এবার ভেজা পোশাক পালটে নিই

তারপর ক্যাজুয়াল ড্রেস পরে ডাইনিংয়ের নরম আলোয়

পরস্পর মুখোমুখি বসি

দৃষ্টিনন্দন বেতের চেয়ার

সেগুন কাঠের তৈরি ডাইনিং টেবিল

টেবিলের ওপর নকশাতোলা ক্লথ

খাবার টেবিলে থরে থরে সাজানো

আমাদের পছন্দের খাবার

ঝাল ঝাল হাঁসের ভুনা মাংস, গরম গরম চালের রুটি

পাঁচমেশালি মাখা–মাখা সবজি

টমেটো, পেঁয়াজকুচি, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা আর

শসাসহযোগে তৈরি পুষ্টিকর সালাদ

আরও আছে আতপচালের সুগন্ধি পায়েস

এ ছাড়া লিচু, আমসহ আরও কিছু মৌসুমি ফল তো আছেই

চলো এবার ভোজনের গল্পে মেতে উঠি...

কিন্তু এর আগে কিচেন কাম খাবারঘরে

আর কী কী থাকা দরকার

চলো, এরও একটি তালিকা তৈরি করে নিই

পানির পাত্র হিসেবে চাই নকশাতোলা

একটি মাটির কলসি

ঘরের ভেতরে স্থাপন করা হোক

একটি দুমুখো মাটির চুলা

রান্না হবে মাটির হাঁড়িতে

কাঠের খড়ি দিয়ে রান্না

খাবারের মেনুতে কী কী থাকবে

তা তো আগেই বলা হলো

খাবার পরিবেশিত হবে নকশাদার

মাটির সানকিতে

মগটিও চাই মাটির তৈরি

কারণ, একদিন তো এই মাটিতেই মিশে যেতে হবে!

মাটির সঙ্গে, প্রকৃতির সঙ্গে

আগে থেকেই একটি হৃৎসম্পর্ক গড়ে তোলা ভালো না?

চলো, বাড়িটি তৈরির জন্য এক্ষুনি বেরিয়ে পড়ি

কারণ, সময় হয়তো তেমন সময় দেবে না আমাদের!

কবিতা যখন ভুল বানানের ‘প্রীয়তমা’

পাশে এসে বসো, দেখো কীভাবে শিকার করি

রাশি রাশি শব্দ, কীভাবে নতুন শব্দে গেঁথে তুলি

কবিতার জাল, আগে কিছু চিত্রকল্প তৈরি করো

অতঃপর দু–চারটি অনুপ্রাস, দাও কিছু রূপকের জোগানও

ভুলে যেয়ো না উপমা-যমকের কথা, অক্ষরবৃত্তের চিরচেনা চালটি

উঠুক দুলে এই ছন্দহীনতার কালে

বিড়ালের গলে কে পরাবে শুনি কাঙ্ক্ষিত ঘণ্টিটি?

ভুল বানানের পদ্যটি বসে আছে বারান্দায় মুখ ভার করে!

দরজা গলিয়ে ভেতরে প্রবেশ তার মানা!

যত্রতত্র ভুল বানানের পক্ষে কেন তর্ক তোলো?

তর্কে তর্কে ডুবে যায় কবিতার সদাগরি নাও

একবার এই বানানে লেখো তো ‘প্রীয়তমা’!

চোখ খুলেই দেখবে অন্য কারও হাতে হাত রেখে সে

দিগন্তে উধাও! কারণ, প্রেমে ঢুকে গেছে বিষাক্ত গরল!

কবিতা কি শুধু উশকোখুশকো চুলের লাবণ্যময়ী নারী?

বসন্তবাতাসে হু হু করা মন?

জানি, কবিতারা পরিপাটি চুলে বারান্দায় বসে রোজ

মধুক্ষরা ঠোঁট তার কথার লাবণ্য ছড়ায় গভীরতর প্রেমে

পাশে এসে বসো, মনে মনে পঙ্‌ক্তি সাজাও

পঙ্‌ক্তিভোজের কিন্তু এখনই সময়

সময় গড়ালে তাকে আর কখনো পাবে না খুঁজে!

আমি এক অতীতের সাম্পান

লন্ঠন জ্বালো

তোমাদের আজ পেছনে ফেরাতে চাই

হ্যাজাক বাতিটার কথা মনে পড়ে?

এর উষ্ণ আলোয় পতঙ্গকুলের

কী সবাক উপস্থিতি!

ম্যান্টলটা পুড়ে গেছে প্রায়

আরেকটা লাগাও শিগগির

নিশানে নিশানে সজ্জিত বৈঠকঘর

নওশা এল বলে!

সকাল থেকে বাজছে গ্রামোফোন

ছায়ানিবিড় পুকুরপাড়ে

শীতলপাটিতে হল্লা জমেছে যে বেশ!

মীনা কুমারীর ‘বাচপান কি মুহাব্বাত’

লতাজি এলেন, এলেন মোহাম্মদ রফিও

সুরের নৌকায় অদ্ভুত আনন্দঢেউ...

ফরসি হুঁকা থেকে উড়ছে হালকা ধোঁয়া

সুগন্ধি ভাসে বাতাসে

কলাগাছ পোঁতা গেইটটা তো আছে ঠিক?

লন্ঠন জ্বালো

তোমাদের আজ অতীতে ফেরাতে চাই

দেখো, ভোরবিহানে রেহেলে উঠেছে ঢেউ

সুললিত সুর ভাসে বাড়ির মক্তবে

হয়তো থেমে গেছে মরুবেদুইন

উটের কাফেলা

দরজায় কড়া নাড়ে মায়াময় ভোর!

লন্ঠন জ্বালো

চোখ রাখো তবে টাইমমেশিনের স্ক্রিনে

দেখো, অতীত জেগেছে

ডানা মেলে রোদ্দুরে

চিনির বাসনে বাহারি নকশি পিঠা

চিলমচিটা আনো

নওশা বসেছে দলবলসহ

নাশতায় হাসে নকশি পিঠা আর রসপুলি যত

শস্যভরা ডোল-মটকা

পুকুরের জলে রুই-কাতলার লাফ

ঝাঁকিজাল আনো, আজ তবে মৎস্য শিকার

সিন্দুকে আছে কাঁড়ি কাঁড়ি কড়ি

দৌড়ে ধরো লেজতোলা রাতাটা

কোরমা–পোলাও দুপুরের ভোজ

সঙ্গে মুরগি–দুরুস

এক্ষুনি আনো তবক দেওয়া পান

ওরে ও নাগর, দমে দমে চিবাও

আমি এক অতীতের সাম্পান!

বুড়ি নদী ও মনসুর হাল্লাজ

ও আমার বুড়ি নদী,

বুকের বাঁপাশে খচখচ করা নস্টালজিয়া

ফেলে আসা রঙিন শৈশব

কৈশোরের বর্ণময় রূপকথা

মনে পড়ে আমাকে?

হাফপ্যান্ট পরা সেই লিকলিকে ছেলেটি

শর্ষে খেতের দিগন্তছোঁয়া হলুদ পেরিয়ে

ঠিক লাল ফড়িংয়ের মতো লাফাতে লাফাতে

পার হতো তোমার অগভীর জল

আহা! দড়িটানা গুদারা নাও

ঘাটের মালিক

মাধবপুরের ননী মাঝি আর প্রাণবন্ধু

মামা-ভাগনের কী উষ্ণ সম্পর্কের দিন

কেমন আছ তোমরা?

গাঁটের কড়িতে ছিল যাত্রী পারাপার

আমরাও যেতাম

সিনা টান টান করে

টাকাকড়ির কোনো তোয়াক্কা ছিল না

সাকিন কোরবানপুর ভূঁইয়াবাড়ি

ধানশস্যের ‘তোলা’ যেত ফি বছর

তোমাদের হা-মুখ গোলায়

আহা! কী রঙিন শৈশব আমার...

বুড়ি নদী, লক্ষ্মী বোন আমার,

তোমার কাকচক্ষু জল

যেন শীতের সম্বল

হালের বলদেরা সাঁতরে সাঁতরে হতো পার

কাঁধে নিয়ে লাঙল-জোয়াল

চাষা ভাইও খাসা গলায় ধরত গান!

তুমি ভাই ভাটির রাখাল, আমি যেন দূরবর্তী উজান!

ও আমার বুড়ি নদী

তুমি গ্রিক পুরাণের লিথি নও

কেন হবে বিস্মরণের লিথি?

তুমি তো আমার জনম জনমের স্মৃতিকাতরতা

হৃৎসম্পর্কের রোদবৃষ্টিঝড়

তোমাকে পাড়ি দিই স্বপ্নে ও সম্ভাবনায়

তুমি যে আমার হৃদয়ের ঈশ্বর!

ও আমার বুড়ি নদী,

আষাঢ়ের তীর ভাঙা প্লাবনের ঘোলা জল

তীব্রস্রোতা...

গোমতী তোমার মা

দূর তিতাসের সহোদর তুমি

মেঘনা তোমার পিসি কি মাসি

সঙ্গমে সঙ্গমে জীবনের ইতিকথা

দূর সমুদ্রে ভাসে ফেনায়িত বোধ

আমার সুফিবাদী মন

‘আনাল হক, আনাল হক’

পরোয়া করি না মৃত্যু পরোয়ানা

আমি এক পূর্ণপ্রাণ সাধুসন্ত

সদা প্রস্তুত আমার মৃত্যুসাজ

আমার নাম মনসুর হাল্লাজ!

সন্ধ্যা ও শঙ্খলাগা সাপ

যৌবনের এক সন্ধ্যাবেলায়

দেখেছিলাম

এক জোড়া সাপ

শঙ্খলাগা

বাড়ির চাতালে

ঘাসের মধ্যে গড়াগড়ি

বিষের ছোবল?

নেই!

বাড়িজুড়ে হইহল্লা

নেই পরোয়া কোনো

সন্ধ্যা থেকে রাত গড়াল

সিনীবালী রাত

বৃষ্টিভেজা

গাছগাছালি

কাছে-দূরের সকল সবুজ

গজারিবন

আজ

রঙ্গপ্রিয় মনটা আমার

করে যে গুঞ্জন

কোথায় আছে

ডাকবাংলো?

দূরের বনে!

রিজারভেশন?

হুম!

রাত নেমেছে

ফরেস্টজুড়ে

শরীর বেয়াড়া!

ও সাপ যুগল

ভোরের আগে শেষ হবে তো

তোদের শঙ্খলীলা?

আমিও যে লীলাপ্রিয়

যদি ডাকে

গোধূলিবন

পাঠ করেছি

রতিশাস্ত্র

কলা চৌষট্টি

শিল্প থেকে চুম্বনকলা

সব পড়েছি

একাকিত্বকালে

বাৎসায়ন তো

আমার স্বজন

কাম-সূত্রে

মন বেঁধেছি

রঙিন ঘুড়ি এক

উড়ছে উড়ুক

ঘুরছে ঘুরুক

ডুবুক লিথির জলে

মন পুড়ছে

পুড়ুক তবে

শরীরবিদ্যা পাঠ

এই চিন্তা, এই ভাবনা

আলোছায়া রোদ্দুরে

ফ্রয়েড আসুক

ভালোবাসুক

ভালোবাসুক

জীবন এবং মৃত্যুরে

শঙ্খলাগা সাপ

উথলে ওঠে মনযমুনা

দেহের অভিশাপ!

সম্পর্কিত নিবন্ধ