প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের কারণে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশের অর্থনীতি শক্ত অবস্থানে ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “স্বৈরশাসনের সময় ব্যাংক খালি করে পুরো আর্থিক ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু প্রবাসীদের অবিরাম শ্রম ও রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে।”

আরো পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিল মালয়েশিয়া

কুয়ালালামপুরে অধ্যাপক ইউনূস ও আনোয়ার ইব্রাহিমের বৈঠক আজ

তিনি বলেন, “প্রবাসীদের ভোটাধিকার এখন নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে তারা ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।” 

রেমিট্যান্স প্রেরণ ও প্রবাসীদের অবদানের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার পেছনে তাদের ভূমিকা অপরিসীম।”

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসীদের যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন, তাদের সমস্যা সমাধানে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করবে।”

তিনি অভিবাসন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে বলেন, “বিদেশে আসার আগে বৈধ কাগজপত্র প্রস্তুত রেখে অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জরুরি, যাতে বিদেশে এসে কোনো ধরনের জটিলতা বা হয়রানির সম্মুখীন না হতে হয়।”

মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী ও কর্পোরেট প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা জানান, দেশটির ব্যবসায়ী মহলের কাছ থেকে বাংলাদেশে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে। এই বিনিয়োগ ভবিষ্যতে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামীম আহসান।

আলোচনায় আরো অংশ নেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড.

আসিফ নজরুল ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার কুয়ালালামপুরে পৌঁছান অধ্যাপক ইউনূস। 

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব স প রব স দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে পড়াশোনার খরচ পাঠাতে ব্যাংকে ‘স্টুডেন্ট ফাইল’ খোলা বাধ্যতামূলক, কী কী লাগে

বাংলাদেশ থেকে এখন অনেক শিক্ষার্থীই বিদেশে পড়তে যেতে চান। কেউ কেউ তো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়েও বিদেশে চলে যাচ্ছেন। তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে যান।

কিন্তু পড়াশোনাসহ অন্যান্য খরচ পাঠাতে শিক্ষার্থীকে দেশের ব্যাংকে ‘স্টুডেন্ট ফাইল’ খুলতে হয়। এ জন্য দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে স্টুডেন্ট ফাইল খোলা যায়। বিদেশ যাওয়ার আগে এটি খুলতে হয়।

স্টুডেন্ট ফাইল কী

স্টুডেন্ট ফাইল হলো বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের একধরনের ব্যাংক হিসাব। এই হিসাব ব্যবহার করে সহজেই টিউশন ফি ও থাকা–খাওয়ার খরচ যেকোনো বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে পারবেন। এ জন্য ওই শিক্ষার্থীকে একটি ডেবিট কার্ড দেওয়া হয়। ওই কার্ড ব্যবহার করে নিজের খরচ মেটাতে পারবেন। এ ছাড়া কিছু ব্যাংক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য ঋণও দিয়ে থাকে। ভিসা হওয়ার পর এই স্টুডেন্ট ফাইল খোলার আবেদন করতে হয়। এই স্টুডেন্ট ফাইলের মাধ্যমে শুধু ভর্তির খরচ নয়, ভবিষ্যতে সেমিস্টার ফির অর্থ পাঠানো যায়।

খরচ কত

ব্যাংকভেদে শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের স্টুডেন্ট ফাইল খোলার খরচও ভিন্ন হয়। তবে মোটাদাগে, এই খরচ ১০ হাজার টাকার মধ্যে থাকে। কিছু ব্যাংকে এই সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছে পৃথক বুথ। কোনো কোনো ব্যাংক দিনে দিনেই এই হিসাব খোলার সুযোগ দিচ্ছে। এই সেবায় এগিয়ে আছে পূবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো এই সেবা দিচ্ছে।

কী কী লাগবে

এবার দেখে নিই, এ ধরনের স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে ও সচল রাখতে কী যোগ্যতা লাগে এবং কী কী নথিপত্র প্রয়োজন।

১. যোগ্যতা ও নথিপত্র

এ ধরনের হিসাব খুলতে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর জন্য কিছু কাগজপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া কিছু তথ্যও দিতে হয়, যেমন শিক্ষার্থীর নাম, শিক্ষার্থীর ছবি, কোর্সের সময় উল্লেখ করে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইস্যুকৃত অফার লেটার, টিউশন ফি ও থাকা–খাওয়ার খরচের বিবরণ, বাংলাদেশে শেষ করা শিক্ষাগত সনদ, অভিভাবকের বিবরণ, পাসপোর্টের অনুলিপি ও আবেদনকারীর ভিসার কপি।

২. অভিভাবকের হিসাব

এই স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে হলে ওই নির্দিষ্ট ব্যাংকে শিক্ষার্থীর অভিভাবকের হিসাব থাকতে হবে। হিসাব না থাকলে নতুন করে তাঁদের নামে হিসাব খুলতে হবে। কারণ, অভিভাবকদের হিসাব থেকেই স্টুডেন্ট ফাইলে অর্থ পাঠাতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।

৩. সেমিস্টারের ফলাফল

এই স্টুডেন্ট ফাইলের মাধ্যমে শুধু ভর্তির খরচ নয়, ওই শিক্ষার্থী দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরবর্তী সেমিস্টার ফির অর্থ পাঠানো যায়। এ জন্য কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়, যেমন পূর্ববর্তী সেমিস্টারের অর্থ প্রদানের রসিদ, পূর্ববর্তী সেমিস্টারের ফলাফল কিংবা ট্রান্সক্রিপ্ট, নতুন সেমিস্টারের টিউশন ফির ইনভয়েস ইত্যাদি।

কেন স্টুডেন্ট ফাইল

বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে বিদেশি ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো বেশ জটিল। নানা সংস্থা থেকে অনুমতি লাগে। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করেন। তাঁদের টিউশন ফিসহ বিভিন্ন খরচ দেশ থেকে পাঠানো হয়। শিক্ষার্থীদের খরচ পাঠাতে ব্যাংকের স্টুডেন্ট ফাইল বেশ কার্যকর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশে পড়াশোনার খরচ পাঠাতে ব্যাংকে ‘স্টুডেন্ট ফাইল’ খোলা বাধ্যতামূলক, কী কী লাগে