নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণায় এনসিপির অসন্তোষ
Published: 29th, August 2025 GMT
ঘোষিত নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর বাংলামোটরে অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব।
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করতে পারে। সনদ বাস্তবায়নের আগে নির্বাচন পরিকল্পনা ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করতে পারে।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর জনগণের প্রত্যাশা ছিল বিচার ও সংস্কারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যেই গঠিত হয়েছিল বিভিন্ন সংস্কার কমিশন, যেখানে এনসিপিও নিজস্ব প্রস্তাবনা জমা দেয়।”
আদীব বলেন, “জুলাই সনদের খসড়া হাতে পেয়েই আমরা আমাদের মতামত লিখিতভাবে জমা দিয়েছি। তবে খসড়ায় রোডম্যাপের অভাব ছিলো চোখে পড়ার মতো। ঐকমত্য কমিশনে সনদ বাস্তবায়নের ছয়টি সম্ভাব্য পদ্ধতি আলোচনা হয়েছে। আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছি।”
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা এক ঘোষণায় বলেন, ২০২৬ সালের রমজানের আগেই নির্বাচন হতে পারে। তবে শর্ত ছিল বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে দৃশ্যমান অগ্রগতি। এনসিপির মতে, নির্বাচনকালীন প্রস্তুতির আগেই সংস্কার রোডম্যাপ চূড়ান্ত হওয়া জরুরি ছিল।
এনসিপি হতাশা প্রকাশ করে জানায়, অজ্ঞাত কারণে ঐকমত্য কমিশনের পরবর্তী বৈঠক পিছিয়ে গেছে এবং এখনো সনদের আইনি ভিত্তি নিয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির অবস্থান স্পষ্ট করে বলা হয়, “আমরা নির্বাচনের বিপক্ষে নই। বরং গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য নির্বাচন অত্যাবশ্যক। তবে আগে সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে। নয়তো ভবিষ্যতে যে কোনো রাজনৈতিক সংকটের দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।”
সংবাদ সম্মেলন শেষে এনসিপি তাদের পরবর্তী কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার নেতাদের নিয়ে একটি বিশেষ পরামর্শ সভা আয়োজনের ঘোষণা দেয়। সেখানে সনদ বাস্তবায়ন ও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে দিকনির্দেশনা চূড়ান্ত করা হবে।
ঢাকা/এএএম/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কোনো শক্তি বা হুংকার দিয়ে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। জনগণ যদি গণতন্ত্রের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, রাজনৈতিক সংস্কার কার্যকর হবে এবং লুণ্ঠিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ ফেরত আসবে।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন
বাগেরহাটে হরতাল প্রত্যাহার, নির্বাচন অফিস ঘেরাওয়ের ঘোষণা
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের পক্ষে জেগে উঠলে কোনো শক্তিই নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঠেকাতে পারবে না। গণতন্ত্র থাকলে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে, রাষ্ট্রের সম্পদ সুরক্ষিত থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে এবং জনগণের আস্থা অর্জন করে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন, হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান, সহ-সভাপতি শাহিনুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এসএম রেজা বিপুল প্রমুখ।
নেতাকর্মীরা এ সময় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলীয় কার্যক্রমকে আরো বেগবান করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সংগঠনকে সক্রিয় করে জনগণের মাঝে বিএনপিকে শক্তিশালীভাবে উপস্থাপনের আহ্বান জানান।
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী