কোন চাকরি সত্যিই ভালো—যাচাই করুন ৫ মানদণ্ডে
Published: 21st, October 2025 GMT
চাকরি মানেই শুধু বেতন নয়। কাজের নিরাপত্তা, কর্মপরিবেশ, নিজের সময় ও ক্ষমতা—এসব মিলিয়ে যে চাকরিটি জীবনকে সুবিধাজনক করে তোলে, সেটিই বলা যায় ‘গুণগত মানের চাকরি’। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের চাকরি কতটা পাওয়া যায়, সেটা অনেকেই ঠিক জানেন না। সম্প্রতি একটি বৈশ্বিক সমীক্ষা অনুযায়ী, চাকরির মান নির্ধারণের পাঁচটি মাপকাঠি রয়েছে, যা আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে—আপনার চাকরিতে কি সত্যিই সুবিধা, সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নতির সুযোগ আছে কি না।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জরিপ সংস্থা গ্যালাপের মতে, বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষের চাকরি জীবনের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ২০২৫ সালের জরিপে অংশ নেওয়া ১৮ হাজার ৪০০ কর্মীর অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে গ্যালাপ জানায়, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে মাত্র দুজন মনে করেন, তাঁদের চাকরি সম্মানজনক, নিরাপদ এবং উন্নতির সুযোগসমৃদ্ধ।
আরও পড়ুনসাইনবোর্ডে ‘কলেজ’, লেখাপড়া নেই ২০ ঘণ্টা আগেবেতন ও আর্থিক নিরাপত্তা
বাংলাদেশে বেশির ভাগ কর্মী জানেন না, তাঁদের বেতন জীবনযাত্রার প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট কি না। গড়ে একটি মাঝারি পরিবারকে চালানোর জন্য মাসিক খরচ কত, সেটার সঙ্গে বেতন মিলিয়ে চাকরির মান নির্ধারণ করা যায়। বিশেষ করে, প্রাইভেট সেক্টরের অনেক কর্মকর্তা বা কর্মকর্তা-পর্যায়ের কর্মীর বেতন নিয়মিত বাড়ছে না, অনেক ক্ষেত্রে সময়মতো বেতন পাওয়াও কঠিন।
ঢাকার একটি বহুজাতিক সংস্থার জুনিয়র অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মাসে যা বেতন পাই, তা শহরের বাসাভাড়া ও খরচ মেটাতে যথেষ্ট নয়। তাই আরও একটি খণ্ডকালীন চাকরি করতে হয়।’ আর্থিক নিরাপত্তা থাকলে কর্মী নিজেকে মানসিকভাবে সুরক্ষিত মনে করে, যা কাজের প্রতি উৎসাহ বাড়ায়।
আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিংয়ে নামার আগে এ পাঁচটি বিষয় ভাবুন১৯ অক্টোবর ২০২৫ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র চ কর
এছাড়াও পড়ুন:
এক মার্কিন প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় যেভাবে গোপনে ভেনেজুয়েলা ছাড়েন মাচাদো
ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো চলতি সপ্তাহে যেকোনো মূল্যে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। নিজে উপস্থিত থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। কিন্তু আত্মগোপন অবস্থা থেকে নিরাপদে অসলো পৌঁছানো তাঁর জন্য সহজ ছিল না। কারণ, এ জন্য তাঁকে সামরিক তল্লাশিচৌকি এড়ানো, দীর্ঘ উত্তাল সমুদ্রপথ পাড়ি দেওয়া এবং সাগরে যে তাঁর নৌযান মার্কিন ড্রোন হামলার শিকার হবে না, সে অনিশ্চয়তায়ও ভরসা রাখতে হয়েছিল।
মাচাদো কয়েকটি নৌযানের একটি বহরে গোপনে ভেনেজুয়েলা ছেড়েছিলেন। ক্যারিবীয় অঞ্চলের একটি দ্বীপে পৌঁছানো ছিল তাঁর লক্ষ্য। সেখানে তাঁর জন্য একটি উড়োজাহাজ অপেক্ষা করছিল। কিন্তু এমন এক সময়ে তিনি এ বিপৎসংকুল সফর শুরু করেছিলেন, যখন ভেনেজুয়েলার আশপাশের সাগরে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানে হামলা চালাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এসব হামলায় অনেকে নিহত হয়েছেন।
মাচাদো অসলোতে পৌঁছেছিলেন ঠিকই। কিন্তু অনেক দেরিতে। ততক্ষণে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান হয়ে গেছে। বুধবার রাতে তিনি অসলো পৌঁছান। তবে এসব প্রতিকূল পরিবেশ এড়িয়ে অসলোতে পৌঁছানোতে তাঁর সমর্থকেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সরকারের চোখে ধুলা দিয়ে মাচাদোর অসলো পৌঁছাতে পারা বড় অর্জন। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, তিনি এখনো লাতিন আমেরিকার দেশটির রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। গত এক বছর মাদুরো সরকারের নজর এড়িয়ে চলেছিলেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেত্রী।
মাচাদোকে নিরাপদে ভেনেজুয়েলা ছাড়তে যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে। বিশেষ অভিযান এবং গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ আছে—যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত এমন কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। তাদের সমন্বিত সহায়তা ছাড়া মাচাদোর পক্ষে ভেনেজুয়েলা ছাড়া প্রায় অসম্ভব ছিল। কারণ, মাদুরো প্রশাসন তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল।
সংস্থাটির নাম ‘গ্রে বুল রেসকিউ’। এর নেতা ব্রায়ান স্টার্ন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এই চেষ্টা যাঁরা করেছেন, তাঁদের মধ্যে আমরাই প্রথম নই।’
আরও পড়ুনআত্মগোপনে থাকা মাচাদো ১১ মাস পর প্রকাশ্যে, পৌঁছেছেন অসলোতে১১ ডিসেম্বর ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ট্যাম্প শহরভিত্তিক সংস্থাটি মাচাদোসহ এ নিয়ে তাদের ৮০০তম অভিযানটি পরিচালনা করেছে। ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের সময়ে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার অভিজ্ঞতা থেকে প্রতিষ্ঠানটি গঠন করা হয়েছিল। ব্রায়ান স্টার্ন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
স্টার্ন বলেন, মাচাদোকে ভেনেজুয়েলা থেকে বের করাটা বেশ কঠিন ছিল। দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ থেকে মক্কেলদের উদ্ধার করেন, তাঁদের জন্যও এটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।
আরও পড়ুনভেনেজুয়েলা ছাড়তে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে: মাচাদো১২ ডিসেম্বর ২০২৫এ বিষয়ে স্টার্ন বলেন, ‘আমাদের পুরো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সাধারণত কম পরিচিত ব্যক্তিদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু মাচাদো ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি নিজেই ছিলেন এ অভিযানের মূল চ্যালেঞ্জ।’
‘গ্রে বুল রেসকিউ’ মাচাদোকে উদ্ধার করেছে—এ কথা তাঁর একজন প্রতিনিধি নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু স্টার্নের সব বক্তব্য আলাদা করে যাচাই করা যায়নি। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মাচাদোর ভেনেজুয়েলা ছাড়ার বিষয়ে প্রথম বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছিল।
আরও পড়ুনস্বৈরশাসন শেষ করতে দেশে ফিরবেন মারিয়া মাচাদো ১১ ডিসেম্বর ২০২৫