বাংলাদেশে গুম–খুনের বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি নির্বিচার গ্রেপ্তার বন্ধ ও আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার চিঠির বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, সরকারের পক্ষে তাদের সবকিছু মেনে নেওয়া কখনোই সম্ভব হবে না।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকে নিজ নিজ কাজ করবে, আমরা এটাই মনে করি। হিউম্যান রাইটস সংগঠনগুলো তাদের কাজ করবে। সরকারের পক্ষে তাদের সবকিছু মেনে নেওয়া কখনোই সম্ভব হবে না। অবশ্যই আমরা যখন কোনো মানবাধিকার নিয়ে কোনো কনসার্ন (উদ্বেগ) আসে, সেটাকে আমরা বিবেচনায় নিই এবং সরকারের পক্ষে যেটুকু সম্ভব সেটা করা হয়।’

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা রোধে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ (এইচআরডব্লিউ) ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে ওই চিঠি প্রকাশ করা হয়।

চিঠিতে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে যে অল্প সময় রয়েছে, সেই সময়ে মানবাধিকার রক্ষার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই বিগত সরকারের অধীনে সংঘটিত গুরুতর নিপীড়নের জন্য বিচার নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে, একই সঙ্গে অবিলম্বে চলমান নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক বন্ধ করতে হবে। তা ছাড়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর বিস্তৃত পরিসরে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে।

এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সবার দৃষ্টিভঙ্গি এক নয়। প্রত্যেকে তাঁদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই কথাবার্তা বলে থাকেন। সরকারকে অনেক কিছু বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। আমার মনে হয়, আমরা এটাকে এভাবেই দেখব।’

ছয় মানবাধিকার সংগঠনের চিঠির বিষয়ে সরকার প্রতিক্রিয়া জানাবে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা আমাদের অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দিয়েছে। আমরা আমাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ করব। কোনো একটা স্টেজে (পর্যায়ে) যদি তাদের কোনো একটা বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকে বা তারা কোনো বিশেষ আমাদের কাছ থেকে কোনো উত্তর চান, সেটা অবশ্যই জানাব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম নব ধ ক র স র আহ ব ন জ ন পরর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৪ প্রবাসীর নিবন্ধন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোট দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৪ প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার নিবন্ধন করেছেন। নিবন্ধন করা ভোটারদের মধ্যে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৯ পুরুষ ও ১৮ হাজার ৯৬৫ নারী রয়েছেন।

আজ শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সঠিক ঠিকানা প্রদান

পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনের সময় সঠিক ঠিকানা দেওয়ার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আপনার (প্রবাসী) অবস্থানকালে দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা দিন। প্রয়োজনে কর্মস্থল অথবা পরিচিতজনের ঠিকানা দিন।

আরও বলা হয়, নিবন্ধনের সময় ভুল ঠিকানা দিলে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধনের জন্য মোবাইল অ্যাপের এডিট মেনু ব্যবহার করুন। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা দেওয়া ছাড়া পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারদের কাছে পাঠানো সম্ভব হবে না।

আজ আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি–এসডিআই) প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমদ খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

দেশভিত্তিক নিবন্ধনের মধ্যে সৌদি আরবের ৩৮ হাজার ২৬৯ ও যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ হাজার ২৭১ প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের প্রক্রিয়া বিশ্বের সব দেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।

এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, ‘আউট অব কান্ট্রি ভোটিংয়ের ব্যাপারে নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়িয়ে ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে। এখন বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকেই আমাদের এই অ্যাপ ডাউনলোড করে যে কেউ ভোটার নিবন্ধন করতে পারেন।’

ইসি সচিব জানান, নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া সরকারি কর্মকর্তা, আইনি হেফাজতে থাকা ভোটার ও নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্যও ইন–কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিং (আইসিপিভি) প্রক্রিয়া চালু করা হবে।

আখতার আহমেদ আরও জানান, আইসিপিভি ইন–কান্ট্রি পোস্টাল ভোটের বিষয়ে তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৫ দিনের মেয়াদে নিবন্ধনের প্রক্রিয়াটি চালু করা হবে।

গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেন।

পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের জন্য প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন, সেই দেশের মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে। বিদেশে ব্যালট প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সঠিক ঠিকানা দেওয়া অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ