তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গণজমায়েত ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে এ আয়োজন করেন তারা।

আরো পড়ুন:

চবির হল সম্পাদককে নিজের টাকায় ইশতেহার পূরণ করতে বললেন প্রাধ্যক্ষ

জোবায়েদ হত্যার বিচার যেন গ্রেপ্তারেই সীমাবদ্ধ না থাকে: জবি উপাচার্য

এ সময় তারা ‘দাবি মোদের একটাই, তিস্তা নদীর পানি চাই’, ‘জাগো বাহে কণ্ঠে সবাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এছাড়া তারা বিভিন্ন গানে গানে প্রতিবাদ জানান।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, “আমরা তিস্তা পানির ন্যায্য হিসাব চাই, সেটা হোক তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, উচু বাঁধ নির্মাণ করে বা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে। আমাদের দাবি একটায় তিস্তা নদীর পানি চাই।”

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী স্বায়ন্তী বলেন, “তিস্তা বাঁচাও, এটা আমাদের অধিকার। আমাদের দীর্ঘ দিনের খরস্রোতার তিস্তা আজ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। যখন পানির প্রয়োজন নেই, তখন আমাদের পানি দিয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে। আর যখন পানির দরকার সবচেয়ে বেশি, তখনই পানির স্রোত আটকে দিচ্ছে। আমাদের ন্যায্য হিস্যা ফিরিয়ে দিতে হবে।”

সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ফাহিম রেজা বলেন, “তিস্তা আমাদের প্রাণের দাবি, আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই নদী। আজ উত্তরবঙ্গের জেলা ও ফসলের মাঠ প্লাবিত হচ্ছে, কৃষকের জমিতে পানি না থাকায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। অথচ আমাদের তথাকথিত ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ ভারতের সঙ্গে করা তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির বাস্তবায়ন আজও হয়নি।”

তিনি বলেন, “চুক্তির নামে যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার কিছুই আমরা পাইনি। আজকের এই সমাবেশ থেকে আমরা দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই, দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলো বাতিল করতে হবে। বাংলাদেশের নদীর পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশই; এখানে ভারতের অনুমতির কোনো প্রয়োজন নেই।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা দেখেছি, নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে—কখনো প্রকল্পে বাধা, কখনো ভিন্ন অজুহাতে আমাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। কিন্তু জনগণ এখন সচেতন, কেউ আর বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারবে না। তিস্তা প্রকল্পের বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। আমরা চাই, চীনের সঙ্গে করা তিস্তা চুক্তি দ্রুত কার্যকর হোক এবং বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পও বাস্তবায়িত হোক।”

আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, “যদি বাইরের কেউ এসে আমাদের পানি সম্পদ এবং নদী–নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হস্তক্ষেপ করে, তা আমরা কখনই মেনে নেব না। তিস্তা ও ফারাক্কা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে উপেক্ষা করে অন্য কোনো পক্ষের নির্দেশ মানা হবে না।”

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “তিস্তার পানির সংকটের ফলে প্রতি বছর প্রচুর ধান উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই আমরা দাবি জানাই: বাংলাদেশে হওয়া কোনো চুক্তি বা সিদ্ধান্তই আমাদের স্বার্থের বিপরীতে হবে না; এমন সব চুক্তি বাতিল করা হোক বা পুনর্বিবেচনা করা হোক, যাতে কৃষক-জীবিকা ও খাদ্য সুরক্ষা পায়।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে রাবিতে গণজমায়েত

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গণজমায়েত ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে এ আয়োজন করেন তারা।

আরো পড়ুন:

চবির হল সম্পাদককে নিজের টাকায় ইশতেহার পূরণ করতে বললেন প্রাধ্যক্ষ

জোবায়েদ হত্যার বিচার যেন গ্রেপ্তারেই সীমাবদ্ধ না থাকে: জবি উপাচার্য

এ সময় তারা ‘দাবি মোদের একটাই, তিস্তা নদীর পানি চাই’, ‘জাগো বাহে কণ্ঠে সবাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এছাড়া তারা বিভিন্ন গানে গানে প্রতিবাদ জানান।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, “আমরা তিস্তা পানির ন্যায্য হিসাব চাই, সেটা হোক তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, উচু বাঁধ নির্মাণ করে বা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে। আমাদের দাবি একটায় তিস্তা নদীর পানি চাই।”

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী স্বায়ন্তী বলেন, “তিস্তা বাঁচাও, এটা আমাদের অধিকার। আমাদের দীর্ঘ দিনের খরস্রোতার তিস্তা আজ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। যখন পানির প্রয়োজন নেই, তখন আমাদের পানি দিয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে। আর যখন পানির দরকার সবচেয়ে বেশি, তখনই পানির স্রোত আটকে দিচ্ছে। আমাদের ন্যায্য হিস্যা ফিরিয়ে দিতে হবে।”

সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ফাহিম রেজা বলেন, “তিস্তা আমাদের প্রাণের দাবি, আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই নদী। আজ উত্তরবঙ্গের জেলা ও ফসলের মাঠ প্লাবিত হচ্ছে, কৃষকের জমিতে পানি না থাকায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। অথচ আমাদের তথাকথিত ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ ভারতের সঙ্গে করা তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির বাস্তবায়ন আজও হয়নি।”

তিনি বলেন, “চুক্তির নামে যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার কিছুই আমরা পাইনি। আজকের এই সমাবেশ থেকে আমরা দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই, দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলো বাতিল করতে হবে। বাংলাদেশের নদীর পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশই; এখানে ভারতের অনুমতির কোনো প্রয়োজন নেই।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা দেখেছি, নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে—কখনো প্রকল্পে বাধা, কখনো ভিন্ন অজুহাতে আমাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। কিন্তু জনগণ এখন সচেতন, কেউ আর বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারবে না। তিস্তা প্রকল্পের বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। আমরা চাই, চীনের সঙ্গে করা তিস্তা চুক্তি দ্রুত কার্যকর হোক এবং বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পও বাস্তবায়িত হোক।”

আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, “যদি বাইরের কেউ এসে আমাদের পানি সম্পদ এবং নদী–নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হস্তক্ষেপ করে, তা আমরা কখনই মেনে নেব না। তিস্তা ও ফারাক্কা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে উপেক্ষা করে অন্য কোনো পক্ষের নির্দেশ মানা হবে না।”

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “তিস্তার পানির সংকটের ফলে প্রতি বছর প্রচুর ধান উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই আমরা দাবি জানাই: বাংলাদেশে হওয়া কোনো চুক্তি বা সিদ্ধান্তই আমাদের স্বার্থের বিপরীতে হবে না; এমন সব চুক্তি বাতিল করা হোক বা পুনর্বিবেচনা করা হোক, যাতে কৃষক-জীবিকা ও খাদ্য সুরক্ষা পায়।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ