আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট নিরসনের দাবি
Published: 21st, October 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরের আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আজ দুপুর ১২টার দিকে মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
কলেজ চত্বরে মিছিল করে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ সারোয়ার। সংবাদ সম্মেলনে কলেজের ভবিষ্যৎ, শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা ও কলেজের প্রশাসনিক সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়।
রিয়াদ সারোয়ার বলেন, দুই মাস ধরে কলেজে অধ্যক্ষ না থাকায় প্রশাসনিক শৃঙ্খলা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। নবনির্মিত হিন্দু হলটি এখনো চালু হয়নি। হিন্দু শিক্ষার্থীরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা বৈষম্যমূলক। শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র ও ছাড়পত্র উত্তোলনসহ অন্যান্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজের সার্বিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর কলেজ প্রাঙ্গণে মাদকসেবীরা অবস্থান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ। দাবিগুলো হলো অবিলম্বে অধ্যক্ষ পদায়ন, পদায়নের আগপর্যন্ত কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে জেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ, পদায়নপ্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা, হিন্দু হল দ্রুত চালু, প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীদের দমনে যথাযথ ব্যবস্থা এবং কলেজ ক্যাম্পাসে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন করা।
প্রসঙ্গত, আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহকে গত ৩১ জুলাই ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করায় ৩ আগস্ট বিকেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন উপাধ্যক্ষ সাকির হোসেন। তাঁর অপসারণ দাবিতে ১২ আগস্ট থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলন শুরু করে। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। ১৮ আগস্ট কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে একাডেমিক কাউন্সিল ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ডাকা হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের ভেতরে শিক্ষকদের নিয়ে সভা করছেন—এই খবরে শিক্ষার্থীরা ফিন্যান্স বিভাগেও তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদা কাগজে লেখেন, ‘আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন করব না’। এরপর পুলিশি পাহারায় কলেজ ত্যাগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেন। এর পর থেকে তিনি আর কলেজে যেতে পারছেন না।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেন বলেন, ‘আমিও চাই কলেজের চলমান সংকট নিরসন হোক। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, আমার ত্রুটি কোথায়? আমার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই, কারও পক্ষপাতিত্ব করেছি এমনও না। তাহলে কেন বিনা কারণে তারা এমন করল? আমি চাই, আমি থাকি বা না থাকি, কলেজটি ভালোভাবে চলুক।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
ফাউন্টেনপেন, কালি ও দোয়াতের প্রদর্শনীতে ইতিহাসের রেখাপাত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সাহিত্যিকদের নামের সঙ্গে মিশে আছে ফাউন্টেনপেন বা ঝরনাকলমের নাম। ফাউন্টেনপেনে লিখেছেন আরও অনেক বিখ্যাত মানুষ। দোয়াত ও কালি দিয়ে লেখা হতো ফাউন্টেনপেনে। কিন্তু বলপয়েন্টের প্রচলনের পর ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে ফাউন্টেনপেন।
দেশের একদল সংগ্রাহক ফাউন্টেনপেনের ইতিহাসকে জাগরূক রাখতে চান। সেই চাওয়া থেকে তাঁরা হারিয়ে যাওয়া ফাউন্টেনপেন, দোয়াত ও কালির প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। এই আয়োজনে এসে অনেকেই ফিরে গেলেন এমন এক সময়ে, যা এখনকার আলোচনা থেকে হারিয়ে গেছে।
১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফাউন্টেনপেন আবিষ্কার হয়েছিল। এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য দেশেও এর বহুল প্রসার ঘটতে থাকে। বাংলাদেশে ফাউন্টেনপেন এসেছিল ইংরেজদের হাত ধরে। এই কলমকে বাংলায় ‘ঝরনাকলম’ নামে নামকরণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নানা ধরন ও দামের ফাউন্টেনপেন বাজারে এসেছিল। পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান ও পাইলটের ফাউন্টেনপেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এসব কলমে ছিল রকমারি ও টেকসই নিব ও হ্যান্ডেল। শৌখিন ও ধনী ব্যক্তিদের জন্য হীরা বসানো হতো কোনো কোনো কলমে। কখনো সোনা, প্লাটিনাম ইত্যাদি দিয়ে মুড়ে দেওয়া হতো ফাউন্টেনপেনকে।
বাংলাদেশ পেন ক্লাবের আয়োজনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে দুই দিনব্যাপী ‘ঢাকা পেন শো’র শেষ দিন ছিল শনিবার। প্রদর্শনীর পাশাপাশি এদিন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ক্যালিগ্রাফি বা অক্ষরশিল্প নিয়ে একটি কর্মশালারও আয়োজন করেছিল পেন ক্লাব।
প্রদর্শনীতে নানা রঙের ফাউন্টেনপেন বা ঝরনাকলম। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫