কক্সবাজারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে স্মারকলিপি দিয়েছে কক্সবাজার প্রেসক্লাব। আজ বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের হাতে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ সময় কক্সবাজার জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

প্রেসক্লাবের দেওয়া এ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজারের জনসংখ্যা ২৬ লাখের বেশি। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শরণার্থীশিবির কক্সবাজারে অবস্থিত। এ ছাড়া এ জেলায় রয়েছে অসীম প্রাকৃতিক সম্পদ, সমুদ্র অর্থনীতি ও সম্ভাবনাময় মানুষ। এ জেলায় বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলমান থাকলেও কক্সবাজারে উচ্চশিক্ষার কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থাকলেও উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর হাজারো শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম কিংবা ঢাকায় যেতে হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সুপারিশ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ সুপারিশে ভৌগোলিক দিক বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারটি বিশেষ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করারও সুপারিশ করা হয়েছিল। এগুলো হলো ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, সমুদ্রবিজ্ঞান, দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা ও মৎস্যবিজ্ঞান। তবে এ সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময় এ জেলায় একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হলে জেলার তরুণ প্রজন্ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠবে।

জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পর্যটনের রাজধানী হিসেবে পরিচিত কক্সবাজার এখনো উচ্চশিক্ষায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। অথচ কক্সবাজার এখন দেশের আন্তর্জাতিক ব্যবসা, সুনীল অর্থনীতি ও আঞ্চলিক সংযোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে উঠছে। এ জেলায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি দীর্ঘদিনের। অথচ কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।’

স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক মো.

আব্দুল মান্নান বলেন, কক্সবাজারে অবশ্যই একটি প্রযুক্তিনির্ভর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন রয়েছে। এ জেলায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকরাম চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য শামসুল হক, মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি নুরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহেদ প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে ফিরতে রাজি হয়েছে, জানালেন ট্রাম্প

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় সব ধরনের গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। শুক্রবার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা জানিয়েছেন। 

ট্রাম্প একে একে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেতের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। শুক্রবার এসব ফোনালাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ দুটির অবস্থান জানান ট্রাম্প। 

আরও পড়ুননিজেদের ভূখণ্ড থেকে কম্বোডিয়ার বাহিনীকে সরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে থাইল্যান্ড০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, ‘তাঁরা (থাইল্যান্ড আর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী) আজ সন্ধ্যা থেকেই সব ধরনের গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন। মালয়েশিয়ার দুর্দান্ত প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহায়তায় প্রস্তুত করা যে শান্তি চুক্তিতে আমার এবং তাঁদের দুজনের সই রয়েছে, সেটায় ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা।’ 

সপ্তাহজুড়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চলা সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। দেশ দুটির বিরোধপূর্ণ সীমান্তের দুপাশে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। 

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে গত জুলাইয়ে প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ ও মালয়েশিয়ার প্রত্যক্ষ উদ্যোগে দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়। থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে তাদের বাণিজ্য সুবিধা স্থগিত করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। 

আরও পড়ুনকম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে সংঘাতে থাই সেনা নিহত, পাল্টা বিমান হামলা থাইল্যান্ডের০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

অক্টোবরে আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের সম্মেলনে অংশ নিতে ট্রাম্প মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে যান। তখন থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে সই হয়। চুক্তিতে সই করেন দেশ দুটির প্রধানমন্ত্রীরা। সই করেন ট্রাম্পও। 

থাইল্যান্ড গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিত করে। সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর ব্যাংককের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। 

আরও পড়ুনথাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া কেন সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছে, সমাধান কোন পথে ২৬ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ