এই ৪ পানীয় আর্টারি প্লাক দূর করতে সহায়ক, শুনুন চিকিৎসকের পরামর্শ
Published: 23rd, October 2025 GMT
ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন সফল করতে কার্যকর পুলিশ এখনই লাগবে
প্রথম আলোয় আইজিপি বাহারুল আলমের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে (২০ অক্টোবর ২০২৫)। তার আগের দিন টেলিভিশনে দেখেছিলাম, উনি বলছেন, ‘সরকারের বা প্রশাসনের প্রভাবমুক্ত পুলিশ প্রশাসন চলতে দিন।’
সাক্ষাৎকারটি খুব যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, তা মনে হলো না। দেশের এই বিশেষ সংকটের সময় একজন চৌকস ও বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অধিকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে যে আস্থা-বিশ্বাস রেখে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেটা বোধ হয় উনি যথাযথভাবে পালন করতে পারেননি।
না, তাঁর দোষের কথা বলছি না। তাঁর যোগ্যতার অভাব বলছি না। সবকিছু মিলিয়ে একটা প্রত্যাশা তাঁর ওপর বোধ হয় করা হয়েছিল যে অভ্যুত্থান–পরবর্তী পুলিশ বাহিনীকে তিনি পুনর্গঠন করতে পারবেন। সেটা উপ্ত কিংবা অনুপ্ত, যা–ই হোক। এত বড় একটা গণ-অভ্যুত্থানের পরে যখন পুলিশ-প্রশাসন সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে, সেই পুলিশ-প্রশাসনকে আবার নতুন করে, বর্তমান সময়ের উপযোগী করে ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে গড়ে তোলার কাজটি তিনি করতে পারেননি।
আরও পড়ুনপুলিশ কি ক্ষমতাসীনদের লাঠিয়াল হয়েই থাকবে২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫আমি মানি, এটি খুব সহজ কাজ নয়। মানি, এটি প্রধানত সরকারের কাজ। এ–ও মানি, সরকার যদি বিশেষভাবে উদ্যোগী না হয়, তাহলে পুলিশের কোনো আইজিপি বা কর্মকর্তা নিজে নিজে এগুলো করতে পারবেন না। কিন্তু তারপরও যে প্রশাসন বা সরকার আছে, আমি যে ধারণার কথা বললাম, তার বিপরীতে তো নয় তারা। এটা করার মতো অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই তাদের নেই। কিন্তু আইজিপি বাহারুল আলম বা অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তার তো তা থাকতে পারে।
এই যে নির্বাচন আসছে, সেটি একটি গুণমানসম্পন্ন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, যেকোনো ধরনের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্ত করে সম্পাদনের জন্য যে পুলিশ বাহিনী দরকার, সেটা গড়ে তুলতে তাঁদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবেন। কিন্তু সে রকম কিছু আমরা দেখলাম না। পুলিশ আগের মতোই আছে; কিংবা আরও নিষ্ক্রিয় হয়েছে।
আমরা ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে পা দিতে চাইছি। সেই গণতান্ত্রিক দেশের উপযোগী একটি পুলিশ বাহিনী করা দরকার। এখন কি সে রকম হবে? সে সময় কি আমাদের হাতে আছে? পুলিশের কি কোনো সংস্কার হয়েছে? আমরা জানি না। সাধারণভাবে মানুষ যা দেখছে, তাতে পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। এ কথা আইজিপি বাহারুল আলম নিজেও স্বীকার করেছেন।গত বছরের আন্দোলনের সময় অনেক বড় ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অনেক বাড়াবাড়ি করেছে। প্রায় মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। নির্বিচার গুলি চালিয়ে হাজারখানেক লোক হত্যা করেছে। তার ফলে জনগণের ক্রোধ পুলিশের ওপর আছড়ে পড়েছে।
পুলিশের মধ্যে একটা ট্রমা তৈরি হয়েছে। তারা ডিউটি করতে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু এ অবস্থা তো অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে না। তার ওপর তিন থেকে সাড়ে তিন মাস পর নির্বাচন। পুলিশ তো আমাদের লাগবে।
আমরা একটি পুলিশ বাহিনী তো আমদানি করতে পারব না, রাতারাতি গজিয়েও ফেলতে পারব না। যা আছে, তা দিয়েই আমাদের সামনে যেতে হবে। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, যারা গুপ্তহত্যার মতো, ক্রসফায়ারের মতো ঘটনায় যুক্ত ছিল, মানবিক অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হবে; বাকি সবাইকে সরকার আশ্বস্ত করবে যে তোমরা তোমাদের ডিউটি করতে পারবে, নির্ভয়ে। তোমাদের সিকিউরিটির দায়িত্ব আমাদের।
আরও পড়ুনপুলিশকে কেন আমরা চায়নিজ রাইফেল দিলাম৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪সে রকম করে কেউ কোনো বক্তব্য দেয়নি। সে রকম কিছু হয়েছে, তা–ও দেখিনি। অথচ বর্তমান সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পুলিশ বাহিনীর পুনর্গঠন। বর্তমান সময় বলতে আমি ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে যে সময়, তার কথা বলছি না। বরং গত বছর আমরা যখন অভ্যুত্থানে বিজয়ী হয়েছিলাম, তার পর থেকেই এই দায়িত্বটা ছিল। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা দু-একবার বলেছেন। তাঁর অগ্রাধিকার হচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ সংস্কারের ব্যাপারে আমরা বেশ কিছু কথাবার্তা শুনেছিলাম। আইজিপি বাহারুল আলম এখানে উল্লেখ করেছেন, তা প্রায় এক দশক হয়ে গেছে এবং কমিশনের একটা প্রতিবেদনও সম্ভবত প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু এবার যে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম চলল, পরে এটাকে ঐকমত্য কমিশন বলা হলো, সেখানে পুলিশ সংস্কারের বিষয় আলোচনায় আসেনি।
চব্বিশের জুলাই–আগস্টে ছাত্র জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় পুলিশ। এর ফলে পুলিশের ওপর জনতার ক্রোধ আছড়ে পড়ে।