নরসিংদীতে সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই ঢালাই
Published: 23rd, October 2025 GMT
নরসিংদী সদর উপজেলার বীরপুর এলাকায় সড়ক উন্নয়ন কাজের সময় রাস্তার মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই ঢালাই কাজ চলছে। এতে প্রতিদিনই ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন পথচারী, স্কুল শিক্ষার্থী, মোটরসাইকেল চালক ও রিকশা আরোহীরা। এ অবস্থায় যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বীরপুরের বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ থেকে শংকর সাহার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় অর্ধকিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজ করছে নরসিংদী পৌরসভা। তবে সড়কের মাঝখানে ছয়টি বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই ঢালাই কাজ চলছে। খুঁটিগুলোর অবস্থান এমন যে, যানবাহন ও পথচারীদের রাস্তা ব্যবহার করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হাকিম বলেন, “রাস্তার মাঝখানে খুঁটি রেখে রাস্তার এ কেমন উন্নয়ন হচ্ছে। এটুকু অংশেই রয়েছে ছয়টি খুঁটি। রাতে আলো কমে গেলে কেউ খুঁটি দেখতে না পেয়ে ধাক্কা খাচ্ছে। গাড়ি চললে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার কে নেবে? প্রশাসন যদি দ্রুত এগুলো না সরানো হয়, তাহলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
অপর বাসিন্দা রোজিনা বেগম বলেন, “এই রাস্তা দিয়েই স্কুলের বাচ্চারা যায়। প্রতিদিন ভয় লাগে- কখন কী হয়! খুঁটি না সরালে কোনো কাজ হবে না। এমন রাস্তা করে কি লাভ, যেখানে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে!”
চালক জসিম মিয়া জানান, পৌরসভা উন্নয়ন কাজ শুরু করলেও বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে উন্নত সড়ক ব্যবহারের আগেই সেটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দ্রুত বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সরিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাস্তায় ঢালাই চলছে, তার মাঝেই খুঁটি। মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে ভারসাম্য রাখতে কষ্ট হয়। আর এখানে ছয়টি খুঁটি ১০০% ঝুঁকি রয়েছে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বিপদ অনিবার্য।”
এ বিষয়ে নরসিংদী পৌর প্রশাসক মো.
ঢাকা/হৃদয়/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের সহযোগিতায় বিদ্রোহীদের এলাকা পুনর্দখল করছে মিয়ানমারের জান্তা
গত বছর চীনা সীমান্ত থেকে মিয়ানমারের বাকি অংশে প্রধান বাণিজ্য রুটে অবস্থিত কিয়াউকমে শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল বিদ্রোহীরা। কিয়াউকমে এশিয়ান হাইওয়ে ১৪-এর উপর অবস্থিত, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা রোড নামে বেশি পরিচিত ছিল। তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) এই শহর দখলকে অনেকেই বিরোধীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় হিসেবে দেখেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছিল, বিদ্রোহীদের এই অগ্রগতিতে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার মনোবল ভেঙে পড়তে পারে।
তবে চলতি মাসে কিয়াউকমে পুনরুদ্ধার করতে সেনাবাহিনীর মাত্র তিন সপ্তাহ সময় লেগেছে। এই ছোট্ট পাহাড়ি শহরটির পুনর্দখল একটি স্পষ্ট উদাহরণ যে মিয়ানমারের সামরিক ভারসাম্য এখন জান্তার পক্ষে কতটা সরে গেছে।
এর জন্য কিয়াউকমেকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। টিএনএলএ-র হাতে থাকাকালে সেনাবাহিনীর দৈনিক বিমান হামলায় শহরের একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান ৫০০ পাউন্ড ওজনের বোমা ফেলেছে, আর শহরের বাইরে বিদ্রোহীদের অবস্থানে কামান ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। বেশিরভাগ জনসংখ্যা শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছে, যদিও সেনাবাহিনী এখন শহরটি পুনরুদ্ধার করেছে, তারা ফিরে আসতে শুরু করেছে।
টিএনএলএ-এর মুখপাত্র টার পার্ন লা চলতি মাসের শুরুতে বিবিসিকে বলেছিলেন, কিয়াউকমে এবং সিপাওতে প্রতিদিনই তীব্র লড়াই চলছে। চলতি বছর সেনাবাহিনীর আরো সেনা, আরো ভারী অস্ত্র এবং আরো বিমান শক্তি রয়েছে। সিপাওকে রক্ষা করার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।”
বিবিসি তার সাথে কথা বলার পর থেকে জান্তার বাহিনী সিপাও পুনরুদ্ধার করেছে, যা গত বছর টিএনএলএ-এর দখল করা শেষ শহর ছিল।
এই শহরগুলোর পতন মূলত জান্তা সরকারের প্রতি চীনের সমর্থনের কারণেই হয়েছে। কারণ চীন ডিসেম্বরে জান্তার নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছে। এই পরিকল্পনার ব্যাপক নিন্দা করা হয়েছে। কারণ এতে অং সান সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসিকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যারা গত নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানে তাদের সরকার উৎখাত হয়েছিল এবং মিয়ানমারের বেশিরভাগ অংশ গৃহযুদ্ধের অবস্থায় রয়েছে।
এই মুহূর্তে সামরিক বাহিনী যতটা সম্ভব হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে, যাতে এই অঞ্চলগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সফলতা পেতে জান্তা চীন থেকে হাজার হাজার নিজস্ব ড্রোন কিনেছে এবং তাদের অগ্রবর্তী ইউনিটগুলোকে কীভাবে সেগুলো ব্যবহার করতে হয় তা প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
সামরিক জান্তা ধীর এবং সহজেই উড়তে পারে এমন মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডারও ব্যবহার করছে, যা হালকাভাবে সুরক্ষিত এলাকার উপর দিয়ে উড়তে পারে এবং নির্ভুলতার সাথে বোমা ফেলতে পারে। তারা চীনা এবং রাশিয়ান সরবরাহিত বিমান দিয়ে নিরলসভাবে বোমাবর্ষণ করছে, যার ফলে মিয়ানমারে চলতি বছর বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছর কমপক্ষে এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, তবে মোট সংখ্যা সম্ভবত আরো বেশি।
ঢাকা/শাহেদ