ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের বাংলাদেশ সফর দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে গভীরভাবে বন্ধুত্ব ও সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। তার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে এক যৌথ বিবৃতিতে এই কথা বলা হয়েছে।

বাসস লিখেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে ২২ থেকে ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সফর করছেন।

আরো পড়ুন:

নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া, প্রধান উপদেষ্টার একান্ত আলাপ

শনিবার (২২ নভেম্বর) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টা স্বাগত জানান। এছাড়া গার্ড অব অনার এবং তোপধ্বনি দেওয়া হয়। পরে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন পৃথকভাবে সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

শনিবার দুই নেতার উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করেন, বিশেষ গুরুত্ব দেন বাণিজ্য, সংযোগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে।

প্রধান উপদেষ্টা স্মরণ করিয়ে দেন যে, ভুটানই প্রথম দেশ যারা ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ভুটানের অকৃত্রিম সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উভয় পক্ষ ২০২৪ সালের মার্চে ভুটানের রাজা’র সফরের কথাও উল্লেখ করেন, যা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করেছিল।

বাংলাদেশ ও ভুটান বাণিজ্য ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। প্রধানমন্ত্রী তোবগে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের নতুন সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।

ঢাকা ভুটানের রাজার গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটি উদ্যোগের প্রশংসা করে এবং সমর্থন দেওয়ার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করে। উভয় পক্ষ কুড়িগ্রামে ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের ইতিবাচক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে।

বাংলাদেশ সরকার-টু-সরকার ভিত্তিতে ভুটানে ওষুধ সরবরাহের প্রস্তাব দেয়, যা ভুটানের জনগণের জন্য সাশ্রয়ী ও মানসম্মত চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করবে।

দুই দেশের নেতা ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট চুক্তি বাস্তবায়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দরে পণ্য পরিবহনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।

গত বছর ভুটানের রাজার সফরের পর সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে দেশটির শিক্ষার্থীদের জন্য এমবিবিএস/বিডিএস আসনের বার্ষিক বরাদ্দ ৩০ জনে উন্নীত করায় প্রধানমন্ত্রী তোবগে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরো জোরদার করার জন্য বাংলাদেশ বুয়েটে ভুটানি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি বছর ১০টি নির্দিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং আসন, ক্রীড়া বিজ্ঞানে ডিপ্লোমার জন্য বিকেএসপিতে একটি নির্দিষ্ট আসন, ভুটানি ক্রীড়া দলের জন্য হোম-গ্রাউন্ড সুবিধা এবং ভুটানি বিশেষজ্ঞদের জন্য বিশেষায়িত পেশাদার প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রস্তাব দিয়েছে।

উভয় নেতা সার্ক এবং বিমসটেকসহ দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন, যা অভিন্ন মূল্যবোধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য সাধারণ আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

প্রধানমন্ত্রী তোবগে তাকে এবং তার প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সুবিধাজনক সময়ে ভুটান সফরের আমন্ত্রণ জানান।

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড ম হ ম মদ ইউন স সহয গ ত র জন য সফর র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাতে হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া

স্বাস্থ্য পরীক্ষা জন্য রাতে আবার ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

রবিবার রাত ৮টায় তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন একথা জানান।

আরো পড়ুন:

শীতকালে জলপাই কেন খাবেন?

বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারই দূষিত, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

তিনি বলেন, “ম্যাডামের জন্য গঠিত যে মেডিকেল বোর্ড আছে, তাদের পরামর্শক্রমে কিছু পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হসপিটালে ম্যাডামকে ভর্তি করা হয়েছে। উনি কেবিনে আছেন। টেস্টের রিপোর্টগুলো বোর্ড পর্যালোচনার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”

বাসস লিখেছে, সর্বশেষ গত ১৫ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপার্সন এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে এক দিন থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করেন।

৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ