ফরিদপুরে কীর্তন শুনে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় দুই ব্যবসায়ী নিহত
Published: 25th, October 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে অটোভ্যান ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক সড়কের বোয়ালমারী উপজেলার কানখড়দী মাদ্রাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
নিহত দুজন হলেন বড়নগর গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র সাহা (৫৪) ও শিলাহাটি গ্রামের মধু সাহা (৫৫)। তাঁরা সাতৈর বাজারের ব্যবসায়ী। নারায়ণ সাহা মুদিদোকান ও মধু সাহা কসমেটিকসের ব্যবসা করতেন।
সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, ইউনিয়নের কাদেরদী এলাকায় কীর্তন শুনে বাড়ি ফেরার পথে দুজন দুর্ঘটনার শিকার হন।
আহত তিনজন হলেন অটোভ্যানের (ব্যাটারিচালিত) চালক সুমন শেখ (৩০), পাইকহাটি গ্রামের সঞ্জয় বণিক (৪৫) ও তাঁর ছয় বছর বয়সী শ্যালিকা টুকটুকি। তাঁরা বর্তমানে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
বোয়ালমারী থানা-পুলিশ জানায়, গতকাল রাত ১১টার দিকে কাঠবোঝাই একটি ট্রাক ফরিদপুরের দিকে যাচ্ছিল। বিপরীত দিক থেকে আসা অটোভ্যানটির সঙ্গে কানখড়দী বাজারের কাছে সেটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, নিহত নারায়ণ ও মধু সাহাকে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁরা মারা যান। আহত তিনজন বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও অটোভ্যান উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তবে ট্রাকচালক পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তফসিলের পরদিন ‘প্রার্থী’ গুলিবিদ্ধ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকায় দিনের বেলায় গুলি করা হলো ভোটে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে (৩৩)। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছিলেন। হাদি ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।
গুলি করার পর আহত হাদিকে রিকশায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলি তাঁর মাথায় লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলনে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখার পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। সাংস্কৃতিক এই প্ল্যাটফর্ম তাদের লক্ষ্য ঠিক করে, ‘সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ’। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী বক্তব্য হাদিকে আলোচনায় আনে। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার সময় হাদি সক্রিয় ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দিতে বলেছিলেন।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনী তহবিলের হিসাব প্রকাশ এবং তাঁর ওপর ময়লা পানি নিক্ষেপের ঘটনায় ‘অসুবিধা নেই’ উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েও আলোচনায় আসেন হাদি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে একটি ব্যাটারির রিকশায় ছিলেন হাদি ও তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি। তাঁদের পেছনে পেছনে আসে একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে চলন্ত অবস্থায় সেই মোটরসাইকেল থেকেই একাধিক গুলি করা হয় হাদিকে।
ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান