নদী বাঁচলে পরিবেশও টিকে থাকবে: রিজওয়ানা হাসান
Published: 25th, October 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর অঞ্চলে শিল্পবর্জ্যের কারণে ভয়াবহভাবে দূষিত হচ্ছে শীতলক্ষ্যা নদী। এই দূষণ শুধু নদীর প্রাণহানি ঘটাচ্ছে না, বরং আশপাশের পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে বিপন্ন করছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া নদী ও পরিবেশকর্মীদের অনুপ্রেরণামূলক মিলনমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান।
উপদেষ্টা বলেন, “নদীদূষণ রোধ করা গেলে জলজ প্রাণী মুক্তভাবে বাঁচতে পারবে, আর নদীও ফিরে পাবে তার স্বাভাবিক প্রবাহ। নদী বাঁচলে পরিবেশও টিকে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু সরকারের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। নদী রক্ষায় স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা ও পরিবেশ কর্মীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সম্মিলিত উদ্যোগেই সম্ভব শীতলক্ষ্যা নদীকে দূষণমুক্ত করে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা।”
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন ঘাট থেকে শুরু হয় দিনব্যাপী এই নদীযাত্রা। স্রোত, নদী বাঁচানোর প্রত্যয় ও সচেতনতায় অনুপ্রাণিত হয়ে নদীপথে যাত্রা করেন শতাধিক নদী ও পরিবেশকর্মী।
যাত্রাপথে চলে নদীর গল্প, আড্ডা, গান, ছবি আঁকা ও নদী নিয়ে মুক্তচিন্তা। অংশগ্রহণকারীদের কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হয় একটাই আহ্বান—“নদী বাঁচাও, জীবন বাঁচাও।”
দিনব্যাপী এই আয়োজনের চূড়ান্ত গন্তব্য গাজীপুরের কাপাসিয়ার ধাঁধার চর। সেখানে নদীকে ঘিরে আলোচনা, কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সুইডেন অ্যাম্বাসির জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান নায়োকা মার্টিনেস বেক্সস্ট্রম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোলায়মান হায়দার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোবাস্সির হোসেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এবং বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন প্রমুখ।
দিনভর উৎসবমুখর এই নদীযাত্রায় মিলেছে সচেতনতার বার্তা ও ঐক্যের অঙ্গীকার—শীতলক্ষ্যা নদীকে বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এখনই।
ঢাকা/রফিক//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে হামেশা ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার
অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণা মামলায় হামেশা ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.আসাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে সোনারগাঁ থানায় হস্তান্তর করে। সোনারগাঁ থানা পুলিশ নারায়ণগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চরকামালদী এলাকায় হামেশা ফুড লিমিটেড নামের একটি কারখানা খুলে আসাদুল ইসলাম আটা-ময়দার ব্যবসা করেন।
ব্যবসার নাম করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সদর ও ঢাকার অর্থঋণ আদালতে তার বিরুদ্ধে করা তিনটি মামলায় দায়ের করেন ভূক্তভোগীরা। সেই মামলায় তাকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
সেসব মামলার ওয়ারেন্ট মূলে শুক্রবার ভোরে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তাকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে সকাল ১০টার দিকে সোনারগাঁ থানায় হস্তান্তর করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসাদুল ইসলাম সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের মসলেন্দপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী ওরফে ডা. মাহমুদের ছেলে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ইমাম পরিচয়ে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করেন। অর্থ আদায় করতে গেলে বিভিন্ন সময় তিনি পাওনাদারদের মারধর ও হুমকি ধামকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এসব ঘটনায় সোনারগাঁ থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা ও একাধিক সাধারণ ডায়েরী রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন।অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকার তানভীর ফ্লাওয়ার এন্ড ডাল মিলসের কর্মকর্তা মো. মাহমুদ হোসাইন বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসাদুল ইসলামের হামেশা ফুডের সঙ্গে তানভীর ফ্লাওয়ার এন্ড ডাল মিলসের ব্যবসা ছিল। ব্যবসার সূত্রে আসাদুল তানভীর ফ্লাওয়ার মিলের ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার কাঁচামাল প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেছেন।
আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত চাইতে গেলে আসাদুল ইসলাম ভূক্তভোগী মাহমুদ হোসাইনকে মারধর করে এবং বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন। পরবর্তীতে আসাদুল ইসলাম পাওনা টাকা না দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।