সমাবেশ মঞ্চে বিএনপি নেতাকে ১০ লাখ টাকার চেক দিলেন এক কর্মী
Published: 25th, October 2025 GMT
বিএনপির ৩১ দফার প্রচার ও ধানের শীষের পক্ষে সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ওই নির্বাচনী এলাকায় দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি নেতা। একপর্যায়ে কর্মীরা তাঁকে টাকার ফুল ও মালা গলায় দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। তখন এক কর্মী ওই নেতাকে নির্বাচনের খরচের জন্য ১০ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজারে শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
৩১ দফার প্রচারণার ঘোষণা থাকলেও এটি ছিল মূলত জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুলের নির্বাচনী সমাবেশ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ শুরুর পর একপর্যায়ে কামরুজ্জামানকে ফুল, টাকার মালা গলায় পরিয়ে দেন কিছু নেতা-কর্মী। তখন মঞ্চে উঠে নূর কাশেম নামের একজন কর্মী কামরুজ্জামানের হাতে একটি চেক তুলে দেন। কামরুল সেটি হাতে নিয়ে দেখেন ১০ লাখ টাকার চেক। পরে তিনি চেকটি সমাবেশে উপস্থিত দলের নেতা-কর্মীদের দেখান।
কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের ওই কর্মীর সঙ্গে আমার আগে পরিচয় হয়নি। তিনি চেকটি আমার হাতে দিয়ে কাল (রোববার) ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার কথা বলেছেন। মানুষের ভালোবাসায় আমি অভিভূত।’ মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করেন কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমি ধানের শীষের কথা বলছি। ধানের শীষে ভোট চাইছি। জনগণ পাশে থাকলে আমি এখানে মনোনয়ন পাব বলে বিশ্বাস করি।’
জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুম মাহমুদ তালুকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে কামরুজ্জামান ছাড়াও বক্তব্য দেন উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো.
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ-১ আসনে (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) কামরুজ্জামান ছাড়াও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে আছেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত নজির হোসেনের স্ত্রী সালমা নজির, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও তাহিপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হক, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বিএনপি নেতা হামিদুল হক আফিন্দী, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আবদুল মোতালেব খান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ব ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বোয়ালমারীতে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে এক পক্ষের আনন্দ মিছিল, অন্য পক্ষের বিক্ষোভ
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটিতে পদ পাওয়া ও পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে বোয়ালমারী বাজারে কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে এক পক্ষ। একই সময়ে ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ালেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেছ আলী ও সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়ার যৌথ স্বাক্ষরে ফরিদপুর-১ আসনের অধীন মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপিতে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট মোট ছয়টি কমিটি অনুমোদন করা হয়। ২০১৫ সালের পর তিন উপজেলায় এবারই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেওয়া হলো।
ঘোষিত কমিটিতে সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকদের একচেটিয়া আধিপত্য দেখা যায়। অন্যদিকে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী শামসুদ্দিন মিয়ার পক্ষের হাতে গোনা কয়েকজন কমিটিতে স্থান পান। কমিটি ঘোষণার পরপরই এক পাক্ষিক কমিটি গঠনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেন শামসুদ্দিন মিয়ার সমর্থকেরা।
আজ বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলা শহরের ওয়াপদার মোড়ে কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে প্রথমে মিছিল করেন শামসুদ্দিন মিয়ার সমর্থকেরা। পরে তাঁরা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ওয়াপদার মোড়ে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করেন। কমিটিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগের লোকজনকে স্থান দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁরা কমিটি বাতিলের দাবি জানান।
অন্যদিকে কমিটিতে স্থান পাওয়া খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকেরা বিকেল পাঁচটার পরে স্থানীয় চৌরাস্তা থেকে আনন্দ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ডাকবাংলো সড়কে গিয়ে শেষ হয়। তাঁদের মিছিল থেকে তারেক রহমান ও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে অভিনন্দন জানানো হয় এবং ধানের শীষে ভোট চাওয়া হয়।
দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে শহরে আতঙ্ক থাকলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। থানা-পুলিশও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে। বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিল। দুই পক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেছে।