ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরিশাল বিভাগের বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলায় আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল। শনিবার সকালের আগের ২৪ ঘণ্টায় তারা মারা যান।

আরো পড়ুন:

বাগেরহাটে ডেঙ্গু আক্রান্ত যুবকের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জে বিলে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু 

ডা.

শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “নতুন মৃত্যু নিয়ে চলতি বছর বিভাগে মোট ৪০ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন বরগুনা জেলায় ১৫ জন।  গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে নতুন আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১২৯ জন।”

মৃতরা হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার নয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা মুনসুর (৪০) এবং পটুয়াখালী সদরের জমুরা গ্রামের বাসিন্দা হিমেল (১৮)। এদের মধ্যে মুনসুর বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এবং হিমেল পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ৭৭১ জন। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪১২ জন। চলতি বছর মোট মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। এর মধ্যে ১৫ জন বরগুনা জেলার বাসিন্দা।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, পটুয়াখালী জেলার সরকারি হাসপাতালে দুইজন, বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ২২ জন মারা গেছেন।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশঙ্কাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে হবে। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি। তাই মশার বিস্তার রোধ করতে বাড়ির আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে।”

ঢাকা/পলাশ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল বর শ ল ব ভ গ বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘জাতীয়তাবাদী আবেগ’ কাজে লাগানোর কৌশল অনুতিনের

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতকে ঘিরে মাথাচাড়া দেওয়া জাতীয়তাবাদী আবেগকে কাজে লাগিয়ে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। গতকাল শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন তিনি। ফলে আগামী বছরের শুরুতেই সেখানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হলো। আগাম নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী অনুভূতি কাজে লাগানোর কৌশল নিচ্ছেন অনুতিন।

সুদূরপ্রসারী এই রাজনৈতিক পদক্ষেপের আগে চলতি সপ্তাহেই আবারও কম্বোডিয়ার সঙ্গে তীব্র সীমান্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে জুলাই মাসে পাঁচ দিন ধরে লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় জাতীয়তাবাদী অনুভূতি প্রবল। অনুতিন চার্নভিরাকুল কৌশলে এ অনুভূতি কাজে লাগাতে চাইছেন।

থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সেই হিসাবে আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে পদচ্যুত করেন। এরপর ভুমজাইথাই পার্টির নেতা অনুতিন চার্নভিরাকুল দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

সীমান্ত সংঘর্ষ ঘিরে জাতীয়তাবাদের উত্থান—যা নুতিনের ভুমজাইথাই পার্টির জন্য সুফল বয়ে আনতে পারেতিতিপল পাকদেওয়ানিচ, অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, উবন রাচাথানি বিশ্ববিদ্যালয়

সাধারণ নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছেন, এ পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ডে আরও রাজনৈতিক দেনদরবার ও অস্থিরতা বাড়তে পারে।

উবন রাচাথানি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক তিতিপল পাকদেওয়ানিচ বলেন, সীমান্ত সংঘর্ষ ঘিরে জাতীয়তাবাদের উত্থান—যা নুতিনের ভুমজাইথাই পার্টির জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে।

উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডের প্রদেশগুলো ভোটের দিক থেকে ভুমজাইথাই পার্টির শক্ত ঘাঁটি। একই সঙ্গে নুতিনের অন্যান্য অঞ্চলেও শক্তিশালী মিত্র রয়েছে, যারা দেশপ্রেমের এই জোয়ারে ভর করে নিজেদের আসন নিশ্চিত করতে পারে।

তবে সীমান্ত ইস্যু অনুতিনের জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়াবে বলে মনে করছেন চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টিথর্ন থানানিথিচট।

ফেউ থাই ও পিপলস পার্টি

গত সেপ্টেম্বর মাসে ৫৯ বছর বয়সী অনুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে সমর্থন দেয় বিরোধী দল পিপলস পার্টি। এর আগে তিনি ফেউ থাই পার্টির নেতৃত্বাধীন শাসক জোট ত্যাগ করেন অনুতিন। বিরোধী দলের প্রস্তাবিত সংবিধান সংশোধন বাস্তবায়নের জন্য পিপলস পার্টির সঙ্গে একটি চুক্তি রাজি হন। তবে গত বৃহস্পতিবার পিপলস পার্টি অনুতিনের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। একই সঙ্গে ফেউ থাই পার্টির সঙ্গেও অনুতিনের দূরত্ব বেড়েছে।

অস্থিরতা বাড়তে পারে

বিশ্লেষকেরা বলছেন, জাতীয়তাবাদী জোয়ার সত্ত্বেও আগামী নির্বাচনে অনুতিন স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন না। এতে আরও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। অধ্যাপক তিতিপল বলেন, ‘আমি মনে করি না, আমরা ভুমজাইথাই এবং ফেউ থাইয়ের পুনর্মিলনের সম্ভাবনাকে বাতিল করতে পারি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ