আফসার স্যার কাছে এসে বলেন, মোকাদ্দেছ তুমি বৃত্তি পেয়েছ
Published: 25th, October 2025 GMT
১৯৮৫ সালের কথা। পঞ্চম শ্রেণির ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। বরাবরের মতো আমার রোল নম্বর ১। পরিবারের সবাই খুশি। এবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পালা। সেটাও হয়ে গেল। উপজেলার সবচেয়ে নামকরা স্কুলে ভর্তি হলাম।
পড়াশোনা, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা ও হেঁটে স্কুলে যাওয়া—সবই ভালোই চলছিল। কিন্তু আমার অপেক্ষা, কবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষার ফল পাব। এই অপেক্ষার মধ্যেই সময় চলছে সময়ের নিয়মে।
তখন খুব সম্ভবত আম পাকার মৌসুম শুরু হবে হবে করছিল। গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আম। এক বিকেলে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম আমভর্তা খাব। যেই কথা সেই কাজ। খেলাধুলা বাদ দিয়ে আমরা হাজির হলাম মালিকানাহীন এক বিশাল আমগাছের তলায়। সবাই ঢিল ছুড়ে আম পাড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এর মধ্যেই হঠাৎ দেখতে পাই আফসার স্যার আমাদের দিকে এগিয়ে আসছেন। ভাবলাম, হয়তো শাস্তি দেবেন। আমরা ভয় পেয়ে পালাতে লাগলাম। কিন্তু কিছুটা দূরে গিয়ে খেয়াল করলাম, স্যার আমাদের পালাতে দেখে হাসছেন আর ইশারায় ডাকছেন।
সাহস নিয়ে স্যারের কাছে গেলাম। স্যার সস্নেহে আমাকে কাছে নিয়ে বলেন, মোকাদ্দেছ, তুমি বৃত্তি পেয়েছ!
আমার মাথা থেকে আম পাড়ার চিন্তা উবে গেল। স্যারকে সালাম করেই ছুটলাম বাড়ির দিকে। সুখবর জেনে মা–বাবা, ভাইবোন আমার চেয়েও যেন খুশি হলেন। বৃত্তি পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ল সারা গ্রামে।
পরদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিষ্টি বিতরণ করলাম। এদিকে বৃত্তি পাওয়ার খবরে আমার বর্তমান স্কুলেও কদর বেড়ে গেল।
সেদিনের আমভর্তা আর কোনো দিন খাওয়া হয়নি। তাই হয়তো মনের গহিনে আজও গেঁথে আছে স্মৃতিটা।
আপনিও লিখুনপ্রিয় পাঠক, আপনিও লিখুন ‘ছুটির দিনে’র নিয়মিত বিভাগ ‘জীবন যেমন’–এ। লিখে জানাতে পারেন জীবনের কোনো সুখ–স্মৃতি, রোমাঞ্চ–জাগানিয়া ঘটনা, উত্থান–পতন, পাওয়া না–পাওয়ার গল্প।
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
ছুটির দিনে, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা–১২১৫
ই-মেইল: [email protected]
ফেসবুক পেজ: fb.
খামের ওপর বা ই–মেইলের subject-এ লিখুন ‘জীবন যেমন’।
আরও পড়ুনফারসি সালোয়ারে স্নিগ্ধ স্বস্তিকা, দেখুন ৯টি ছবি২ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমাদের নতুন সংসার, সব স্বপ্ন ভেঙে গেল’
‘আমাদের নতুন সংসার। অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন ভেঙে গেল। এখন স্বামীকেই হারালাম। আমি টাকা চাই না, আপনারা আমার স্বামীকে এনে দেন।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে হামলায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়ার স্ত্রী নূপুর আক্তার (২২)।
সবুজ মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায়। তিনি উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর গ্রামের প্রয়াত হাবিদুল ইসলামের ছেলে। দেড় বছর আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে ছোট ভগবানপুর গ্রামে মাতম চলছে।
রোববার বিকেলে গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ছোট ভগবানপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ মিয়ার বাড়িতে আহাজারি চলছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়স্বজনেরা। তাঁদের সান্ত্বনা দিতে আশপাশের লোকজন বাড়িতে ভিড় করছেন। সবুজের স্ত্রী নূপুর বারবার লুটিয়ে পড়ছেন।
সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় শাহাদাতবরণকারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় শান্তিরক্ষী