কক্সবাজারের টেকনাফের প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিন রক্ষা ও পলিথিন বিরোধী নানা উদ্যোগের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘সেন্ট মার্টিন দখলকারীদের বিরুদ্ধে জোরালো বার্তা দিয়েছি। পলিথিনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান হচ্ছে। এখন তো সুপার মার্কেটে আপনি আর পলিথিন পাবেন না।’

শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদী পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ‘নদী ও পরিবেশকর্মীদের মিলনমেলা’ নামের একটি আয়োজনের অংশ হিসেবে তিনি শীতলক্ষ্যা নদী ও সেখানকার ধাঁধার চর পরিদর্শন করেন।

নদীদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা শহরের চারটা নদী নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে যে প্রকল্পটি চূড়ান্ত করে ফেলেছি, আশা করি তা ডিসেম্বরে পাস হয়ে যাবে।’

পরিবেশদূষণের বিষয়ে সবার দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমাদের নজরদারির পাশাপাশি শিল্পমালিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। কেবল শিল্পদূষণ বললে তো হবে না। আমরা তো এখনো পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারি নাই, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারি নাই। এসব ব্যবস্থাপনা যখন একসঙ্গে কাজ করবে, তখনই আপনি কেবল নদীগুলোকে বাঁচাতে পারবেন।’

পরিবেশ সুরক্ষায় পরিবেশবাদীদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘পরিবেশবাদীরা যাঁরা কাজগুলো করছে, আমাকে তাঁরা সাহায্য করছে। তাঁদের যেভাবে পারি আমি সাহায্য করে যাব আমার বর্তমান দায়িত্ব থেকে। একজন আরেকজনের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করব।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকার সুইডেন দূতাবাসের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান, ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেস বেক্সস্ট্রম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোলায়মান হায়দার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন, বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এবং বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত

অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরে অবস্থিত আসকার শিবিরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানে আহত এক ফিলিস্তিনি তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়।

বার্তা সংস্থা ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ আহমেদ আবু হানিন ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে আহত হয়েছিলেন।

ইসরায়েলি বাহিনী গতকাল ভোরে পশ্চিম তীরের তুবাসের উত্তরে অবস্থিত আকাবা শহরেও অভিযান চালায় এবং হেবরন ও তাল শহরে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গত এক সপ্তাহে তারা দখলকৃত পশ্চিম তীর থেকে ৪৪ ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের সবার নাম ইসরায়েলি বাহিনীর তালিকায় ছিল।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, এর অংশ হিসেবে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অনেকের শরীরে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, অভিযানের সময় সেনারা অস্ত্র জব্দ করেছেন। আটক ফিলিস্তিনিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এর আগে গত সপ্তাহে হেবরনের আর-রিহিয়া এলাকায় ফুটবল খেলার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ১০ বছর বয়সী মোহাম্মদ আল-হাল্লাক নিহত হয়।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মানতে চাপ দিতে হবে৯ ঘণ্টা আগে

জাতিসংঘ বলছে, নিহত ব্যক্তিদের পাঁচ ভাগের প্রায় এক ভাগই শিশু–কিশোর। এর মধ্যে ২০৬ জন ছেলে ও ৭ জন মেয়ে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত সাতজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিও আছেন। একই সময় ইসরায়েলি হেফাজতে নিহত ফিলিস্তিনিদের এ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, এর অংশ হিসেবে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অনেকের শরীরে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে।

দখলকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান চলার পাশাপাশি অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা রামাল্লার আশপাশে তাণ্ডব চালাচ্ছেন। উদ্বেগজনক হারে ফিলিস্তিনিদের সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ যেসব ফিলিস্তিনির মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে, তার অনেকগুলোই মারাত্মকভাবে বিকৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকজনের দেহে নির্যাতন ও হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।

এদিকে দখলকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান চলার পাশাপাশি অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা রামাল্লার আশপাশে তাণ্ডব চালাচ্ছেন। উদ্বেগজনক হারে ফিলিস্তিনিদের সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী বসতিস্থাপনকারীদের সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।

বার্তা সংস্থা ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ ভোরে পশ্চিম তীরের রামাল্লার পূর্বে দেইর দিবওয়ানের পাহাড়ি এলাকায় ফিলিস্তিনিদের কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। জেরুজালেমের উত্তর–পশ্চিমে অবস্থিত বসতি স্থাপনকারীরা বেইত ইকসা গ্রামে ফিলিস্তিনি কৃষকদের ওপরও হামলা চালিয়েছেন।

গত রোববার পশ্চিম তীরের তুরমুস আয়া শহরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী এক ফিলিস্তিনি নারীর ওপরও নৃশংস হামলা চালান। হামলায় ৫৩ বছর বয়সী আফাফ আবু আলিয়ার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রই কি আসলে ইসরায়েলের স্বাধীনতার সীমা নির্ধারণ করে দিচ্ছে২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত