শপথ নিলেন রাকসুর নবনির্বাচিত প্রতিনিধিরা
Published: 26th, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শপথ নিয়েছেন। আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এ শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিনিধিদের শপথ পড়ান উপাচার্য ও রাকসুর সভাপতি অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এবং হল সংসদের প্রতিনিধিদের শপথ পড়ান সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষরা।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের আসন গ্রহণ শেষে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করেন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী যোবায়ের। পরে কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শপথবাক্য পাঠ করেন। শপথ পাঠ শেষে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম নির্বাচিতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে ধারাবাহিকভাবে ১৭টি হলের প্রতিনিধিদের শপথ পড়ানো হয়।
শপথ অনুষ্ঠানে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ ও নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমানের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আবদুল হান্নান। তিনি বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত রাকসু নির্বাচন দীর্ঘ ৩৫ বছর পরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। সফলভাবে সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্বাচন আয়োজন করে কমিশন একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি আশাবাদী, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য অঙ্গনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হন সাবেক সমন্বয়ক ও ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের সালাউদ্দিন আম্মার। এ ছাড়া রাকসুর ২৩টি পদের মধ্যে ২০টি পদে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। আর ১৭টি হল সংসদ নির্বাচনের ২৫৫টি পদের মধ্যে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ২৩৪টি পদে জয়লাভ করে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুইমিংপুলে ডুবে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে যা জানা গেল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সাঁতারে নেমে সুইমিংপুলের পানিতে ডুবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সায়মা হোসেন মারা গেছেন। তবে তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে চিকিৎসক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগ।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
‘ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম ডিগ্রির জন্য, সে ফিরেছে মৃত্যু নিয়ে’
দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর স্মরণে জাবিতে সড়কের নামকরণ
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান ও রামেকের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সংকর কে বিশ্বাস মুখপাত্র।
তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক মোসা. রোখসানা বেগম টুকটাকি বলেন, “সাঁতার প্রতিযোগিতা অংশ নেওয়ার জন্য অনুশীলন করেছিলেন সায়মা। দুই রাউন্ড সাঁতরানোর পর হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রামেকে পাঠানো হয়। রামেকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এমন মৃত্যু কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।”
তবে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মারুফা সিদ্দিকা লিপি বলেন, “ওই শিক্ষার্থীকে যখন আনা হয়, আমরা তার পালস, বিপি কিছুই পাইনি। এখানে আসার আগেই সে মারা গিয়েছিল, আমাদের কিছু করার ছিল না। আমাদের এখানে সে ১০ মিনিটের মত ছিল। তারপরও আমরা অক্সিজেন দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।”
রামেকের চিকিৎসক ডা. সংকর কে বিশ্বাস মুখপাত্র বলেন, “সায়মা নামে একজন শিক্ষার্থীকে আনা হয়েছিল। যখন আনা হয়, তাকে দেখে এখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।”
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ বলা মুশকিল আসলে। এর জন্য ময়নাতদন্ত করতে হবে। আমরা মরদেহটি ময়নাতদন্ত বা আইনি প্রক্রিয়ার জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। পরবর্তীতে তার পরিবারের অনুমতিতে বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত করলে এ ব্যাপারে পরিষ্কার বলা যাবে। তার আগে কিছু বলা সম্ভব না।”
হার্ট অ্যাটাকের বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটা মানুষ যখন পানিতে ডুবে যায়, তখন হার্ট অ্যাটাক ও ফুসফুস জটিলতার মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করে। তার মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসেবে পানিতে ডুবে যাওয়া। আর যদি সে সাঁতারু হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে অন্য কোনো কারণে হার্ট অ্যাটাক বা আগে কোনো অসুস্থতার কারণে ডুবে যেতে পারে।”
“এ বিষয়গুলো আসলে এখন বলা মুশকিল। যেহেতু মারা গেছেন, এখন প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে গেলে আমাদের ময়নাতদন্ত করতে হবে,” যোগ করেন মুখপাত্র।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী