বঙ্গোপসাগরের বুকে ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। এর দক্ষিণের বিচ্ছিন্ন আরেকটি দ্বীপ ছেঁড়াদিয়া। ১৭ অক্টোবর জোয়ারের সময় ছেঁড়াদিয়ার পশ্চিম সৈকতে আটকে পড়ে একটি মাছ। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান তখন ছেঁড়াদিয়ায় অবস্থান করছিলেন। দ্রুত কাছে গিয়ে দেখেন একটি বিরল প্রজাতির পটকা মাছ। সাধারণত এই এলাকায় তেমন চোখে পড়ে না এই মাছ। মাছটির শরীরজুড়ে কাঁটা। দ্বীপের অন্য এলাকার সাগরে দুই প্রজাতির পটকা দেখা গেলেও বিচিত্র রঙের সুন্দর পটকা মাছটি এর আগে দেখেননি তিনি। আর মাছটি দেখে উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি। কারণ, এই প্রজাতির মাছের উপস্থিতি দ্বীপের প্রাণবৈচিত্র্য ফিরে আসার বড় লক্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো.

কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কাঁটাযুক্ত পটকা মাছের উপস্থিতি প্রমাণ করে সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সুফল ফলতে শুরু করেছে। এ কারণে দ্বীপে কাঁকড়া, কাছিমসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছে।

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের নেওয়া তিন বছরব্যাপী প্রকল্পের নাম ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রকল্প’। প্রকল্পের আওতায় দ্বীপের সৈকতে কেয়াবাগান সৃজন, পরিবেশ বিষয়ে লোকজনকে সচেতন করতে বালুচরে একাধিক বিলবোর্ড স্থাপন, সামুদ্রিক মা কাছিমের ডিম পাড়ার স্থান চিহ্নিতকরণ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে তথ্য সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজ চলছে। কামরুল হাসান ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি)।

প্রকল্প পরিচালক কামরুল হাসানের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল ১৬ থেকে ১৮ অক্টোবর সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অবস্থান করে দ্বীপের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় এই দলের সদস্যরা পুরো দ্বীপ এলাকা ঘুরে দেখেন। যাতায়াত নিষিদ্ধ এলাকা ছেঁড়াদিয়া, গোলদিয়া ও দিয়ারমাথাও পরিদর্শন করেন তাঁরা।

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের নেওয়া তিন বছরব্যাপী প্রকল্পের নাম ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রকল্প’। প্রকল্পের আওতায় দ্বীপের সৈকতে কেয়াবাগান সৃজন, পরিবেশ বিষয়ে লোকজনকে সচেতন করতে বালুচরে একাধিক বিলবোর্ড স্থাপন, সামুদ্রিক মা কাছিমের ডিম পাড়ার স্থান চিহ্নিতকরণ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে তথ্য সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজ চলছে। কামরুল হাসান ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি)।

কামরুল হাসান বলেন, পরিদর্শনের সময় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পরিযায়ী পাখি, গাঙচিল, বালুচরে লাল কাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকের বংশবিস্তারের দৃশ্য তিনি দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু ছেঁড়াদিয়া সৈকতের কাঁটাযুক্ত সুন্দর মাছটি তাঁকে হতবাক করেছে। এই জাতের মাছ একমাত্র সেন্ট মার্টিনের প্রবালপ্রাচীর, পাথুরে রিফ এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করে। এই মাছ শক্ত খোলসযুক্ত শামুক, কাঁকড়া ও মেরুদণ্ডী প্রাণী শিকার করে খায়। বড় কোনো মাছের সামনে পড়লে পটকা পানি বা বাতাস গিলে নিজের শরীরকে বেলুনের মতো ফুলিয়ে ঝুঁকি থেকে নিজেকে আত্মরক্ষা করে। শরীর ফুলে গেলে তীক্ষ্ণ কাঁটাগুলো বাইরের দিকে বেরিয়ে আসে। এই মাছের উপস্থিতি দ্বীপের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যের উপস্থিতির প্রমাণ।

প্রবাল সমৃদ্ধ উষ্ণজলে বসবাস করে কাঁটাযুক্ত পটকা মাছ। ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট ওমানের প্রবাল সমৃদ্ধ সমুদ্র উপকূল থেকে ছবিটি তুলেছেন আলোকচিত্রী ডিয়েগো ডেলসো।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বব চ ত র য র র উপস থ ত প রকল প র প রব ল পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

সেন্ট মার্টিনে কাঁটাযুক্ত পটকা মাছ কিসের ইঙ্গিত

বঙ্গোপসাগরের বুকে ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। এর দক্ষিণের বিচ্ছিন্ন আরেকটি দ্বীপ ছেঁড়াদিয়া। ১৭ অক্টোবর জোয়ারের সময় ছেঁড়াদিয়ার পশ্চিম সৈকতে আটকে পড়ে একটি মাছ। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান তখন ছেঁড়াদিয়ায় অবস্থান করছিলেন। দ্রুত কাছে গিয়ে দেখেন একটি বিরল প্রজাতির পটকা মাছ। সাধারণত এই এলাকায় তেমন চোখে পড়ে না এই মাছ। মাছটির শরীরজুড়ে কাঁটা। দ্বীপের অন্য এলাকার সাগরে দুই প্রজাতির পটকা দেখা গেলেও বিচিত্র রঙের সুন্দর পটকা মাছটি এর আগে দেখেননি তিনি। আর মাছটি দেখে উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি। কারণ, এই প্রজাতির মাছের উপস্থিতি দ্বীপের প্রাণবৈচিত্র্য ফিরে আসার বড় লক্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কাঁটাযুক্ত পটকা মাছের উপস্থিতি প্রমাণ করে সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সুফল ফলতে শুরু করেছে। এ কারণে দ্বীপে কাঁকড়া, কাছিমসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছে।

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের নেওয়া তিন বছরব্যাপী প্রকল্পের নাম ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রকল্প’। প্রকল্পের আওতায় দ্বীপের সৈকতে কেয়াবাগান সৃজন, পরিবেশ বিষয়ে লোকজনকে সচেতন করতে বালুচরে একাধিক বিলবোর্ড স্থাপন, সামুদ্রিক মা কাছিমের ডিম পাড়ার স্থান চিহ্নিতকরণ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে তথ্য সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজ চলছে। কামরুল হাসান ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি)।

প্রকল্প পরিচালক কামরুল হাসানের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল ১৬ থেকে ১৮ অক্টোবর সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অবস্থান করে দ্বীপের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় এই দলের সদস্যরা পুরো দ্বীপ এলাকা ঘুরে দেখেন। যাতায়াত নিষিদ্ধ এলাকা ছেঁড়াদিয়া, গোলদিয়া ও দিয়ারমাথাও পরিদর্শন করেন তাঁরা।

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের নেওয়া তিন বছরব্যাপী প্রকল্পের নাম ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রকল্প’। প্রকল্পের আওতায় দ্বীপের সৈকতে কেয়াবাগান সৃজন, পরিবেশ বিষয়ে লোকজনকে সচেতন করতে বালুচরে একাধিক বিলবোর্ড স্থাপন, সামুদ্রিক মা কাছিমের ডিম পাড়ার স্থান চিহ্নিতকরণ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে তথ্য সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজ চলছে। কামরুল হাসান ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি)।

কামরুল হাসান বলেন, পরিদর্শনের সময় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পরিযায়ী পাখি, গাঙচিল, বালুচরে লাল কাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকের বংশবিস্তারের দৃশ্য তিনি দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু ছেঁড়াদিয়া সৈকতের কাঁটাযুক্ত সুন্দর মাছটি তাঁকে হতবাক করেছে। এই জাতের মাছ একমাত্র সেন্ট মার্টিনের প্রবালপ্রাচীর, পাথুরে রিফ এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করে। এই মাছ শক্ত খোলসযুক্ত শামুক, কাঁকড়া ও মেরুদণ্ডী প্রাণী শিকার করে খায়। বড় কোনো মাছের সামনে পড়লে পটকা পানি বা বাতাস গিলে নিজের শরীরকে বেলুনের মতো ফুলিয়ে ঝুঁকি থেকে নিজেকে আত্মরক্ষা করে। শরীর ফুলে গেলে তীক্ষ্ণ কাঁটাগুলো বাইরের দিকে বেরিয়ে আসে। এই মাছের উপস্থিতি দ্বীপের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যের উপস্থিতির প্রমাণ।

প্রবাল সমৃদ্ধ উষ্ণজলে বসবাস করে কাঁটাযুক্ত পটকা মাছ। ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট ওমানের প্রবাল সমৃদ্ধ সমুদ্র উপকূল থেকে ছবিটি তুলেছেন আলোকচিত্রী ডিয়েগো ডেলসো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ