রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সম্পর্কে জানিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী ফরাসি বায়োকেমিস্ট জেসি ইনশসপে, ইনস্টাগ্রামে যিনি ‘গ্লুকোজ গডেস’ নামে পরিচিত। জেসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক ও যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিস্ট্রিতে স্নাতকোত্তর।

২০২২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর বই ‘গ্লুকোজ রেভল্যুশন: দ্য লাইফ চেঞ্জিং পাওয়ার অব ব্যালান্সিং ইয়োর ব্লাড সুগার’ নিউইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, খাবারের পাশাপাশি কোন কোন বিষয় রক্তের শর্করায় প্রভাব ফেলে।

১.

রাতের খাবার খাওয়ার সময়

গবেষণায় দেখা গেছে, রাত আটটার পর খাবার খেলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায়। কেননা আমাদের শরীর দিনের প্রথম ভাগে গ্লুকোজ ভালোভাবে শোষণ করে। ‘সকালে খাও রাজার মতো’ প্রচলিত কথাটা আদতে বৈজ্ঞানিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ।

দিনে সময় যত গড়ায়, ততই আমাদের শরীর গ্লুকোজের প্রতি কম সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এ কারণেই রাত আটটার পর খাবার খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে বেশি সময় ধরে গ্লুকোজ ও তার প্রভাব থেকে যায়। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের অবশ্যই রাত আটটার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিতে হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, কেবল এক রাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে রক্তে শর্করার মাত্রা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কোন দেশে কেন পড়বেন

বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ একজন শিক্ষার্থীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, সঠিক দেশ নির্বাচন আবেদনকারীর শিক্ষা, ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। কোন দেশ উচ্চশিক্ষার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, তা নির্ধারণের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষার মান, পড়াশোনার খরচ, ভাষা ও সংস্কৃতি, ভিসাপ্রক্রিয়া, স্কলারশিপের সুযোগ ও পড়াশোনা শেষে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা।

প্রতিটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করলে নিজের প্রয়োজন ও লক্ষ্য অনুযায়ী সেরা দেশ নির্বাচন করা সহজ হয়। কারণ, যে দেশ আপনার শিক্ষাগত আগ্রহ, আর্থিক সামর্থ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ—সেই দেশেই আপনার উচ্চশিক্ষার যাত্রা হবে সবচেয়ে সফল ও ফলপ্রসূ।

দেশ বাছাইয়ের আগে...

বিদেশে পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজের লক্ষ্য স্পষ্ট করতে হবে। আপনি কি গবেষণাভিত্তিক পড়াশোনা করতে চান নাকি ক্যারিয়ারভিত্তিক, না কোনো প্রফেশনাল কোর্স? আপনি কি প্রযুক্তি, ব্যবসা, সমাজবিজ্ঞান নাকি কলা ও মানবিক বিষয়ে আগ্রহী?

আপনার এই লক্ষ্যই নির্ধারণ করবে কোন দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। যেমন যুক্তরাষ্ট্র গবেষণায় শীর্ষে, যুক্তরাজ্যে কোর্স টাইমলাইন কম, কানাডায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ বেশি আর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড জীবনযাত্রা ও কাজের সুবিধায় এগিয়ে।

আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে২৬ অক্টোবর ২০২৫কোন দেশের উচ্চশিক্ষার সুবিধা কেমন

বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষার জন্য কিছু দেশ তাদের উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা-সুবিধার জন্য পরিচিত। যেমন–

যুক্তরাষ্ট্র: স্ট্যানফোর্ড, এমআইটি ও হার্ভার্ডের মতো বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারণে যুক্তরাষ্ট্র উচ্চশিক্ষার জন্য সমাদৃত। এখানে গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ অসীম।

যুক্তরাজ্য: অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারণে যুক্তরাজ্যও শিক্ষার্থীদের একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।

কানাডা: কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশ মানসম্মত এবং এখানকার শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ অনেক শিক্ষার্থীর পছন্দ।

অস্ট্রেলিয়া: মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে অস্ট্রেলিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।

কোন দেশে খরচ কেমন

উচ্চশিক্ষার খরচ অনেক শিক্ষার্থীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ইউরোপের কিছু দেশ, যেমন জার্মানি ও নরওয়েতে বিনা মূল্যে বা তুলনামূলকভাবে কম খরচে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

জার্মানি: জার্মানির অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি নেই, যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুবিধা। এ ছাড়া গবেষণার জন্য এখানে অনেক সুযোগ রয়েছে।

নরওয়ে: নরওয়েতে বিনা মূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে, তবে জীবনযাত্রার খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি।

কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া: স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও এখানে পড়াশোনার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে এখানকার খরচ সামলানো সম্ভব হয়।

আরও পড়ুনজেনে নিন বিশ্বের সেরা ১০ স্কলারশিপ সম্পর্কে২২ ঘণ্টা আগেবিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের সময় লক্ষণীয়...

একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে কোর্সের ধরন ও পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী সিলেবাস যাচাই করতে হবে।

কোনো বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষে থাকলেও আপনার পছন্দের নির্দিষ্ট বিষয়ের ক্ষেত্রে ততটা মানসম্মত নাও হতে পারে।

পড়াশোনার খরচ অনেক সময় সিদ্ধান্ত বদলে দেয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন ও সরকারি বৃত্তির সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আগে থেকেই খোঁজ নিন।

বিশ্বের বিভিন্ন শহরভেদে জীবনযাত্রার ব্যয় ভিন্ন হয়। কোথায় কাজের সুযোগ বেশি আছে, সেটি আগেই যাচাই করে নেওয়া দরকার।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা মানে শুধু অন্য দেশে যাওয়া নয়; বরং নিজের ভবিষ্যৎকে নতুনভাবে গড়া। তাই বন্ধুর পরামর্শ বা ‘ট্রেন্ড’ দেখে নয়; নিজের আগ্রহ, লক্ষ্য ও সামর্থ্য বিচার করে সিদ্ধান্ত নিন। কারণ, সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সঠিক বিষয় বেছে নেওয়া মানে আপনার জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ের সবচেয়ে দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ