ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা যেহেতু প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সেটা সেভাবেই হবে এবং সেই প্রক্রিয়া অগ্রসর হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার ফরিদা আখতার। 

তিনি বলেন, ‍“নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত এই সরকারের যে কাজগুলো করার কথা, আমরা করে যাব। ক্যাবিনেট মিটিংয়েই সিদ্ধান্ত হবে, কবে শেষ ক্যাবিনেট মিটিং হবে।”

আরো পড়ুন:

এসডিজি অর্জনে কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি উৎসাহব্যঞ্জক: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

পদত্যাগ করলে নির্বাচন করতে পারেন উপদেষ্টা মাহফুজ 

আরো পড়ুন: দায়িত্ব হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক চলবে: প্রেস উইং

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে কাপ্তাই হ্রদের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে উপেদেষ্টা সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, “তফসিল ঘোষণার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। আমরা তাদেরকে সময় নির্ধারণ করে দেব আর তারা সে অনুযায়ী তফসিলের তারিখ দেবে বিষয়টি এমন নয়।”

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ শাম্মী, সিভিল সার্জন ডা.

নূয়েন খীসা, বিএফডিসি রাঙামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. মোবারক হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমিনসহ মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

সভায় জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, ড্রেজিং না হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদের নাব্য কমে এসেছে। ফলে সারা বছর মাছ পাওয়া যায় না। মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে জেলেদের প্রতিমাসে ২০ কেজি চাল দেওয়া হয়, তা বাড়িয়ে ৪০ কেজি করার দাবি জানান তারা।

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট উপদ ষ ট মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

ভোট সুষ্ঠু না হলে বাতিল করা হবে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে এমন ঘোষণা চায় জামায়াত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে তা বাতিল করা হবে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে এমন ঘোষণা চাইছে জামায়াতে ইসলামী।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে এই আহ্বান রাখা হয় বলে আজ সোমবার এক গোলটেবিল বৈঠকে জানান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। একশনএইড বাংলাদেশ এবং প্রথম আলোর আয়োজনে এ গোলটেবিল বৈঠকটি হয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে।

আবদুল্লাহ তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যাতে আলোচনায় বসা হয়। সেই আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধি লঙ্ঘন না করার অঙ্গীকার করবে, সেটি টেলিভিশনে প্রচার করা হবে, দেশবাসী দেখবে। এরপরও নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, তাহলে প্রধান উপদেষ্টা সেই নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেবেন, জাতিকে যেন এমন কথা বলেন। কারও মাধ্যমে নির্বাচনে ব্যত্যয় ঘটলে জনগণই এই বিষয়টি দেখবে।

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে যারা জিতবে তাদের গলায় মালা দেবে জামায়াত।– সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, নায়েবে আমির, জামায়াতে ইসলামী

অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। দলগুলো আন্তরিক এবং প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে অবাধ নির্বাচন সম্ভব মন্তব্য করে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে যারা জিতবে তাদের ‘গলায় মালা দেবে’ জামায়াত।

গত ৫৪ বছরে দেশের ‘ব্যর্থতার’ পেছনে সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়াটাকে একটা বড় কারণ হিসেবে দেখান জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হবে। নির্বাচনের আচরণবিধি সব দলকে মানতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব অঙ্গীকার শুধু নয়, নিজেরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নিজেদের ভিতরে পরিবর্তন আনতে হবে।

দেশে নেতৃত্বের সংকট রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বহু লড়াই হয়েছে, বহু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এই পরিবর্তনের পরে যে নেতৃত্ব ক্ষমতায় এসেছে, তারা জনআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে একমত হয়ে কাজ করেনি, বরং তারা দুর্নীতি করে, নেতিবাচক সব কাজ করে পরিবর্তনের সুযোগটা নষ্ট করেছে। তারা বৈষম্য তৈরি করেছে, সমাজে পচন ধরিয়েছে, সুশাসনের বিপরীতে বাজে শাসন দিয়েছে। মানুষ সেখান থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

তবে জুলাই অভ্যুত্থানে পরিবর্তনকে ব্যতিক্রম হিসেবে দেখার কথা জানান জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ তাহের। তিনি একই সঙ্গে বলেন, এই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশ মানুষই কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর। অভ্যুত্থানের পরে এই শ্রেণির মানুষদের অবহেলা করা হয়েছে।

সভা পরিচালকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী হলে জামায়াত কত মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে, তা উল্লেখ করেনি। তবে জামায়াত ক্ষমতায় যেতে পারলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। দুই কারণে এটি সম্ভব হবে। একটা হচ্ছে দুর্নীতি যাতে না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। দারিদ্র্যের একটা বড় কারণ দুর্নীতি। সুশাসন নিশ্চিত ও প্রশাসনের সর্বত্র জবাবদিহি নিশ্চিত করা গেলে দুর্নীতি কমানো যাবে। জামায়াত একটা মৌলিক পরিবর্তনের জন্যই কাজ করছে।

এর আগে দেশের নয়টি জেলায় আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকের প্রাপ্ত সুপারিশ আজকের অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশ উইমেন রাইটস লিড মরিয়ম নেছা। সভা পরিচালনা করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।

আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, ২০০৭–০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ত্রিপুরা, নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের সংগঠক মাহরুখ মহিউদ্দিন, ইষ্ট ওয়েষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক নাজিফা জান্নাত প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ