দুই শিশু সন্তান নিয়ে অথৈ সাগরে প্রিয়া
Published: 27th, October 2025 GMT
শিশু আব্দুল্লাহ আর পারিসার নিষ্পাপ দুই জোড়া চোখ শত মানুষের ভিড়ে খুঁজে ফিরছে তাদের বাবা আবুল কালাম আজাদকে। তারা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি যে, প্রিয়তম বাবা আর পৃথিবীতে নেই, কোলে নিয়ে করবে না আদর।
অন্যদিকে, হঠাৎ করে স্বামীকে হারিয়ে অথৈ সাগরে পড়ে গেছেন প্রিয়া। অবুঝ দুটি শিশুকে নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন তিনি। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের ভুলের মাশুল গুনছে পুরো পরিবার।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়ি হাসপাতালে ২০ দিনে ১২ শিশুর মৃত্যু
বরগুনায় ২ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ বৃদ্ধের বিরুদ্ধে মামলা
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠী এলাকার মৃত আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে আবুল কালাম আজাদ স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায় বাস করতেন। তিনি রাজধানীতে একটি বেসরকারি এজেন্সিতে চাকরি করতেন। আয়ের একটি অংশ গ্রামের বাড়িতে পাঠাতেন। গতকাল রবিবার বেলা ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় যাওয়ার সময় মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড খুলে তার ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই নিহত হন আবুল কালাম আজাদ।
আবুল কালাম আজাদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেওয়া হলেও তা যৎসামান্য ও অপ্রতুল। সন্তানদের নিয়ে কীভাবে সামনের দিনগুলো পার করবেন, সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না প্রিয়া।
তিনি বলেছেন, “আমাদের সংসার এখন কীভাবে চলবে? ছোট ছোট বাচ্চাগুলো নিয়ে সামনে কীভাবে চলব, বুঝতে পারছি না। আমার স্বামীর মতো যাতে আর কারো মৃত্যু না হয়।”
শুধু ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন আবুল কালাম আজাদের স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহতের চাচাত ভাই আব্দুল গণি বলেছেন, সরকারিভাবে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কেউ আমাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি। আবুল কালাম আজাদের আয়ের ওপর পুরো পরিবার নির্ভরশীল ছিল। আমরা দাবি জানাই, তার পরিবারের কথা ভেবে সরকার অন্তত কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিক, যাতে তার সন্তানদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ হয়।
নিহতের নিকটাত্মীয় কাওসার আহম্মেদ বলেন, আমরা মনে কবি, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এভাবে একটি তাজা প্রাণ চলে যাবে, তা আমরা কল্পনা করিনি। আমরা চাই, এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও পরিবারটির পাশে দাঁড়াক সরকার।
নড়িয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেছেন, আমরা ক্ষতিপূরণের বিষয়টি গণমাধ্যম থেকে জেনেছি। তবে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ঢাকা/আকাশ/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত দ র ঘটন পর ব র সন ত ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিকের রিমান্ড চায় পুলিশ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আবদুল হান্নানের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।
আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম হাসান এ আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলমের আদালতে আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আবদুল হান্নানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের চারটি কারণে দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেলে হেলমেট পরা অজ্ঞাতনামা দুজন সন্ত্রাসী ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। গুলিতে ওসমান হাদি গুরুতর জখম হন। র্যাব-২ ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ যাচাই করে মোটরসাইকেলের মালিক মো. আবদুল হান্নানের বিষয়ে জানতে পারে। ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোটরসাইকেলের বিষয়ে কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি আসামি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, আসামিদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও মোটরসাইকেল উদ্ধার, জড়িত অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের নাম–ঠিকানা সংগ্রহসহ অবস্থান জানা, মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও তথ্য-অর্থের সম্পর্ক সংগ্রহ এবং কোন স্থান থেকে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, তার উৎস জানার জন্য পুলিশের নিজ হেফাজতে রেখে আবদুল হান্নানকে সাত দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।
এর আগে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর প্লেটের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর) সূত্র ধরে গতকাল শনিবার আবদুল হান্নানকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আটক করে র্যাব-২। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মোটরসাইকেলটি নিজের বলে স্বীকার করেছেন। পরে তাঁকে পল্টন মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়।
গত শুক্রবার বেলা ২টা ২৪ মিনিটে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। পেছন থেকে অনুসরণ করে আসা একটি মোটরসাইকেল থেকে এক ব্যক্তি ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করেন। তিনি বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
আরও পড়ুনওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর ধরে মালিককে আটক৫ ঘণ্টা আগে