মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর এশিয়া সফরে শান্তি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে একই সঙ্গে লাতিন আমেরিকায় যুদ্ধের উত্তেজনাও বাড়াচ্ছেন। গত রোববার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করার সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু একই সময়ে ক্যারিবীয় সাগরে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছেন তিনি। ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযান চালানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ক্যারিবীয় সাগরে কয়েকটি স্পিডবোট উড়িয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধবিমানবাহী রণতরি, এফ/এ-১৮ জেট ও নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের বহরের প্রয়োজন পড়ে না। তবু ইউরোপ থেকে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড রণতরি ওই অঞ্চলে আগে থেকে অবস্থানরত নৌ ও বিমানবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে রওনা হয়েছে। এ থেকে ধারণা জোরালো হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালান রোধের নামে তাদের অভিযান আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে যাচ্ছে।

এই নতুন ২১ শতকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গানবোট’ কূটনীতির লক্ষ্য হচ্ছে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো। যুক্তরাষ্ট্রের চোখে তিনি নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়া স্বৈরশাসক। গানবোট কূটনীতি হলো কোনো দেশের নীতি বা আচরণ পাল্টাতে বা তাকে ভয় দেখাতে শক্তিশালী সামরিক নৌবহর (যুদ্ধজাহাজ, রণতরি ইত্যাদি) পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া।

উত্তেজনা বাড়ছে

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ঘটনা লাতিন আমেরিকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভেনেজুয়েলার পাশাপাশি কিউবা ও নিকারাগুয়াও এই পদক্ষেপকে উসকানিমূলক বলে অভিযোগ করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, মার্কিন রণতরির উপস্থিতি মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়ার জন্য এক বিশাল বার্তা দেবে অথবা ভেনেজুয়েলার সেনা কর্মকর্তাদের তাঁকে উৎখাত করতে উৎসাহিত করবে। এ ছাড়া মাদক চক্রের ওপর হামলার প্ল্যাটফর্মের বাইরে এটি সরকার পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার ডেমোক্র্যাট সিনেটর মার্ক কেলি রোববার এবিসির ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কোনো দেশকে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা না করলে বা সেখানে সামরিক অভিযান শুরু করার ইচ্ছা না থাকলে পুরো যুদ্ধবহরকে এক প্রান্ত থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠানো হয় না।’

সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম রোববার বলেন, ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের আশঙ্কা দেখা গেছে। সাউথ ক্যারোলাইনার এই রিপাবলিকান সিনেটর সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমার মনে হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাদুরোর পদত্যাগের সময় এসেছে।’

ট্রাম্পের এশিয়া সফর

ট্রাম্প বর্তমানে এশিয়া সফরে রয়েছেন। এ সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বাণিজ্যবিষয়ক আলোচনা ও এশিয়া অঞ্চলে উত্তেজনা কমিয়ে শান্তির পথ খোঁজা। তাঁর সফরের শুরু হয়েছে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান সম্মেলনে যোগদানের মাধ্যমে। তিনি তাঁর সফরে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া তিনি আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে

বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধে বৈঠক করবেন। বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ ঘিরে চলমান উত্তেজনা তাঁদের বৈঠকের পর কমতে পারে। কিন্তু লাতিন আমেরিকায় এ উত্তেজনা এখনই কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত

দক্ষিণ চীন সাগরে আধ ঘণ্টার ব্যবধানে মার্কিন নৌবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ও একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।তবে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন সকল ক্রু সদস্য। বিধ্বস্ত এয়ারক্রাফট দুটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিৎজ-এর অংশ ছিল। 

সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিৎজ থেকে উড্ডয়ন করা এক যুদ্ধবিমান ও একটি হেলিকপ্টার স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে ৩০ মিনিটের ব্যবধানে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর প্যাসিফিক ফ্লিট এ তথ্য জানিয়েছে।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তান-আফগানিস্তানের বিরোধ দ্রুত সমাধান করবো: ট্রাম্প

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর

ফ্লিটের বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার পর এমএইচ-৬০আর সি হক হেলিকপ্টারের তিন ক্রু সদস্যকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর এফ/এ-১৮এফ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমানের দুই পাইলটও ইজেক্ট করে নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন। মোট পাঁচজনই ‘সুরক্ষিত এবং স্থিতিশীল অবস্থায়’ রয়েছেন। বিবৃতিতে আরো জানানো হয়েছে, দুটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

সিএনএন বলছে, এই বছর মার্কিন নৌবাহিনী এখন পর্যন্ত ৪টি এফ/এ-১৮এফ যুদ্ধবিমান হারিয়েছে, যার প্রতিটির মূল্য ৬ কোটি ডলার। 

এর আগে, বসন্তকালে লোহিত সাগরে মার্কিন নৌবাহিনী দুটি এফ/এ-১৮এফ হারিয়েছিল, একটি বিমানবাহী রণতরী থেকে পড়ে গেছে এবং অন্যটির অবতরণ ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে জানা গেছে। আগস্টে প্রশিক্ষণ উড্ডয়নের সময় ভার্জিনিয়ায় আরেকটি এফ/এ-১৮এফ বিধ্বস্ত হয়।

ইউএসএস নিমিৎজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ যুদ্ধজাহাজ এবং বর্তমানে ব্যবহৃত সবচেয়ে পুরোনো মার্কিন বিমানবাহী রণতরী। আগামী বছর এটি অবসর নেওয়ার আগে বর্তমানে শেষ মিশনে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত
  • দক্ষিণ চীন সাগরে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে বিধ্বস্ত মার্কিন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান
  • যুক্তরাষ্ট্রের ‘গোপন অভিযান’ ঠেকাতে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে ভেনেজুয়েলা
  • ভেনেজুয়েলার সঙ্গে উত্তেজনা, বিমাণবাহী রণতরি মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র
  • যুদ্ধ উস্কে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: মাদুরো