এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সাংবিধানিক আদেশ বা নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, দলের দেশব্যাপী সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তিনি রাজশাহী সফরে এসেছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত স্বাক্ষর অনুষ্ঠান কেবলই আনুষ্ঠানিকতা, কেবলই একটি কাগজে সাইন। এ কারণেই তাঁরা সনদ অনুষ্ঠানে স্বাক্ষর করেননি। তাঁরা সংস্কার চান এবং স্বাক্ষরের জন্যই অপেক্ষা করছেন। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালা প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হলে তাঁরা স্বাক্ষর করবেন।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর ত্রিদলীয় জোটের রূপরেখার মতো জনগণকে প্রতারণা করা হোক, তা তাঁরা চান না। নব্বইয়ের পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে হতে দেওয়া হবে না।

নির্বাচনী প্রতীক প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শাপলা না দেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের একটি স্বেচ্ছাচারিতা। কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই যদি একটি মনোবাসনা চাপিয়ে দিতে চায়, আমরা ধরে নেব নির্বাচন কমিশন অন্য কোনো শক্তির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এমন ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না, তা নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হবে। আইনি ও সাংবিধানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হলে অন্য যেকোনো প্রতীক নিতে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার ষড়যন্ত্র হিসেবে যদি প্রতীক না দেওয়া হয়, তাহলে রাজপথেই নামব। আমরা চাই না রাজপথে নামতে। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মধ্য দিয়েই এগোতে চাই। আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রমকে ব্যাহত করার জন্য শাপলা প্রতীক নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’

নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁদের নির্বাচনী কার্যক্রম থেমে নেই। প্রার্থী বাছাই চলছে এবং খুব দ্রুতই প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, আগামীর সংসদে তরুণদের ভয়েস থাকবে। ছাত্র, তরুণ, শ্রমিক, কৃষক, মধ্যবিত্ত, প্রবাসী, নারীসহ সমাজের সব গ্রহণযোগ্য মানুষকে আমরা তুলে আনতে চাই।’

কোনো জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি জানিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘যদি জোটে যেতে হয়, তা অবশ্যই একটা নীতিগত জায়গা থেকে আসবে। জুলাই সনদ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মৌলিক জায়গা।’ তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, সংস্কারের বিপক্ষে বা ইতিহাসের দায়ভার যাদের ওপর রয়েছে, তেমন কোনো শক্তির সঙ্গে জোটে যাওয়ার আগে তাদের অনেকবার ভাবতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। তবে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে সমালোচনা ওঠায় নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল করা যেতে পারে।

নির্বাচনের আগে বিচারের একটি ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানসহ গুম-খুনের ঘটনায় হওয়া মামলাগুলোর বিচারপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিক দল ও সরকারের পক্ষ থেকে আসতে হবে। আওয়ামী লীগের সহযোগী দলগুলোর সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছে, তাদেরও বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে আনা উচিত।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন। উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ সরক র র এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা শুরু হচ্ছে বৃহষ্পতিবার

আগামী বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা। বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) নামে এই মেলা হবে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হবে। মেলার আয়োজন করেছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। এবারের মেলায় ১২টি দেশ অংশ নেবে।

টোয়াবের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির নেতারা। রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি জানায়, এবারের মেলায় মোট ২২০টি স্টল থাকবে। মেলায় অংশ নেবেন মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপসহ ১২টি দেশের প্রতিনিধি ও পর্যটন খাতের দেশি-বিদেশি দুই হাজারের বেশি ব্যবসায়ী। এবারের মেলার টাইটেল স্পনসর হিসেবে থাকবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। তবে ছাত্রছাত্রী, মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই যোদ্ধাদের জন্য মেলায় প্রবেশ উন্মুক্ত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, মেলায় পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের জাতীয় পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অংশগ্রহণ করছে। মেলায় সেমিনারও অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন সাংস্কৃতিক আয়োজন ও দেশের পর্যটন স্থানের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। মেলার প্রবেশমূল্যের ওপর বিটিটিএফ পেমেন্ট পার্টনার বিকাশের ক্যাশব্যাক অফার থাকছে।

সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ‘এই মেলা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় পর্যটন মেলা। পর্যটন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও এই খাতের টেকসই উন্নয়ন এই মেলার প্রধান উদ্দেশ্য। আমরা আশা করছি যে এবারের পর্যটন মেলা ব্যবসায়ী, দেশি-বিদেশি পর্যটক এবং পর্যটনশিল্প-সংশ্লিষ্ট সবার মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মহাব্যবস্থাপক অশ্বিনী নায়ার, রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক শাহিদ হামিদ ও বিকাশের প্রতিনিধিরা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টোয়াবের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মো. আনোয়ার হোসেন, সাবেক সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশি প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ