সাভারে দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে জোরপূর্বক মিথ্যা জবানবন্দী নেয়ার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আর কবির।

এ সময় সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন বলে জানান উপাচার্য। 

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.

এম আর কবির। 

উপাচার্য জানান, রবিবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে সব দায় ড্যাফোডিলের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে সিটি বিশ্ববিদ্যালয়। সংঘর্ষে ড্যাফোডিলের শতাধীক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে হাসাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। সেদিন রাতে ড্যাফোডিলের ১১ শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে জোরপূর্বক পরিকল্পিত হামলার জবানবন্দির ভিডিও ধারণ ও তা প্রচার করে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের একতরফা দোষী করা হচ্ছে। 

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্রকৃত দোষীদের সনাক্ত করা যাবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিষয়টি দেখছেন বলে জানান উপাচার্য।

এ ছাড়াও ড‍্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের দ্বারা সাংবাদিকদের হেনস্তার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীদের আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।’’ সাংবাদিকদের সাথে বিরূপ আচরণ করায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। 

উপাচার্য জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সিটি ইউনিভার্সিটির একাউন্টস থেকে দেড় কোটি টাকা চুরি, অস্ত্রসহ হামলার নির্দেশ, লুটপাটের ঘটনায় জিম্মি শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করে মিডিয়া ট্রায়াল করার লক্ষ্যে মিথ্যাচার করে সিটি কর্তৃপক্ষ প্রচার করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুম ইকবাল, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান প্রমুখ। 

প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে থুতু ফেলাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সংঘাতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় সাভারের খাগান এলাকা। ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলে রাতভর। আহত হন উভয়পক্ষের ২ শতাধীক শিক্ষার্থী। অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয় সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও পরিবহন। পরে এ ঘটনায় বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে সিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া তদন্ত কমিটি গঠনসহ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়ধীন বলে জানান সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবু জায়েদ।

ঢাকা/সাব্বির//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য স ঘর ষ চ র কর ঘটন য় র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

তফসিলের পরদিন ‘প্রার্থী’ গুলিবিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকায় দিনের বেলায় গুলি করা হলো ভোটে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে (৩৩)। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছিলেন। হাদি ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।

গুলি করার পর আহত হাদিকে রিকশায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলি তাঁর মাথায় লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলনে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখার পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। সাংস্কৃতিক এই প্ল্যাটফর্ম তাদের লক্ষ্য ঠিক করে, ‘সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ’। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী বক্তব্য হাদিকে আলোচনায় আনে। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার সময় হাদি সক্রিয় ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দিতে বলেছিলেন।

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনী তহবিলের হিসাব প্রকাশ এবং তাঁর ওপর ময়লা পানি নিক্ষেপের ঘটনায় ‘অসুবিধা নেই’ উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েও আলোচনায় আসেন হাদি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে একটি ব্যাটারির রিকশায় ছিলেন হাদি ও তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি। তাঁদের পেছনে পেছনে আসে একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে চলন্ত অবস্থায় সেই মোটরসাইকেল থেকেই একাধিক গুলি করা হয় হাদিকে।

ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান

সম্পর্কিত নিবন্ধ