বাহাত্তরের সংবিধানের মাধ্যমে দেখায় গত ১৫ বছরের গুম-খুন মিডিয়ার চোখে পড়েনি: তথ্য উপদেষ্টা
Published: 28th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের গণমাধ্যম ১৯৭২–এর সংবিধানে আবিষ্ট থাকার কারণেই আওয়ামী লীগ শাসনামলের গুম-খুন নিয়ে সরব ছিল না বলে মনে করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধানের মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশকে দেখতে চাওয়ার প্রবণতার কারণেই গত ১৫ বছরে গুম-খুন তাদের চোখে পড়ে নাই...গত ১০-১৫ বছরে বিএনপি-জামায়াতের যাঁরা মারা যাচ্ছিলেন, গুম হচ্ছিলেন, খুন হচ্ছিলেন, কিন্তু আমরা এখানে মিডিয়ার লোকদের কী করতে দেখছি?’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মাহফুজ আলম।
‘মিডিয়ার কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট’ নিয়ে ভাবার ওপর জোর দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘জনগণের বৃহত্তর অংশকে যদি আমি যুক্ত করি, আমিই ভালো করব। ফলে এই যে একটা গুড উইল এবং একটা যে আমাদের আন্তসম্পর্কের জায়গা, এটা যদি আমরা মিস করি, তাহলে আমরা বারবার বিভিন্ন খাদে পড়ব। এক-এগারো, তারপর আরও অনেকগুলো ক্রাইসিস আমাদের সামনে আসতে থাকবে এবং রাজনৈতিক সংঘাত অনিবার্য হবে, সেটা আমি বারবার বলছি। এটা কোনোভাবে হুমকি বা হতাশার জায়গা থেকে নয়, বরং সোসাইটিকে ওই জায়গাতে আমরা নিয়ে যাচ্ছি।’
সে জন্য জাতীয় স্বার্থে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার বলে মনে করেন মাহফুজ আলম।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে একটি জাতীয় বুর্জোয়া শ্রেণি দরকার মন্তব্য করে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমাদের আসলে জাতীয় বুর্জোয়া একটা শ্রেণি দরকার, যারা আসলে জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবে.
বাংলাদেশে সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র পাকিস্তানি কিংবা উপনিবেশিক আমলাতন্ত্রের ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে পেরেছে কি না, সেই প্রশ্ন রেখে মাহফুজ আলম বলেন, ‘ওইটা যদি না বের হয়, তাহলে আমরা এখানে যত সুন্দর সুন্দর আলোচনা করি, পলিসি প্রপোজাল, কিছু কাজ করবে না। এটা আমি নিজে উদাহরণ।’
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফিরে আসার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের পরেই দেউলিয়াত্ব বরণ করেছে। কারণ, এই যে রাজনৈতিক দলের বাইরে সিভিল সোসাইটি এবং মিডিয়া কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট, যেটাকে আমরা বলি মিলিটারি-সিভিল ব্যুরোক্রেসি এবং করপোরেশনস—এই তিনটা মিলিয়ে যে নেক্সাস বাংলাদেশে, আনহোলি নেক্সাস, এই আনহোলি নেক্সাসের কাছে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা খুবই গৌণ হয়ে যায়।’
‘অগ্নিঝরা বর্ষা: দেশ ও বিদেশে’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মাহফুজ আলম। সংকলন গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে ‘ব্রেইন’ নামের একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, বিডি জবসের সিইও ফাহিম মাশরুর প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক উপদ ষ ট আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে ফিরতে রাজি হয়েছে, জানালেন ট্রাম্প
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় সব ধরনের গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। শুক্রবার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা জানিয়েছেন।
ট্রাম্প একে একে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেতের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। শুক্রবার এসব ফোনালাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ দুটির অবস্থান জানান ট্রাম্প।
আরও পড়ুননিজেদের ভূখণ্ড থেকে কম্বোডিয়ার বাহিনীকে সরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে থাইল্যান্ড০৯ ডিসেম্বর ২০২৫নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, ‘তাঁরা (থাইল্যান্ড আর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী) আজ সন্ধ্যা থেকেই সব ধরনের গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন। মালয়েশিয়ার দুর্দান্ত প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহায়তায় প্রস্তুত করা যে শান্তি চুক্তিতে আমার এবং তাঁদের দুজনের সই রয়েছে, সেটায় ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা।’
সপ্তাহজুড়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চলা সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। দেশ দুটির বিরোধপূর্ণ সীমান্তের দুপাশে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে গত জুলাইয়ে প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ ও মালয়েশিয়ার প্রত্যক্ষ উদ্যোগে দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়। থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে তাদের বাণিজ্য সুবিধা স্থগিত করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুনকম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে সংঘাতে থাই সেনা নিহত, পাল্টা বিমান হামলা থাইল্যান্ডের০৮ ডিসেম্বর ২০২৫অক্টোবরে আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের সম্মেলনে অংশ নিতে ট্রাম্প মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে যান। তখন থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে সই হয়। চুক্তিতে সই করেন দেশ দুটির প্রধানমন্ত্রীরা। সই করেন ট্রাম্পও।
থাইল্যান্ড গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিত করে। সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর ব্যাংককের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে।
আরও পড়ুনথাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া কেন সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছে, সমাধান কোন পথে ২৬ জুলাই ২০২৫