বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
Published: 28th, October 2025 GMT
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের লক্ষ্যে ৩ডি মডেল প্রদর্শন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেরোবির পার্কের মোড়ে অবস্থিত শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সিন্ডিকেট সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
শনিবারের মধ্যে বেরোবি ছাত্র সংসদের রোডম্যাপ ঘোষণা
বেরোবি ছাত্র সংসদ আইন অনুমোদন
সভায় স্বাগত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের অবদান আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। তার অসামান্য ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে যে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা শুধু একটি স্থাপত্য নিদর্শনই হবে না, বরং এটি আগামী প্রজন্মকে ইতিহাস জানতে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখবে।”
তিনি বলেন, “শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের তিনটি নকশার মধ্যে থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত নকশা নির্বাচন করা হবে। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী অর্থবছরে নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।”
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং রংপুর জেলা প্রশাসকসহ স্থাপত্যবিদ ও প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম ত স তম ভ
এছাড়াও পড়ুন:
বাগমারার শহিদুল ইসলামকে অভিবাদন
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ-বান্দাইখাঁড়া সড়কের পাশে প্রায় ১ হাজার ৪০০ তালগাছ লাগিয়ে এক নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন শহিদুল ইসলাম নামের একটি স্কুলের ল্যাব কর্মচারী। সামান্য বেতনের মানুষটি ১৫ বছর ধরে সন্তানের মতো পরিচর্যা করে যে সবুজের দেয়াল তৈরি করেছেন, তা আমাদের সমাজের দায়িত্ববোধ এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার এক বিরল উদাহরণ।
শহিদুল ইসলাম কোনো সরকারি প্রকল্প বা বড় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে এই কাজ করেননি; বরং তিনি নিজের পকেটের টাকায় তালের বীজ সংগ্রহ করেছেন, যা স্থানীয়দের কাছে একসময় ‘পাগলামি’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। তাঁর ভাষায় ‘কিছু পাওয়ার জন্য’ এ কাজ করেননি তিনি; বরং সড়কের ক্ষতি ঠেকানো, বজ্রপাত থেকে রক্ষা, সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং দুর্ঘটনা রোধ করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।
বজ্রপাতের ঝুঁকি মোকাবিলায় তালগাছের সারি যে কার্যকর ভূমিকা রাখে, তা আজ প্রমাণিত। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও মাটির ক্ষয়রোধেও এর জুড়ি মেলা ভার। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সরকারি উদ্যোগে বৃহৎ পরিসরে খুব কমই দেখা যায়। শহিদুলের স্ত্রী যখন বলেন, ‘ওই সড়ক দিইয়্যা কোনটেও যাবার লাগলে তালগাছ দেইখ্যা বুক ভরে যায়,’ তখন বোঝা যায়, এই গাছগুলো কেবল পরিবেশ নয়, এটি একটি পরিবারের গর্ব ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
শহিদুল ইসলাম প্রমাণ করেছেন, পরিবেশ সুরক্ষার জন্য বড় বাজেট নয়, দরকার আন্তরিকতা এবং অধ্যবসায়। তাঁর মতো আরও অনেকে নীরবে এ ধরনের কাজ করে যাচ্ছেন। সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উচিত তাঁদের যথাযোগ্য স্বীকৃতি দেওয়া। শহিদুলের লাগানো এই ১ হাজার ৪০০ তালগাছের সারির যেন কেউ ক্ষতি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষার এমন মহৎ উদ্যোগগুলো যেন কেবল একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত সামর্থ্যের ওপর নির্ভর না করে, তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগকে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
শহিদুল ইসলামের তালগাছের সারি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—প্রকৃত দেশপ্রেম কেবল বড় বড় কথার মধ্যে নয়, বরং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের জীবনকে জড়িয়ে দেওয়ার সাধারণ অঙ্গীকারের মধ্যে নিহিত। তাঁর এই উদ্যোগ কেবল বাগমারাকে সবুজ করেনি, বরং দেশজুড়ে হাজারো মানুষের জন্য এক নতুন পথের দিশা দিয়েছে। শহিদুল ইসলামরাই আমাদের অনুপ্রেরণা। পরিবেশসচেতন এমন মহৎপ্রাণ ব্যক্তিকে আমাদের অভিবাদন।