ঘোড়ার দাম ১৫ কোটি রুপি, মহিষের ২৩ কোটি
Published: 29th, October 2025 GMT
ভারতের রাজস্থানে প্রতিবছরই পুসকার গবাদিপশুর মেলা আয়োজন করা হয়। ভারতের সবচেয়ে দামি গবাদিপশু বেচাকেনা হয় এই মেলায়। চলতি বছর মেলায় হাজার হাজার পশু এসেছে। এর মধ্যে ১৫ কোটি রুপি একটি ঘোড়া এবং ২৩ কোটি রুপির মহিষ নজর কেড়েছে ব্যবসায়ী, পর্যটক এবং দেশ-বিদেশ থেকে মেলায় আসা মানুষের।
চণ্ডীগড় থেকে আড়াই বছর বয়সী একটি পুরুষ ঘোড়া নিয়ে এসেছেন গ্যারি গিল। ঘোড়ার নাম শাহবাজ। দাম ১৫ কোটি রুপি। এটিই যে এবারের মেলার প্রধান আকর্ষণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে গ্যারি গিল বলেন, শাহবাজ একটি মর্যাদাশীল বংশের ঘোড়া। এটি বেশ কিছু প্রদর্শনী জিতেছে। মেলায় এ পর্যন্ত ৯ কোটি রুপি দাম উঠেছে ঘোড়াটির। আগতরা মারওয়ারি জাতের ঘোড়াটি এক ঝলক দেখতে ভিড় করছেন।
অন্যদিকে রাজস্থান থেকে আসা আনমোল নামের মহিষটি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। এটির দাম ২৩ কোটি রুপি। আনমোলের মালিক বলেন, এই মহিষকে রাজকীয়ভাবে লালন-পালন করা হয়েছে। প্রতিদিন তাকে দুধ, দেশি ঘি, শুকনো ফলসহ নানা ধরনের বিশেষ খাবার দেওয়া হয়ে থাকে।
উজ্জয়িনী থেকে আসা রানা নামের একটি মহিষের দাম ধরা হয়েছে ২৫ লাখ রুপি। এটির ওজন ৬০০ কেজি, দৈর্ঘ্যে ৮ ফুট এবং লম্বায় ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। মালিক জানান, সাড়ে তিন বছর বয়সী এই মহিষ প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার রুপির খাবার খায়।
মেলার আরেক আকর্ষণ বাদল নামের একটি পুরুষ ঘোড়া। পুসকার মেলায় তৃতীয়বারের মতো আনা হয়েছে এটিকে। দাম উঠেছে ১১ কোটি রুপি পর্যন্ত। কিন্তু মালিক এ দামে বিক্রি করতে রাজি হননি।
রাজস্থানের পশুপালনের ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছর পুসকার মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় গবাদিপশুদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা হয়। ২৩ অক্টোবর শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ৭ নভেম্বর পর্যন্ত। চলতি বছর এ পর্যন্ত মেলায় ৩ হাজার ২১টি পশু অংশ নিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৯ মাস পর খুলছে সেন্টমার্টিন, মানতে হবে ১২ নির্দেশনা
দীর্ঘ নয় মাস পর আগামী সপ্তাহে খুলছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক সেখানে যেতে পারবেন। তবে, এবারো সেখানে রাত্রিযাপনে থাকছে নিষেধাজ্ঞা। শুধু তাই নয়, পর্যটকদের মানতে হবে ১২ নির্দেশনা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, দ্বীপে রাত্রিযাপন বন্ধ থাকলে পর্যটক কমবে, ফলে হোটেল-রেস্তোরাঁ, নৌযান ও দোকানপাটের আয় মারাত্মকভাবে কমে যাবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় গত ২২ অক্টোবর সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে ১২ দফা নির্দেশনা জারি করে। এতে নভেম্বরে শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। ফেব্রুয়ারিতে দ্বীপটি আবারো বন্ধ থাকবে।
নতুন বিধিনিষেধ অনুযায়ী, প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। টিকিট নিতে হবে ট্যুরিজম বোর্ডের অনলাইন পোর্টাল থেকে, যেখানে কিউআর কোড ও ট্রাভেল পাস বাধ্যতামূলক। কেয়াবনে প্রবেশ, সৈকতে বারবিকিউ, আলো-শব্দ সৃষ্টি ও মোটরযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দ্বীপের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এত সীমাবদ্ধতায় পর্যটন নির্ভর জীবিকা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।
সেন্টমার্টিন বাজার সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “সেন্টমার্টিন কক্সবাজার শহর থেকে দূরের পথ। আসতে এবং যেতে দিনের পুরো সময়টা চলে যায়। রাত্রিযাপন ছাড়া পর্যটক আসবে না এখানে। বর্তমানে আমরা ক্ষতির মুখে জীবন অতিবাহিত করছি।”
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, “দ্বীপের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে গেছে। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্রলার, দোকান সবখানেই নেমে এসেছে অচলাবস্থা। স্থানীয় মানুষ পর্যটন নির্ভর জীবিকা চালায়। এখন তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আমরা দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার পক্ষে, তবে জীবিকার দিকটাও যেন সরকার বিবেচনায় নেয় এটাই আমাদের মিনতি।”
কক্সবাজার থেকে জাহাজ যাবে সেন্টমার্টিন:
প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের মধ্যে আট থেকে দশটি জাহাজ চলাচল করে। এবার কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ায় অবস্থিত অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঘাট থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে। আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে উখিয়ার ইনানী জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি মেলেনি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে নীতিগত সম্মতি দিয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়।
পর্যটকবাহী জাহাজগুলোর মধ্যে এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস জাহাজ দুইটি বেশিরভাগ সময় কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পরিচালনা করে।
জাহাজের পরিচালক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, “নভেম্বরের কার্যক্রম এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যদি কোনো জাহাজ সকাল ৭টায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যায়, তা দুপুর ২টার দিকে সেন্টমার্টিনে পৌঁছায়। আমাদের জাহাজের সময় লাগে প্রায় ৭ ঘণ্টা, অন্যগুলোর আরো বেশি সময় লাগে। ফলে একদিনে গিয়ে ফিরে আসা সম্ভব নয়। রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকরাও আগ্রহ দেখান না।”
তিনি আরো বলেন, “পর্যটন বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি, যার ফলে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে মূল মৌসুম শুরু হলে রাত্রিযাপনের সুযোগ তৈরি হবে এবং তখন নিয়মিত ভ্রমণ কার্যক্রম শুরু হতে পারে।”
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “দ্বীপে মোটরযান নিষিদ্ধ ও পর্যটক নিয়ন্ত্রণে কড়া নজরদারি থাকবে। দ্বীপে পর্যটক পরিবহনের জন্য নৌযানগুলোকে অনুমতি নিতে হবে। স্থানীয়দের জন্য অনুমতির দরকার নেই। পরিবেশ রক্ষায় এ পদক্ষেপ জরুরি।”
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ