পরিচালক তুষার গোয়েল নির্মাণ করেছেন ‘দ্য তাজ স্টোরি’। সিনেমাটির মূখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউডের দাপুটে অভিনেতা ও বিজেপি নেতা পরেশ রাওয়াল। আগামী ৩১ অক্টোবর সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা রয়েছে। তার আগেই সিনেমাটির মুক্তির বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। খবর এনডিটিভির। 

এ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দিল্লি হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলাটি (পিআইএল) দায়ের করেছেন অ্যাডভোকেট শাকিল আব্বাসি। এ মামলায় ‘দ্য তাজ স্টোরি’-এর মুক্তির বিরুদ্ধে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা চাওয়া হয়েছে। আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, চলচ্চিত্রটি ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত করেছে এবং তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে। 

আরো পড়ুন:

বিয়ে, সন্তান—সবকিছুই নিয়তির ব্যাপার: সাবা

১৮ বছর পর এক সিনেমায় গোবিন্দ-সালমান?

অ্যাডভোকেট শাকিল আব্বাস বলেন, “দ্য তাজ স্টোরি’ ৩১ অক্টোবর সারাদেশে মুক্তির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। এই চলচ্চিত্র সম্পূর্ণরূপে মনগড়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটি ভারতের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করার একটি পদক্ষেপ।”

মামলার আবেদনে যা বলা হয়েছে
চলচ্চিত্রটির টিজার ও প্রচারমূলক পোস্টার প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, পরেশ রাওয়াল তাজমহলের গম্বুজ খুলছেন, তার ভেতর থেকে ভগবান শিবের মূর্তি বেরিয়ে আসছে। এই উপস্থাপনাগুলো জনমনে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। কেবল তাই নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহাসিক তথ্যের সত্যতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া, সেন্সর বোর্ড (সিবিএফসি), চলচ্চিত্রটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সোয়ারনিম গ্লোবাল সার্ভিস প্রা.

লিমিটেড, প্রযোজক সিএ সুরেশ ঝা, পরিচালক তুষার অমরিশ গোয়েল, চিত্রনাট্যকার সৌরভ এম. পান্ডে, জি মিউজিক কোম্পানি এবং অভিনেতা পরেশ রাওয়ালকে এ মামলায় বিবাদী করা হয়েছে।  

আবেদনকারী শাকিল আব্বাসের দাবি—“বিবাদীরা তাজমহলের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন এবং ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছেন। কিন্তু সিবিএফসি ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ এই চলচ্চিত্রটির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”

কাল্পনিক তত্ত্ব প্রচার করছে
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, চলচ্চিত্রটি তাজমহলের উৎপত্তি নিয়ে প্রচলিত ঐতিহাসিক ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে এবং প্রয়াত ইতিহাসবিদ পি. এন. ওকের প্রচারিত কাল্পনিক বা খণ্ডিত তত্ত্ব প্রচার করছে। গণমাধ্যমে যখন এ ধরনের তথ্য বিশেষ করে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রচার করা হয়, তখন তা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারে এবং স্কলারদের মানদণ্ডের উপরে বিশ্বাস হারাতে পারেন।

আবেদনকারী ভারতের সংবিধানের ৫১এ(ফ) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করেছেন, যা ভারতের সামগ্রিক সংস্কৃতি রক্ষার দায়িত্ব দেয় দেশটির নাগরিকদের। সেই অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে দিল্লি হাইকোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে, সিবিসি যেন ছাড়পত্রের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করে। প্রয়োজনে সতর্কবার্তা বা সীমাবদ্ধতা আরোপ করে, যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট না হয়। এ আবেদনে আরো সতর্ক করা হয়েছে, চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে আগ্রা ও আশেপাশের এলাকায় জনঅস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তাজমহলকে ঘিরে এই ধরনের কল্পিত উপস্থাপনা পর্যটন ও জনশৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। 

মামলার আবেদনে অনুরোধ জানানো হয়েছে, চলচ্চিত্রটিতে ‘অস্বীকৃতি’ যুক্ত করতে নির্মাতাদের বাধ্য করা হোক। যাতে লেখা থাকবে, “দ্য তাজ স্টোরি’ একটি বিতর্কিত কাহিনি, এটি চূড়ান্ত কোনো ঐতিহাসিক বিবরণ নয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন নিশ্চিত করে যে, মুক্তির পর কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটবে না। 

শিল্পকলাকে ধর্মীয় বিদ্বেষের কাজে লাগানোর অপচেষ্টা বলিউডে নতুন নয়। কিছুদিন আগেও ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ নিয়ে হইচইয়ের চেষ্টা ছিল। যদিও তেমন কাজ হয়নি, যেমনটি হয়েছিল ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ বা ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমা নিয়ে। এ রকম পটভূমির মাঝেই আসছে ‘দ্য তাজ স্টোরি’। তবে এ সিনেমার ভেতরে কী আছে, তা নভেম্বরের শুরুর দিকে জানা যাবে।

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘দ্য তাজ স্টোরি’ সিনেমার বিরুদ্ধে মামলা

পরিচালক তুষার গোয়েল নির্মাণ করেছেন ‘দ্য তাজ স্টোরি’। সিনেমাটির মূখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউডের দাপুটে অভিনেতা ও বিজেপি নেতা পরেশ রাওয়াল। আগামী ৩১ অক্টোবর সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা রয়েছে। তার আগেই সিনেমাটির মুক্তির বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। খবর এনডিটিভির। 

এ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দিল্লি হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলাটি (পিআইএল) দায়ের করেছেন অ্যাডভোকেট শাকিল আব্বাসি। এ মামলায় ‘দ্য তাজ স্টোরি’-এর মুক্তির বিরুদ্ধে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা চাওয়া হয়েছে। আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, চলচ্চিত্রটি ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত করেছে এবং তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে। 

আরো পড়ুন:

বিয়ে, সন্তান—সবকিছুই নিয়তির ব্যাপার: সাবা

১৮ বছর পর এক সিনেমায় গোবিন্দ-সালমান?

অ্যাডভোকেট শাকিল আব্বাস বলেন, “দ্য তাজ স্টোরি’ ৩১ অক্টোবর সারাদেশে মুক্তির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। এই চলচ্চিত্র সম্পূর্ণরূপে মনগড়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটি ভারতের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করার একটি পদক্ষেপ।”

মামলার আবেদনে যা বলা হয়েছে
চলচ্চিত্রটির টিজার ও প্রচারমূলক পোস্টার প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, পরেশ রাওয়াল তাজমহলের গম্বুজ খুলছেন, তার ভেতর থেকে ভগবান শিবের মূর্তি বেরিয়ে আসছে। এই উপস্থাপনাগুলো জনমনে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। কেবল তাই নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহাসিক তথ্যের সত্যতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া, সেন্সর বোর্ড (সিবিএফসি), চলচ্চিত্রটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সোয়ারনিম গ্লোবাল সার্ভিস প্রা. লিমিটেড, প্রযোজক সিএ সুরেশ ঝা, পরিচালক তুষার অমরিশ গোয়েল, চিত্রনাট্যকার সৌরভ এম. পান্ডে, জি মিউজিক কোম্পানি এবং অভিনেতা পরেশ রাওয়ালকে এ মামলায় বিবাদী করা হয়েছে।  

আবেদনকারী শাকিল আব্বাসের দাবি—“বিবাদীরা তাজমহলের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন এবং ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছেন। কিন্তু সিবিএফসি ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ এই চলচ্চিত্রটির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”

কাল্পনিক তত্ত্ব প্রচার করছে
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, চলচ্চিত্রটি তাজমহলের উৎপত্তি নিয়ে প্রচলিত ঐতিহাসিক ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে এবং প্রয়াত ইতিহাসবিদ পি. এন. ওকের প্রচারিত কাল্পনিক বা খণ্ডিত তত্ত্ব প্রচার করছে। গণমাধ্যমে যখন এ ধরনের তথ্য বিশেষ করে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রচার করা হয়, তখন তা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারে এবং স্কলারদের মানদণ্ডের উপরে বিশ্বাস হারাতে পারেন।

আবেদনকারী ভারতের সংবিধানের ৫১এ(ফ) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করেছেন, যা ভারতের সামগ্রিক সংস্কৃতি রক্ষার দায়িত্ব দেয় দেশটির নাগরিকদের। সেই অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে দিল্লি হাইকোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে, সিবিসি যেন ছাড়পত্রের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করে। প্রয়োজনে সতর্কবার্তা বা সীমাবদ্ধতা আরোপ করে, যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট না হয়। এ আবেদনে আরো সতর্ক করা হয়েছে, চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে আগ্রা ও আশেপাশের এলাকায় জনঅস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তাজমহলকে ঘিরে এই ধরনের কল্পিত উপস্থাপনা পর্যটন ও জনশৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। 

মামলার আবেদনে অনুরোধ জানানো হয়েছে, চলচ্চিত্রটিতে ‘অস্বীকৃতি’ যুক্ত করতে নির্মাতাদের বাধ্য করা হোক। যাতে লেখা থাকবে, “দ্য তাজ স্টোরি’ একটি বিতর্কিত কাহিনি, এটি চূড়ান্ত কোনো ঐতিহাসিক বিবরণ নয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন নিশ্চিত করে যে, মুক্তির পর কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটবে না। 

শিল্পকলাকে ধর্মীয় বিদ্বেষের কাজে লাগানোর অপচেষ্টা বলিউডে নতুন নয়। কিছুদিন আগেও ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ নিয়ে হইচইয়ের চেষ্টা ছিল। যদিও তেমন কাজ হয়নি, যেমনটি হয়েছিল ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ বা ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমা নিয়ে। এ রকম পটভূমির মাঝেই আসছে ‘দ্য তাজ স্টোরি’। তবে এ সিনেমার ভেতরে কী আছে, তা নভেম্বরের শুরুর দিকে জানা যাবে।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ