রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “এত বড় অভ্যুত্থানকে আমরা জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারছি না। যতই দিন যাচ্ছে আমরা ততই বিভক্ত হয়ে পড়ছি। কারা এই বিভক্তি তৈরি করছেন, সে বিষয়টি আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। অথচ এই সময়টি হলো ঐক্যের সময়।” 

বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহ্সান মাহমুদের লেখা ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন: অন্তর্বর্তী আমলে বাংলাদেশ’ শিরোনামে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সমস্ত সংকটের মূলে রয়েছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেই কারণেই আমরা পাঁচ আগস্টের পর নির্বাচন চেয়েছিলাম। যদিও অনেকে বলেছে, বিএনপি ক্ষমতা চায় বলে নির্বাচন চাইছে। অথচ এই নির্বাচন যত বিলম্ব হচ্ছে তত বেশি ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি সম্মিলিত হচ্ছে।” 

এসময় প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনি জনগণের নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তা সম্পাদন করে একটি নির্বাচন উপহার দেবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে যে পার্লামেন্ট ক্ষমতায় আসবে সে পার্লামেন্ট দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। এর যদি কোন ব্যত্যয় ঘটে, তার দায় কিন্তু আপনাকেই বহন করতে হবে।” 

দীর্ঘকাল ধরে বিএনপি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ দেশের জনগণও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছে। একটা সময় প্রচার করা হলো যে, বিএনপি সংস্কারবিরোধী। অথচ সংস্কারের মাধ্যমেই বিএনপির জন্ম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পরে যে একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছিল, ৭৫ পরবর্তীতে সেই চিত্রের পরিবর্তন নিয়ে আসে বিএনপি।”

তিনি আরও বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়ার যেসব বিষয়ে আমরা ঐকমত্য ছিলাম না, সেসব বিষয় আমরা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। অথচ অবাক হয়ে দেখতে পেলাম গতকাল কমিশন যে ড্রাফট প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে, তাতে সেসব নেই। এটা জনগণ এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রতারণা।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত আরো উপস্থিত ছিলেন, চর্চা ডট কমের সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, লেখক ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নুর প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/ইভা

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

অবৈধ অর্থ উদ্ধারে আইন বাস্তবায়নের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের

পাচার হওয়া ‘অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’ গঠনে প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়নসহ চার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ। ২৯ নভেম্বরের মধ্যে এসব দাবি না মানলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ‘অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’র নেতারা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হবেন এবং নির্বাচিত হয়ে নিজেরাই আইন বানিয়ে নেবেন।

সোমবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে সংগঠন দুটি এই ঘোষণা দেয়। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সভাপতি আবুল বাশার বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরে আবুল বাশার বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য চব্বিশের অভ্যুত্থানের একটা সেরা অর্জন হতে পারে পাচাররোধী আইন। সরকারকে এ লক্ষ্যে সর্বোচ্চ উদ্যোগী হতে হবে।’

পরে তিনি ‘অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’ গঠনে প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়ন, ‘অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’–এর নেতাদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণে কৃষকের মতামত নেওয়া এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা ও সম্পদের ওপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করার দাবি জানান।

এসব দাবিতে ৩১ অক্টোবর দুপুরে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠে রংপুর, ৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে খুলনা, ৮ নভেম্বর সকালে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস মাঠে, ১৩ নভেম্বর দুপুরে চাঁদপুরের বাবুরহাট সরকারি কলেজ মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তা ছাড়া ১৪ নভেম্বর দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরা থানার বিকেনগর হাইস্কুল মাঠেও একটি সমাবেশ এবং ২৯ নভেম্বর সকালে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ করার ঘোষণা দেন আবুল বাশার।

একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতা-কর্মীরা দেশের সবচেয়ে নিরীহ মানুষ। তাঁদের দাবিও খুব যৌক্তিক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো হাসিনা সরকার যেমন অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতাদের হামলা-মামলা করে নাজেহাল করেছিল, এই সরকারের আমলেও তাঁরা হামলা–মামলার শিকার হয়েছেন। সরকার ভুল বুঝতে পেরে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের জামিনের সুযোগ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতেও অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের কর্মসূচি যেন নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে করা সম্ভব হয়, সেটা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।

চার দফা দাবি পূরণ না হলে অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতারা নিজেরাই সংসদ সদস্য পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দেবেন উল্লেখ করে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, সরকারকে আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের চার দফা দাবি পূরণের আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচনে অহিংস গণ-অভ্যুত্থানের নেতারা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দেবেন। নির্বাচিত হয়ে তাঁরা নিজেরা নিজেদের দাবি অনুযায়ী আইন বানাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইন উপদেষ্টার ওপর জনগণের আস্থা নেই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • বিএনপি–জামায়াত বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নির্বাচন করতে চাচ্ছে, দাবি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
  • তাইওয়ানের রোল মডে ইসরায়েল: প্রেসিডেন্ট লাই চিং
  • ধর্মকে বিকৃত করে নির্বাচন বানচাল জনগণ মানবে না: ফারুক
  • উন্নয়নের বয়ান ও মেগা প্রকল্পের রাজনীতি
  • ‘শেখ হাসিনার কাঠামোয় নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না’
  • কোটি টাকার অব্যবহৃত যানে গজিয়েছে গাছ 
  • দল যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাদের ভোট চাওয়ার দরকার নেই: ফরিদ আহমেদ
  • অবৈধ অর্থ উদ্ধারে আইন বাস্তবায়নের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের