তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
Published: 11th, December 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে দলটির আমির মাওলানা মামুনুল হক ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘‘আমরা আশাকরি, তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ নির্বাচনের পথ সুগম হবে।’’
তারা বলেন, ‘‘নির্বাচন যেন প্রকৃত অর্থে জনগণের ভোটাধিকার ও মতামত প্রতিফলিত করতে পারে তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সে লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই। লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত না হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয় না। তাই সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সকল প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ, অবাধ প্রচারণার স্বাধীনতা এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানাই।’’
নেতারা দাবি করেন, নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব, পেশিশক্তির প্রদর্শন, প্রশাসনিক প্রভাব ও জবরদস্তিমূলক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। ভোটার, নির্বাচনী এজেন্ট এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। জনগণ যেন ভয়-ভীতি ছাড়াই স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন—প্রত্যাশা দলটির।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই: হাসনাত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, "আমরা অবশ্যই ক্ষমতায় যেতে চাই, তবে সেটি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। কোনো আনহোলি নেক্সাসকে ম্যানেজ করে, কোনো নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ক্ষমতায় যেতে চাই না। জনগণ আমাদের ম্যান্ডেট দিলে, জনগণ যদি মনে করে আমরা যোগ্য, তাহলেই আমরা যেতে চাই।"
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২ এ ‘আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়’ সাক্ষ্য দিতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
‘আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি’
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন নয়, হুঁশিয়ারি হাসনাতের
এ সময় তিনি বলেন, "কোনো মিডিয়াকে, বুরোক্রেসিকে বা মিলিটারিকে নিয়ন্ত্রণ করে নয়, এবং পাশের দেশ ভারতের কনসেন্ট নিয়ে আমরা কোনো ক্ষমতায় যেতে চাই না।"
ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে আসার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, "তিনি মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরছিলেন। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কীভাবে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়, সেটিই বর্ণনা করেছেন। কীভাবে মিডিয়ার সামনে তাদের বক্তব্য বিকৃত করা হয় এবং ‘নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের’ মাধ্যমে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বক্তব্যের খণ্ডিতাংশ ও আংশিক প্রচার করে ‘আন্দোলন প্রত্যাহারের নাটক’ মঞ্চস্থ করেছিল, সে বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন।
হাসনাত বলেন, “১৪ জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের নাতিপুতি এবং রাজাকারের বাচ্চা’ বলে সম্বোধন করার পর দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন। এর প্রতিবাদে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর ‘নির্মমভাবে নির্যাতন ও নিপীড়ন’ চালায়। ১৬ জুলাই সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ মিছিলে রংপুরে আবু সাঈদকে ক্যাম্পাস কম্পাউন্ডে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং চট্টগ্রামে ছাত্রদলের ওয়াসিমকেও হত্যা করা হয়। সেদিন সারা দেশে মোট ৬ জন শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।”
তিনি বলেন, “১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজা দিতে গেলে এজেন্সির চাপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসাজশ এবং ইউজিসির নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। গায়েবানা জানাজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশ, বিজিবি ও অন্যান্য সদস্য সমন্বিতভাবে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।”
এরপর তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মিটিং করার জন্য চাপ দেওয়া হয়, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, “ব্যর্থ হয়ে সেদিন রাতেই আমাকে ‘সেফ হাউজে’ (মৎস্যভবন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মাঝামাঝি) নিয়ে গিয়ে সারারাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং চাপ প্রয়োগ করা হয়। সেদিন সকালে এসে এজেন্সির একজন আমাদের হুমকি দেয় যে আমরা যেন মিটিং করে সারা দেশের সমন্বয়কদের বলি যে আমরা আন্দোলন স্থগিত করি। তাহলে আমাদের লাইফ সেটেল করে দেবে, বিদেশেও আমাদের লাইফ সেটেল করে দেবে।”
এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, “আমরা সেখানে বলেছিলাম রক্ত মাড়িয়ে কোনো সংলাপ নয়। শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা কোনো সংলাপ করতে পারি না। এবং আমরা বলেছিলাম শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কিন্তু কোনো গণমাধ্যম সেটি সেদিন প্রচার করেনি।”
ঢাকা/রায়হান/এসবি