সুদের হার না কমালে বিনিয়োগ বাড়বে না
Published: 29th, October 2025 GMT
মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি কতটা কাজে আসছে, তা পর্যালোচনা করার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদেরা। একই সঙ্গে সুদের হার কিছুটা না কমালে বিনিয়োগ বাড়বে না বলে মনে করেন তাঁরা। যদিও কেউ কেউ মনে করছেন সংকোচনমূলক নীতি আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখতে হবে।
আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত মাসিক ‘সামষ্টিক অর্থনীতি বিশ্লেষণ’ সেমিনারে এসব কথা বলেন দেশের অর্থনীতিবিদেরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য মনজুর হোসেন। সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্ট মাসের সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিনিয়োগ কিছুটা কম হওয়ায় প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে। তবে এটাকে ধস বলা যাবে না। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের কম হবে। তবে প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি ১৭ মাস পর দুই অঙ্কের ঘরে উঠেছে। তবে জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ মাত্র ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এটা লজ্জার পিরামিড। নেপালেও এই অনুপাত ১৬ শতাংশের বেশি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিইডি সদস্য মনজুর হোসেন বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে উচ্চ সুদের হার কতটা ভূমিকা রাখছে, সেটা নিয়ে পর্যালোচনা হওয়া দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি আরও কিছুদিন চলতে পারে। তবে কিছুটা ছাড় দেওয়া না হলে বিনিয়োগ বাড়বে না। পর্যালোচনা করা না হলে বোঝা যাবে না, এভাবে আর কত দিন চালিয়ে নেওয়া যাবে। নয়তো মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে। কিন্তু তত দিন কি আমাদের অর্থনীতি এই চাপ বহন করতে পারবে? এ সময় তিনি পিআরআইয়ের পর্যালোচনা মধ্যে সমালোচনমূলক তেমন কিছু নেই আখ্যা দিয়ে বলেন, এটা অনেকটা সরকারি প্রতিবেদনের মতো লাগছে।
পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অনেকটা কষ্টদায়ক। মূল্যস্ফীতির ব্যথা অনুভব করতে হয়। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমালে তা দরিদ্র মানুষের উপকার হয়। যুক্তরাষ্ট্র একসময় মূল্যস্ফীতি কমাতে গিয়ে প্রায় মন্দা ডেকে নিয়ে এসেছিল। সুদের হার হয়েছিল ২০ শতাংশ এবং তা ৩-৪ বছর লেগেছিল মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশে নামাতে। দেশে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সুদের হার বাড়ায় ব্যবসায় ধস নেমেছে। সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলা হয়, কিন্তু এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। সুদহার বাড়িয়ে সরবরাহ বাড়ানো কীভাবে সম্ভব?
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাবে বিগত সময়ে অলিগার্ক শ্রেণি তৈরি হয়, তাতে অর্থনীতিতে ধস নেমেছিল। তাই ব্যাংকিং সুশাসন কোনো বিকল্প নেই, একান্ত অপরিহার্য।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ, মেঘনা গ্রুপের পরিচালক তানজিমা মোস্তফা, পিআরআইয়ের গবেষণা পরিচালক বজলুল হক খন্দকার প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুদের হার না কমালে বিনিয়োগ বাড়বে না
মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি কতটা কাজে আসছে, তা পর্যালোচনা করার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদেরা। একই সঙ্গে সুদের হার কিছুটা না কমালে বিনিয়োগ বাড়বে না বলে মনে করেন তাঁরা। যদিও কেউ কেউ মনে করছেন সংকোচনমূলক নীতি আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখতে হবে।
আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত মাসিক ‘সামষ্টিক অর্থনীতি বিশ্লেষণ’ সেমিনারে এসব কথা বলেন দেশের অর্থনীতিবিদেরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য মনজুর হোসেন। সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্ট মাসের সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিনিয়োগ কিছুটা কম হওয়ায় প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে। তবে এটাকে ধস বলা যাবে না। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের কম হবে। তবে প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি ১৭ মাস পর দুই অঙ্কের ঘরে উঠেছে। তবে জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ মাত্র ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এটা লজ্জার পিরামিড। নেপালেও এই অনুপাত ১৬ শতাংশের বেশি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিইডি সদস্য মনজুর হোসেন বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে উচ্চ সুদের হার কতটা ভূমিকা রাখছে, সেটা নিয়ে পর্যালোচনা হওয়া দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি আরও কিছুদিন চলতে পারে। তবে কিছুটা ছাড় দেওয়া না হলে বিনিয়োগ বাড়বে না। পর্যালোচনা করা না হলে বোঝা যাবে না, এভাবে আর কত দিন চালিয়ে নেওয়া যাবে। নয়তো মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে। কিন্তু তত দিন কি আমাদের অর্থনীতি এই চাপ বহন করতে পারবে? এ সময় তিনি পিআরআইয়ের পর্যালোচনা মধ্যে সমালোচনমূলক তেমন কিছু নেই আখ্যা দিয়ে বলেন, এটা অনেকটা সরকারি প্রতিবেদনের মতো লাগছে।
পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অনেকটা কষ্টদায়ক। মূল্যস্ফীতির ব্যথা অনুভব করতে হয়। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমালে তা দরিদ্র মানুষের উপকার হয়। যুক্তরাষ্ট্র একসময় মূল্যস্ফীতি কমাতে গিয়ে প্রায় মন্দা ডেকে নিয়ে এসেছিল। সুদের হার হয়েছিল ২০ শতাংশ এবং তা ৩-৪ বছর লেগেছিল মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশে নামাতে। দেশে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সুদের হার বাড়ায় ব্যবসায় ধস নেমেছে। সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলা হয়, কিন্তু এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। সুদহার বাড়িয়ে সরবরাহ বাড়ানো কীভাবে সম্ভব?
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাবে বিগত সময়ে অলিগার্ক শ্রেণি তৈরি হয়, তাতে অর্থনীতিতে ধস নেমেছিল। তাই ব্যাংকিং সুশাসন কোনো বিকল্প নেই, একান্ত অপরিহার্য।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ, মেঘনা গ্রুপের পরিচালক তানজিমা মোস্তফা, পিআরআইয়ের গবেষণা পরিচালক বজলুল হক খন্দকার প্রমুখ।