সারের সংকট নেই, ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন নীতিমালা: কৃষি উপদেষ্টা
Published: 29th, October 2025 GMT
বর্তমানে দেশে সারের কোনো সংকট নেই এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই ‘সার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংযোগের দাবিতে সমাবেশ
নোয়াখালীতে ৩০০ বস্তা ইউরিয়া সার জব্দ
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “নীতিমালাটি ইতোমধ্যে প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং জাতীয় পর্যায়ের সভা সম্পন্ন হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই এটি অনুমোদিত হওয়ার আশা করা যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “দেশে সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং এর দামে কোনো পরিবর্তন আসছে না; বরং দাম নিম্নমুখী। তবে ইউরিয়া সারের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে কৃষকদের বিরত থাকতে হবে। কারণ এটি জমির ক্ষতি করে এবং ফলন বাড়ায় না।”
নতুন নীতিমালার উদ্দেশ্য সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, “এর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন ও অপ্রয়োজনীয় লাইসেন্সপ্রাপ্তদের সমস্যা সমাধান করা হবে। এখন থেকে একটি লাইসেন্সেই ডিলাররা সব ধরনের সার বিক্রি করতে পারবেন এবং নতুন লাইসেন্স প্রদানের জন্য একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হবে।”
গ্যাসের দাম বাড়লেও কৃষক পর্যায়ে সারের মূল্য অপরিবর্তিত থাকবে, কারণ সরকার এর পার্থক্য ভর্তুকির মাধ্যমে বহন করবে বলে জানান তিনি। ।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, “গত মৌসুমে আমন ও বোরোর উৎপাদন লক্ষ্য ছাড়িয়েছে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমনের বাম্পার ফলন হবে।”
কৃষি উপদেষ্টা আরো বলেন, “আলুর বাম্পার উৎপাদন হলেও কৃষকরা ন্যায্য দাম পাননি, ফলে তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। একইভাবে, পেঁয়াজ উৎপাদন ভালো হলেও দাম কমে গেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের দাম ৭০-৮০ টাকার মধ্যে রয়েছে, যা সহনীয় পর্যায়।”
শীতকালীন সবজি বাজারে আসা শুরু হয়েছে এবং উৎপাদনও ভালো। ফলে সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমে আসবে। ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ২৫ বছরের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে বলেও জানান কৃষি উপদেষ্টা।
কৃষিজমি রক্ষায় আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কিছু ফসলি জমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হবে। কৃষকদের সহায়তায় ‘খামারি অ্যাপ’ চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তারা জানতে পারবেন জমিতে কোন ফসল সবচেয়ে উপযোগী এবং কী পরিমাণ সার প্রয়োজন।”
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট উপদ ষ ট পর য য়
এছাড়াও পড়ুন:
বাবার কবরে শায়িত বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান
বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ড. রেজাউর রহমান। গতকাল বুধবার তাঁকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদ কমপ্লেক্স কবরস্থানে বাবা ফজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর এই মসজিদে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়।
ধানমন্ডির ১২/এ সড়কের তাকওয়া মসজিদে বাদ জোহর রেজাউর রহমানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখানে মসজিদের মুসল্লিরা ছাড়াও মরহুমের আত্মীয়, সুহৃদ, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী, স্কুল–কলেজের সতীর্থদের অনেকে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পরে দাফনেও অংশ নিয়েছেন। জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিল্পী রফিকুন নবী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, শিল্পী আবুল বার্ক্ আলভী, মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান, লেখক আনিসুল হকসহ কবি, শিল্পী, চিকিৎসকদের অনেকে।
প্রথম জানাজার পরে শেষবারের মতো রেজাউর রহমানের মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে আনা হয়। এখানে পরিবারের সদস্য, বিশেষত নারী আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে আসেন। বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর দাফনের জন্য মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদে আনা হয়।
রেজাউর রহমান ৮১ বছর বয়সে ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
আরও পড়ুনরেজাউর রহমানের চলে যাওয়া শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়…২৭ অক্টোবর ২০২৫ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ও সদাচারী ছিলেন রেজাউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস-প্রাগ থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। পেশাগত জীবনে কীটপতঙ্গ নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন তিনি।
পেশাগতভাবে বিজ্ঞানী হলেও লেখক
হিসেবে রেজাউর রহমান বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট স্থানে। বিজ্ঞানে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্যচর্চা ও বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন রেজাউর রহমান।
আরও পড়ুনগ্রহান্তরে ভালো থাকবেন ড. রেজাউর রহমান২৮ অক্টোবর ২০২৫