ভোটে উপদেষ্টাদের প্রার্থী হওয়ার পথ বন্ধ করতে হবে: গণঅধিকার পরিষদ
Published: 29th, October 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টা যাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, এমন বিধান করার দাবি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
আজ বুধবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করে এই দাবি জানিয়ে আসে দলটি। আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে এটিসহ ৯টি প্রস্তাব তারা সিইসিকে দিয়েছে। অন্য প্রস্তাবগুলো হলো আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোট প্রদান নিশ্চিত করা; রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি–সংশ্লিষ্টদের রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসারসহ নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে না রাখা; প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা এবং কেন্দ্রের বাইরে বড় পর্দায় জনসাধারণের জন্য কেন্দ্রের ভেতরের ভোট কার্যক্রম ও ভোট গণনা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা; রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যালট বাক্স উপজেলাতে পাঠানোর সময় ও ভোটকেন্দ্র থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আসা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক প্রার্থীদের এজেন্টদের সঙ্গে রাখা; ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের অভিযোগ থাকলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা; কোনো প্রার্থীর সমর্থকেরা অন্য প্রার্থীর সমর্থকদের নির্বাচনী কাজে বাধা প্রদান, ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; বিগত তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব প্রদান থেকে বিরত রাখা এবং তফসিলের পর প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর। এ ছাড়া ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান, নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আশরাফুল রায়হান এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন ইউসুফ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদের কমিটি ঘোষণার তিন দিন পর সভাপতিসহ ৫৯ জনের পদত্যাগ
গোপালগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদের জেলা কমিটি ঘোষণার তিন দিন পর সভাপতিসহ ৫৯ নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার সংগঠনের সভাপতি আল আমিন সরদার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ২৪ অক্টোবর ৭৯ সদস্যের গণঅধিকার পরিষদের গোপালগঞ্জ জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে বিভাগীয় উপকমিটির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি এবং সাবেক যুবলীগ নেতা ও মাঠে না থাকা ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে আজ দুপুরে আল আমিন সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নবগঠিত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে যাঁকে রাখা হয়েছে, তিনি কখনোই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না এবং এখনো নেই। এ ছাড়া টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের এক সদস্যকে কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি পদে রাখা হয়েছে। এতে কমিটিতে থাকা নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যার ফলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এতে মনোক্ষুণ্ন হয়ে আমিসহ ৫৯ সদস্য পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। মূলত এখানে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি করেছে বিভাগীয় উপকমিটি।’
আল আমিন সরদার জানান, গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় কমিটির ই-মেইলে সবাই পৃথকভাবে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) গোপালগঞ্জ জেলার নবঘোষিত কমিটি গঠনের পর থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নতুন কমিটির সভাপতি আল আমিন সরদার, সাংগঠনিক কে এম নাজমুল ইসলামসহ ৫৯ জন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। পদত্যাগকারী ব্যক্তিদের অভিযোগ, নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় দলের মূলনীতি, যোগ্যতা ও মাঠপর্যায়ের ত্যাগ-তিতিক্ষা কোনোভাবে বিবেচনা করা হয়নি। অনেক পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা–কর্মীকে বঞ্চিত করে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ও পক্ষপাতের মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা গণঅধিকার পরিষদের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা সব সময় দলের প্রতি অনুগত থেকেছি, কিন্তু যে কমিটিতে আস্থা ও ন্যায়বিচার নেই, সেখানে থেকে কোনো দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। তাই আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের পদ থেকে পদত্যাগ করছি। তবে আমরা গণঅধিকার পরিষদের মূল আদর্শ, নীতি ও গণমানুষের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।’