দেশের নৌপথ সংরক্ষণ ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

মাছ রক্ষার জন্য মা মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে: মৎস্য উপদেষ্টা

অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জরুরি ও সমন্বিত কার্যক্রম শুরু

বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “ইলিশসহ দেশীয় মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে নদীর নাব্যতা রক্ষা অত্যন্ত জরুরি। ডুবোচর ও অতিরিক্ত পলির কারণে মাছের প্রজনন ব্যাহত হয়।”

তিনি বলেন, “ইলিশ ও জাটকা ধরার নিষিদ্ধ সময় মূলত ইলিশের প্রজননকাল, এ সময়ে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালিত হলে তা মাছের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। পাশাপাশি নদী দূষণও মাছের উৎপাদন হ্রাসের অন্যতম কারণ। এসব সমস্যা সমাধানে নৌপরিবহন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে।”

জবাবে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ ও রপ্তানিযোগ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। তাই ইলিশ মাছের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও পরিচর্যায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।”

তিনি বলেন, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে ইলিশের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। একইসঙ্গে ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণের নিষিদ্ধ সময়সূচি আগে থেকেই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হলে সে সময় ড্রেজিং কার্যক্রম স্থগিত রাখা সম্ভব হবে।”

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রেখে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে দুই মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যৌথভাবে সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

এছাড়া মৎস্য খাতে নিয়োজিত অস্থায়ী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র প রজনন উপদ ষ ট পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ যাবে সেন্টমার্টিন

কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ। আইনগত বিধিনিষেধ থাকায় কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী বিচ থেকে পর্যটনবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিন যাওয়ার সুযোগ নেই।

সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে নীতিগত সম্মতি দিয়ে পাঠানো চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে পাঁচটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করেছে। ইসিএ এলাকায় কক্সবাজার পৌরসভা (রাজস্ব বিভাগের রেকর্ড করা সমুদ্র সৈকত বা বালুচর বা খাড়ি বা বন বা জলাভূমি) এবং ইনানী মৌজা ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০)-এর ৫(৪) ধারা অনুযায়ী, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন বলে ঘোষণা করা এলাকায় কোনো ক্ষতিকর ‘কর্ম বা প্রক্রিয়া’ চালু রাখা বা শুরু করা যাবে না।

চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগের নিয়মেই কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ।

উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত ১২টি নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

সেই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিআইডব্লিউটিএ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্ট মার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না। দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।

সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি ও বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়াবনে প্রবেশ; কেওড়া ফল সংগ্রহ বা কেনা-বেচা; সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজ কাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা যাবে না। এ ছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল ও সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

সেন্টমার্টিনে নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক—যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিকের চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনি প্যাক, ৫০০ মিলিলিটার ও এক লিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। একই সঙ্গে পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদীর বালু লুট বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে এনসিপির মানববন্ধন
  • পাখি তাড়াতে কত কী করা হলো, তবু তারা এলাকা ছাড়েনি
  • আরিচা-খয়েরচর নৌরুট ‘সম্ভাবনার দুয়ার’
  • ‘চায়না দুয়ারি’ নিষিদ্ধ করুন
  • কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ যাবে সেন্টমার্টিন
  • সোলার ফেজ-২–এর উদ্বোধন: সৌরশক্তিনির্ভর সেচে খরচ ৩০ শতাংশ কমে