‘নৌপথ ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় যৌথ উদ্যোগে কাজ করবে নৌপরিবহন ও মৎস্য মন্ত্রণালয়’
Published: 29th, October 2025 GMT
দেশের নৌপথ সংরক্ষণ ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
মাছ রক্ষার জন্য মা মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে: মৎস্য উপদেষ্টা
অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জরুরি ও সমন্বিত কার্যক্রম শুরু
বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “ইলিশসহ দেশীয় মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে নদীর নাব্যতা রক্ষা অত্যন্ত জরুরি। ডুবোচর ও অতিরিক্ত পলির কারণে মাছের প্রজনন ব্যাহত হয়।”
তিনি বলেন, “ইলিশ ও জাটকা ধরার নিষিদ্ধ সময় মূলত ইলিশের প্রজননকাল, এ সময়ে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালিত হলে তা মাছের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। পাশাপাশি নদী দূষণও মাছের উৎপাদন হ্রাসের অন্যতম কারণ। এসব সমস্যা সমাধানে নৌপরিবহন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে।”
জবাবে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
তিনি বলেন, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে ইলিশের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। একইসঙ্গে ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণের নিষিদ্ধ সময়সূচি আগে থেকেই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হলে সে সময় ড্রেজিং কার্যক্রম স্থগিত রাখা সম্ভব হবে।”
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রেখে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে দুই মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যৌথভাবে সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
এছাড়া মৎস্য খাতে নিয়োজিত অস্থায়ী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র প রজনন উপদ ষ ট পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজার বিমানবন্দরের নির্মাণাধীন লাইটিং জেটি উচ্ছেদের সুপারিশ বিআইডব্লিউটিএর
কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সমুদ্রবক্ষে নির্মাণাধীন লাইটিং জেটিসহ অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) গঠিত তদন্ত কমিটি।
গতকাল বুধবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব বরাবর পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদন লাইটিং জেটি উচ্ছেদসহ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ মোস্তফা। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন বিআইডব্লিউটিএর একজন কর্মকর্তা।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কক্সবাজার বিমান বন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের আওতায় মহেশখালী চ্যানেলের অভ্যন্তরে জেটি ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। তাতে নৌ চ্যানেলের ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩০ টাকা। তদন্ত কমিটি সম্প্রতি সরেজমিন অনুসন্ধান করে এই ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে। ক্ষতির এই টাকা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণের কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে চারটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো, মহেশখালী সাগর চ্যানেলে পাইলিং করে বিমান অবতরণে সহায়ক কাঠামো (লাইটিং জেটি) অপসারণের জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) চিঠি দেওয়া। মহেশখালী চ্যানেলে রানওয়ে সম্প্রসারণের ফলে চ্যানেল ও সংলগ্ন নৌপথে ভবিষ্যতে কী প্রভাব পড়বে—তার জন্য বেবিচকের অর্থায়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমীক্ষা করা, বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজে মালামাল পরিবহনের জন্য ভূমি ব্যবহার, অস্থায়ী জেটি নির্মাণ ইত্যাদি বাবদ বেবিচক হতে বিআইডব্লিউটিএর অনুকূলে ৪ কোটি ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩০ টাকা বকেয়া রাজস্ব আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ এবং মহেশখালী চ্যানেল রক্ষার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ইউনুস ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি টাকায় রানওয়েসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে। উচ্ছেদ করতে হলে সরকার করবে। আর ক্ষতিপূরণের টাকাও দেবে সরকার। সে ক্ষেত্রে তাঁর করার কিছু নেই।
ইউনুস ভূঁইয়া বলেন, প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে সমুদ্রের তলদেশ ভরাট করে ১ হাজার ৭০০ ফুট লম্বা রানওয়ে নির্মাণ হয়েছে। এখন রানওয়ের শেষপ্রান্তে (মহেশখালী সাগর চ্যানেলে) আরও এক কিলোমিটার ‘লাইট ব্রিজ’ জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। বাতি দেখে রানওয়েতে বিমানের উড্ডয়ন-অবতরণ ঘটবে। বর্তমানে রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের ৮৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিরক্ষা বাঁধ, সীমানাপ্রাচীরসহ অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে আরও ১৫-২০ দিন সময় লাগতে পারে।
বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঝিনুক আকৃতির দৃষ্টিনন্দন আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ২৭৭ কোটি টাকা। গত ১২ অক্টোবর কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ১২ দিনে মাথায় সেই ঘোষণা বাতিল করা হয়।