ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু, সরকারের উদাসীনতাই দায়ী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
Published: 29th, October 2025 GMT
চলতি অক্টোবর মাসের সাত দিন বাকি থাকতেই ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছিল। আর আজ বুধবার এ মাসের দুই দিন বাকি থাকতে ডেঙ্গুতে এক মাসে বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু হলো।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত) দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে এডিস মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ পর্যন্ত ৯৬৪ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৮৪ জন। এ সময় দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯০। ঢাকার বাইরে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৬৮ হাজার ৪২৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৩১২ জন।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। গত মাসে ডেঙ্গুতে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। অক্টোবরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ২১ হাজার ৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গুতে এ মৃত্যু রোধ করতে সরকারি স্তরে যথেষ্ট ঘাটতি আছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ হলো না। সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু হলে পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েই দায় সারা হলো। কিন্তু এ পরীক্ষা মানুষ কোথায় করবে, কোথায় গিয়ে স্বল্প খরচে করতে পারবে, তার বন্দোবস্তও হলো না। এটা নিঃসন্দেহে একটা ব্যর্থতা।
২০০০ সালে ঢাকায় বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। ওই বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখের বেশি মানুষ। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার বিস্তারে ঘন ঘন বৃষ্টির ভূমিকা আছে। এ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বৃষ্টি কমলেও ভারতে আছড়ে পরা ঘূর্ণিঝড় ‘মান্থা’র কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। আরও দুয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে বিচ্ছিন্নভাবে। আবার নভেম্বরের ৬ তারিখের দিকে আবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সবকিছু মিলিয়ে নভেম্বর এডিসের বংশবৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধ হবে না বলেই মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ বে–নজীর আহমদ। তিনি বলেন, বৃষ্টির পর অন্তত এক মাস এডিসের প্রকোপ বাড়তে পারে। আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসেও প্রকোপ রয়ে যেতে পারে। আসলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের কোনো দৃশ্যমান তৎপরতাই দেখলাম না। বিদ্যমান যে ব্যবস্থা ছিল, তা–ও নষ্ট হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হয় ছ ন র প রক হয় ছ ল প রক প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্র কিংবা ছুরি নয়, ‘অভিনব’ কায়দায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাই
চট্টগ্রামে ‘অভিনব’ কায়দায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্র কিংবা ছুরি নয়, যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারীরা বমির কথা বলে নির্জন জায়গায় গাড়ি থামিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আনিছুল ইসলাম আজ রোববার দুপুরে চান্দগাঁও থানায় মামলা করার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। আনিছুল ইসলাম নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট।
আনিছুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে প্রতিদিনের মতো নগরের চান্দগাঁও এলাকায় বাসায় যাওয়ার জন্য বহদ্দারহাট মোড়ে দাঁড়ান। ওই সময় গাড়িতে ওঠার জন্য লোকজনের ভিড় ছিল। ফলে বাসে উঠতে পারেননি। তখন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চান্দগাঁও সিঅ্যান্ডবি মোড় যাবে বলে যাত্রী ডাকতে থাকে। অটোরিকশার পেছনে দুজন এবং চালকও তাঁর পাশে এক যাত্রী ছিলেন। পেছনের আসনে ওঠেন আনিছুল ইসলাম।
অটোরিকশাটি বহদ্দারহাট মোড় থেকে বাস টার্মিনালের সামনে জিয়া কমপ্লেক্সের সামনে পৌঁছালে যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারীদের একজন বমি করবেন বলে জানান। ওই সময় চালক গাড়ি থামিয়ে ফেলেন কিছুটা নির্জন এলাকায়। বমির কথা বলা যাত্রী নামার জন্য আনিছুলসহ আরেক যাত্রী অটোরিকশা থেকে নামেন। তখনই আনিছুলের হাতে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত অটোরিকশা করে চলে যান তাঁরা।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই করছি। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’