বনবিভাগের অবমুক্তির পর পটুয়াখালীর বাউফলের সেই বকটি আবারো ফিরে এসেছে তার প্রিয় সঙ্গী হেমায়েতের কাছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বকটি বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের নুরাইনপুর বাজারের হেমায়েতের স্টেশনারির দোকানে ফিরে আসে।

এর আগে, গত ২৭ অক্টোবর বন বিভাগের কর্মকর্তারা নুরাইনপুর বাজার এলাকার হেমায়েতের কাছ থেকে নিয়ে বকটি ওই এলাকার ‘বগের বাড়ি’ নামে পরিচিত গাছে অবমুক্ত করেছিলেন। কিন্তু অবমুক্তির পর থেকেই বকটি কিছু না খেয়ে নিরব ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ মাস আগে ঝড়ের সময় স্থানীয়ভাবে ‘বকের বাড়ি’ নামে পরিচিত নুরাইনপুর বাজার সংলগ্ন খানবাড়ির একটি গাছ থেকে বকের ছানাটি পড়ে যায়। তখন একটি গুইসাপ ছানাটিকে আক্রমণ করলে স্থানীয় ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন এগিয়ে এসে উদ্ধার করেন। 

এরপর তিনি নিজের সন্তানের মতো পরিচর্যা করে বকের ছানাটিকে সুস্থ করে তোলেন। সেই থেকেই বকটি হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে দোকানে বসবাস করছিল। দোকানদারের সঙ্গে বকের এমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। পরে বকটি অবমুক্ত করার পর আবার ফিরে আসে।

স্থানীয়রা বকটি ফের হেমায়েতের দোকানে দেখে বিষ্মিত হন। এ ঘনায় মানুষের প্রতি প্রাণীদের ভালোবাসার এক বিরর দৃষ্টান্ত ফুটে উঠেছে বলে মনে করছেন তারা।

হেমায়েত উদ্দিন বলেন, “আমি মনে করেছিলাম বকটি আর ফিরবে না। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমার সঙ্গীটা আবার ফিরে এসেছে। আমি খুব চিন্তায় ছিলাম, ভেবেছিলাম না খেতে পেরে হয়ত মরেই যাবে। আমি সন্তানের মতো বকটিকে লালন-পালন করেছি। বকটি আমার যত্ন এবং ভালোবাসা ভুলে যায়নি।”

বাউফল উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্চ কর্মকর্তা বদিউজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, “আপনারা দয়া করে আর নিউজ করবেন না। নিউজ করলে বকটির ক্ষতি হতে পারে। আপনারা জানেন, আমরাও জানি এতটুকুই থাক। যত বেশি নিউজ হবে, তত বেশি চাপ আসবে বকটিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আর এতে শেষ পর্যন্ত বকটিই মারা যেতে পারে। ওর মতো করে ওকে থাকতে দিন, আমরা ওদিকে আর নজর দেব না।”

তিনি আরো বলেন, “গতকাল (মঙ্গলবার) সরাসরি উপদেষ্টার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আপাতত যেহেতু বকটি কোথাও যাচ্ছে না, বাইরে থেকে খাবারও খাচ্ছে না, তাই ওকে হেমায়েতের কাছেই থাকতে দিন। ওর কাছে লালিত-পালিত হোক। ভবিষ্যতে বড় হলে এমনিতেই উড়ে চলে যাবে।”

ঢাকা/ইমরান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবম ক ত

এছাড়াও পড়ুন:

রিকশার গ্যারেজে তৈরি হচ্ছিল নকল ‘ডেটল’ সাবান

বাইরে থেকে দেখতে রিকশার গ্যারেজ। তবে এর আড়ালে সেখানে চলছিল নকল সাবান তৈরির কাজ। রাত হলেই সেখানে ডেটল, সলিড, লিফোর্ডসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের ছাঁচ ও মোড়ক নকল করে এসব সাবান তৈরি হতো। আজ রোববার দুপুরে অভিযান চালিয়ে নকল সাবান তৈরির কারখানাটি সিলগালা করে নকল সাবান জব্দ করা হয়।

আজ দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ইউনুছ মার্কেট এলাকায় ওই কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু হাসান এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিদর্শক আবদুর রহিম। অভিযানে র‍্যাব-৭–এর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

র‍্যাব জানায়, সরকারি অনুমোদন ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে একটি কারখানায় অবৈধভাবে সাবান উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছিল। কারখানাটি ইউনিয়ন পরিষদের একটি ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করলেও বিএসটিআইয়ের অনুমোদন বা মান নিয়ন্ত্রণ সনদ ছিল না। সেখানে ডেটল সাবান তৈরির ছাঁচ ও মোড়ক পাওয়া গেছে। হুবহু নকল এসব মোড়কে ভুল তথ্য দিয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হতো। কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে।

র‌্যাব-৭–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, রিকশার গ্যারেজের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যক্তি এখানে নকল সাবান তৈরি করছে; এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় র‍্যাব-৭। এসব নকল সাবানে বিভিন্ন নামী কোম্পানির লোগো ব্যবহার করে বাজারজাত করা হচ্ছিল। এসব সাবানে যেসব রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলোর কোনো অনুমোদন নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ