প্লট বরাদ্দের শর্ত ভঙ্গ, ভবন না করে ঋণ নেয় এস আলমের প্রতিষ্ঠান
Published: 29th, October 2025 GMT
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্লট বরাদ্দ দেওয়ার সময় শর্ত দিয়েছিল, দুই বছরের মধ্যে বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করতে হবে। কিন্তু ২০ থেকে ২৫ বছর পার হলেও তা করেনি বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপের এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। উল্টো জমি বন্ধক দিয়ে ঋণ নিয়ে নেয়। আর জায়গা ভাড়া দেওয়া হয় দুটি প্রতিষ্ঠানকে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে প্লট বরাদ্দে শর্ত ভঙ্গের এ চিত্র ধরা পড়ে। এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠানকে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে আজ বুধবার এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
দুদকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় বালুর মাঠ নামে পরিচিত জায়গা বেআইনিভাবে বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক সিডিএতে অভিযান পরিচালনা করে। সিডিএর চেয়ারম্যানের দপ্তরে হাজির হয়ে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
রেকর্ডপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ ও ২০০৫ সালে যথাক্রমে মেসার্স মডার্ন প্রপার্টিজ লিমিটেড ও মেসার্স হাসান আবাসন প্রাইভেট লিমিটেডকে মোট ১০১ কাঠা জমি ইজারা দেওয়া হয়। দুদকের দল পরিদর্শন করে দেখেছে, জমিতে চৌধুরী সুপার শপ ও রয়েল অটো কার নামের দুটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইজারা চুক্তির শর্তে দখল বরাদ্দ প্রদানের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এখনো তা করা হয়নি। উল্টো ২০২০ সালে এই জমি বন্ধক দিয়ে জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রামের চৌমুহনী শাখা থেকে ঋণ নিয়েছে এস আলম ট্রেডিং। এই ঋণের জন্য সিডিএ অনাপত্তি দিয়েছে। তবে কত টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে, তা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
সিডিএ সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হাসান আবাসন প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হাসান এস আলম গ্রুপের কর্ণধার বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলম মাসুদের ভাই ও গ্রুপটির পরিচালক। সিডিএতে জমা দেওয়া একটি কাগজে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সাইফুল আলম মাসুদের ছেলে আহসানুল আলমকে।
আরও পড়ুন৭৫ কোটি টাকা কর ফাঁকি: এস আলমের দুই ছেলেসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫দুদকের চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ নিয়ে অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়েছে মেসার্স মডার্ন প্রপার্টিজ লিমিটেড ও মেসার্স হাসান আবাসন লিমিটেড। আর কী কী শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে আরও রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশনে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে সিডিএর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো.
ইজারার শর্ত ভঙ্গের বিষয়ে সিডিএর চেয়ারম্যান বলেন, দুই বছরের মধ্যে ভবন করার কথা ছিল, কিন্তু করেনি। এখন সেখানে কিছু দোকানপাট হয়েছে। আবার জায়গা বন্ধক দিয়ে ঋণ নেওয়া হয়েছে। এগুলো অনেক আগের ঘটনা। যখন তাঁদের নজরে এসেছে, তখন পদক্ষেপ নিয়েছেন। শর্ত ভঙ্গ করায় একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এখন অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হবে।
আরও পড়ুনএস আলম গ্রুপের মালিকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র১৫ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এস আলম গ র প র
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্র কিংবা ছুরি নয়, ‘অভিনব’ কায়দায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাই
চট্টগ্রামে ‘অভিনব’ কায়দায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্র কিংবা ছুরি নয়, যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারীরা বমির কথা বলে নির্জন জায়গায় গাড়ি থামিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আনিছুল ইসলাম আজ রোববার দুপুরে চান্দগাঁও থানায় মামলা করার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। আনিছুল ইসলাম নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট।
আনিছুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে প্রতিদিনের মতো নগরের চান্দগাঁও এলাকায় বাসায় যাওয়ার জন্য বহদ্দারহাট মোড়ে দাঁড়ান। ওই সময় গাড়িতে ওঠার জন্য লোকজনের ভিড় ছিল। ফলে বাসে উঠতে পারেননি। তখন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চান্দগাঁও সিঅ্যান্ডবি মোড় যাবে বলে যাত্রী ডাকতে থাকে। অটোরিকশার পেছনে দুজন এবং চালকও তাঁর পাশে এক যাত্রী ছিলেন। পেছনের আসনে ওঠেন আনিছুল ইসলাম।
অটোরিকশাটি বহদ্দারহাট মোড় থেকে বাস টার্মিনালের সামনে জিয়া কমপ্লেক্সের সামনে পৌঁছালে যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারীদের একজন বমি করবেন বলে জানান। ওই সময় চালক গাড়ি থামিয়ে ফেলেন কিছুটা নির্জন এলাকায়। বমির কথা বলা যাত্রী নামার জন্য আনিছুলসহ আরেক যাত্রী অটোরিকশা থেকে নামেন। তখনই আনিছুলের হাতে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত অটোরিকশা করে চলে যান তাঁরা।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই করছি। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’