জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ ছাড়া আইনজ্ঞ, সংবিধানবিশেষজ্ঞ ও সচেতন নাগরিকদের কেউ কেউ এটা নিয়ে কিছু প্রশ্ন তুলেছেন।
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। যে আদেশের ভিত্তিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে, তার নাম হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’।
৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। এর মধ্যে ৪৮টি সংবিধান-সম্পর্কিত। বাকি প্রস্তাবগুলো অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে দলগুলোর মতৈক্য আছে। মূল বিতর্ক সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে। সনদ ও গণভোটের আইনি ভিত্তি, গণভোটের সময় ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা আছে।
৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে সংবিধান-সম্পর্কিত ৪৮টি প্রস্তাব বাস্তবায়নে ঐকমত্য কমিশন দুটি বিকল্প সুপারিশ করেছে। একটিতে বলা হয়েছে, ২৭০ দিনের মধ্যে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে। সে ক্ষেত্রে সংস্কার প্রস্তাবগুলো বিল আকারে আদেশের তফসিলে থাকবে।
অন্য সুপারিশ অনুযায়ী, গণভোট হবে আদেশ ও আদেশের তফসিলে থাকা সংস্কার প্রস্তাবের ওপর। তবে দুটি বিকল্প উপায়ের কোনোটিতেই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে গণভোটে রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) গুরুত্ব পাবে না। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই তা বাস্তবায়িত হবে।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের জমা দেওয়া সুপারিশকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অন্যদিকে বিএনপি এতে অনেকগুলো অসংগতি দেখছে। এমনকি ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্য প্রতিষ্ঠার একটা প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে যে কিছু অসংগতি রয়েছে, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের কথা উল্লেখ ছিল। বলা হয়েছিল, সব রাজনৈতিক দল এই ভিন্নমতগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে জনগণের সম্মতি গ্রহণ করবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের গণভোটের প্রস্তাবে এই ভিন্নমতগুলো রাখা হয়নি।
আরেকটি বড় অসংগতি হলো সংবিধান সংস্কারের জন্য ২৭০ দিনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। ২৭০ দিন পেরিয়ে গেলে সংস্কার প্রস্তাব কেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে? তাহলে সংসদে আলাপ-আলোচনা, তর্কবিতর্কের কী মূল্য থাকল? ভুলে গেলে চলবে না, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংবিধান সংস্কারের বৈধতা আসে আলাপ-আলোচনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে পাওয়া নৈতিক সম্মতি থেকে, কোনো সময়সীমার বাধ্যবাধকতা থেকে নয়।
যে বিষয়টি সবার মনে রাখা দরকার, তা হলো জোর করে বা চালাকি করে কোনো সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া যায় না। সে রকম হলে সংস্কার টেকসই হবে না। এর আগে বিভিন্ন সময়ে এ রকম চেষ্টা দেখা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থই হয়েছে। সংস্কারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষ, অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকার, ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স স ক র প রস ত ব জ ল ই জ ত য় সনদ র জন ত ক ২৭০ দ ন সরক র গণভ ট দলগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ পেশ দুপুরে
‘জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫’-এর বাস্তবায়ন কাঠামো ও আইনি ভিত্তিসংক্রান্ত চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সরকারের কাছে এই চূড়ান্ত সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবে কমিশন।
কমিশনের সুপারিশে সনদ বাস্তবায়নের জন্য সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই আদেশের ওপর গণভোট নেওয়া হবে। গণভোটে জনগণ ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেবে আগামী সংসদ। এজন্য সংসদ সদস্যদের নিয়ে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ গঠনের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাস্তবায়ন শেষ হলে পরিষদ বিলুপ্ত হবে, তবে সংসদ কার্যক্রম চলমান থাকবে। বহুল আলোচিত ‘নোট অব ডিসেন্ট’ ও গণভোটের সময়সীমা নির্ধারণ করবে সরকার।
রাজনৈতিক সমঝোতা হলেও জটিলতা আইনি ভিত্তি ঘিরে
কমিশন-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সনদের মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হলেও, সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন কাঠামো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। আইনি ভিত্তির প্রশ্নে সব দল গণভোটে একমত হলেও, গণভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে অভিন্ন মত পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় কমিশন সনদ ও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দুটি পৃথক সুপারিশ হিসেবে সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া ৩০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৫টি দল স্বাক্ষর করেছে, তবে ৫টি দল আপাতত স্বাক্ষর করেনি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত ছাত্র-তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জানিয়েছে, আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা সনদে স্বাক্ষর করবে না। কমিশন তাদের উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে আশ্বস্ত করেছে যে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সংসদ ভবনে দীর্ঘ পর্যালোচনা ও বিশেষজ্ঞ মতামত
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর থেকেই এর বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত কাঠামো নির্ধারণে কাজ করছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সোমবারও সংসদ ভবনের কমিশন কার্যালয়ে বৈঠক করেন সদস্যরা। সেখানে সনদের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ, ভুলত্রুটি শনাক্ত ও সংশোধনের পাশাপাশি আইন বিশেষজ্ঞ, বিচারপতি ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়। বাস্তবায়নের সাংবিধানিক ও আইনি দিকগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। দলগুলোর জমা দেওয়া মতামতও বিশ্লেষণ শেষে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে কোনো আইনি জটিলতা না হয়।
চূড়ান্ত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত কমিশনের সমাপনী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের উপস্থিতিতে সরকারকে এই সুপারিশ হস্তান্তর করা হবে। পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
কমিশন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের কাছে সুপারিশ হস্তান্তরের পাশাপাশি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ ও গণভোটের সময় নির্ধারণ বিষয়ে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ জানানো হবে। সরকার গণভোটের আগে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ–২০২৫’ নামে একটি সাংবিধানিক আদেশ জারি করবে। ওই আদেশের ওপরই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে—যেখানে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে নাগরিকদের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে। জনগণ ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে, নতুন সংসদ একযোগে আইনসভা ও সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে। সংবিধান সংশোধন, পরিমার্জন ও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সম্পন্ন হলে পরিষদ বিলুপ্ত হবে, তবে সংসদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
সংস্কারই জাতীয় ঐকমত্যের প্রতিফলন
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “রাজনৈতিক দল, আইনজ্ঞ, বিচারপতি, শিক্ষাবিদ ও নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করা হয়েছে।” বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। কমিশনের পক্ষ থেকে কিছু বিষয়ে বিকল্প প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই সরকার তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের গঠন থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান পর্যন্ত সব নথি, ভিডিও, অডিও ও আলোকচিত্র সংরক্ষণের ওপর জোর দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জা“তি হিসেবে আমরা কীভাবে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি এগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মূল্যবান দলিল। এসব নথি ক্যাটাগরি অনুযায়ী সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে গবেষকরা তা ব্যবহার করতে পারেন। টেলিভিশনে প্রচারিত আলোচনা, বৈঠকের ভিডিও ও চিঠিপত্র সবকিছু সংরক্ষিত থাকলে তা হবে ইতিহাসের জীবন্ত দলিল।”
সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান
বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা জুলাই সনদের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নেও সরকারের উদ্যোগ চেয়েছেন জানিয়ে সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা এমন এক কাঠামো তৈরি করেছি যা একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করবে।” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি মূল দায়িত্বের (বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন) একটি ছিল কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়ন। রাজনৈতিক দলগুলো পার্থক্য সত্ত্বেও সংস্কারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল এটাই বড় প্রাপ্তি।
কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে ৩১ অক্টোবর। এরপরও সরকারের প্রয়োজনে ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমিশন সদস্যরা।
সাহসী সিদ্ধান্ত না নিলে এই সুযোগ হারাব: বদিউল আলম মজুমদার
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারের দৃঢ়তা ও সাহসিকতা এখন জরুরি। গণঅভ্যুত্থানে যে ত্যাগ ও রক্ত ঝরেছে, সেই আত্মত্যাগ যেন অর্থবহ হয়। এই সুযোগ হারানো যাবে না।”
বিচারপতি এমদাদুল হক বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, কমিশনের আলোচনাগুলোতেও একই আন্তরিকতা ও সৌহার্দ্যের প্রতিফলন দেখা গেছে।”
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে আলোচনা করেছে। ভবিষ্যতেও যেন এই সৌহার্দ্য বজায় থাকে—এটাই প্রত্যাশা।”
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান সরকারকে দুর্নীতি দমন কাঠামো সংস্কারে দ্রুত ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
শহীদ পরিবারের প্রত্যাশা: সংস্কার নিশ্চিত হোক
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, যত শহীদ পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা সবাই বলেছে সংস্কার বাস্তবায়ন না হলে তাদের প্রিয়জনদের ত্যাগ বৃথা যাবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা ও অগ্রগতি
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দীর্ঘ আলোচনার পর রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের মতামতের ভিত্তিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫’ প্রণয়ন করা হয়।
গত ১৭ অক্টোবর ঐতিহাসিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট সনদে স্বাক্ষর করে। দুই দিন পর, ১৯ অক্টোবর গণফোরামও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করে। কমিশনের আশা, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া স্পষ্ট হলে এনসিপিসহ বাকি দলগুলোও সনদে স্বাক্ষর করবে।
ইতিহাসের পথে নতুন অধ্যায়
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে বলেন, “এই সনদ কেবল রাজনৈতিক চুক্তি নয়, এটি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কাঠামোর ভিত্তি স্থাপনের দলিল।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জাতি এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। এই সংস্কার সফল হলে বাংলাদেশ নতুন ইতিহাসের সূচনা করবে।”
ঢাকা/এএএম/ইভা