প্রায় ৩০ বছর ধরে স্থগিত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা। পুনরায় তা শুরু করার জন্য মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরকে (পেন্টাগন) নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

কিয়েভে রাশিয়ার হামলায় নিহত ৩, আহত ৩১

পারমাণবিক শক্তিচালিত নতুন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন অন্যান্য পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মতো 'সমানভাবে' পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করে।

ট্রুথ সোশালে ট্রাম্প লিখেছেন, “অন্যান্য দেশের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের কারণে আমি যুদ্ধ দপ্তরকে (ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার) নির্দেশ দিয়েছি, যেন তারা আমাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করে। এই প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু হবে।”

ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন, “অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে আছে, আর চীন অনেক পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে। তবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই তারা সমান হয়ে যাবে।”

ট্রাম্প রাশিয়ার একটি পারমাণবিক চালিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সমালোচনার করার মাত্র কয়েকদিন পরই এই নির্দেশ দিলেন। 

চলতি সপ্তাহের শুরুতে ‘বুরেভেস্তনিক’ নামের একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন দাবি করেন, ‘বুরেভেস্টনিক’ এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র যার সমকক্ষ কেউ নেই। প্রায় সীমাহীন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এটি যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরাজিত করতে পারে।

ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থান নেওয়ার পর, পুতিন প্রকাশ্যে তার পারমাণবিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেন।

মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষাগুলো কীভাবে করা হবে, তা বিস্তারিত উল্লেখ করেননি ট্রাম্প। তবে ‘প্রক্রিয়াটি অবিলম্বে শুরু হবে’ বলে লিখেছেন।

ট্রাম্পের এই নির্দেশ মার্কিন নীতির স্পষ্ট বিপরীত। যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ১৯৯২ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল। সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ রাশিয়ার সঙ্গে শীতল যুদ্ধের অবসানের সাথে সাথে স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র শেষবার পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করেছিল ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য নেভাদার একটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় পরীক্ষাটি করা হয়েছিল।

লস অ্যালামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির মতে, ডিভাইডার নামে এই প্রকল্পটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত ১,০৫৪তম পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা, যা বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছিল।

গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্যানুসারে, বর্তমানে বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের প্রায় ৮৭ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দখলে। এর মধ্যে রাশিয়ার হাতে রয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার, আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে পাঁচ হাজার একশটির মতো পারমাণবিক ওয়ারহেড।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র স ত র র পর ক ষ য ক তর ষ ট র র স ত র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সির সঙ্গে বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দিলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দেশের সামরিক নেতৃত্বকে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কার্যক্রম আবার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, রাশিয়া ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেই তাঁর এ সিদ্ধান্ত।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘অন্য দেশগুলোর পারমাণবিক পরীক্ষা কর্মসূচির কারণে আমি ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ারকে (প্রতিরক্ষা দপ্তর) নির্দেশ দিয়েছি, আমাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষাও সমানভাবে শুরু করতে।’ দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে তিনি এ বার্তা দেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। এরপরই রাশিয়া, আর অনেক পেছনে তৃতীয় স্থানে চীন।’ ১৯৯২ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি।

সম্প্রতি পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে রাশিয়া। এর তীব্র সমালোচনা করার কয়েক দিন পর ওই নির্দেশ দিলেন ট্রাম্প। রাশিয়া বলেছে, তার সফলভাবে চালানো ওই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা সীমাহীন।

সম্প্রতি পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে রাশিয়া। এর তীব্র সমালোচনা করার কয়েক দিন পর ওই নির্দেশ দিলেন ট্রাম্প। রাশিয়া বলেছে, তার সফলভাবে চালানো ওই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা সীমাহীন।

গতকাল বুধবার রাতে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্রের ‘অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার’ কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, তাঁর প্রথম মেয়াদেই যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার হালনাগাদ ও সংস্কার করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। তিনি আরও বলেন, ‘চীনের পারমাণবিক কর্মসূচি আর পাঁচ বছরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সমপর্যায়ের হয়ে যাবে।’

আরও পড়ুনট্রাম্পের কোরিয়া সফরের ঠিক আগে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া২২ ঘণ্টা আগে

ট্রাম্প তাঁর পোস্টে পরীক্ষার ধরন বা তা কবে ও কোথায় হবে, সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। তবে তিনি লেখেন, ‘প্রক্রিয়াটি অবিলম্বে শুরু হবে।’

অন্য দেশগুলোর পারমাণবিক পরীক্ষা কর্মসূচির কারণে আমি ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ারকে (প্রতিরক্ষা দপ্তর) নির্দেশ দিয়েছি, আমাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষাও সমানভাবে শুরু করতে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ট্রাম্পের এ নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের নীতির এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ১৯৯২ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। এরপর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ শীতল যুদ্ধের অবসানকালে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় স্থগিতাদেশ জারি করেন।

আরও পড়ুনবুসানে বৈঠকে ট্রাম্প ও সি, চলতে পারে ৩-৪ ঘণ্টা১ ঘণ্টা আগে

সি চিন পিং দক্ষিণ কোরিয়ায় নামার ঠিক আগে ট্রাম্পের এ পোস্ট প্রকাশিত হয়। ২০১৯ সালের পর এটাই ছিল ট্রাম্প ও সির প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। পোস্টটি দেওয়া হয় যখন ট্রাম্প সির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ‘মেরিন ওয়ান’ হেলিকপ্টারে চড়ে গিমহে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পথে ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায় ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের একটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় সেই পরীক্ষা চালানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের আকাশে বি-৫২এইচ স্ট্র্যাটোফরট্রেস বোমারু বিমান থেকে একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ফেলা হচ্ছে। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সির সঙ্গে বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দিলেন ট্রাম্প