পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির প্রাণ বলা হয় চেঙ্গী নদীকে। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে আসা এই নদী শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এখানকার মানুষের সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। এই নদীতে ফুল ভাসিয়ে নিজেদের বর্ষবরণ আয়োজন শুরু করে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী।

দেশের অন্যান্য নদীর মতো পাহাড়ি এই নদীতে চোখ পড়েছে দখলদারদের। জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে নদীর জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি, দোকানপাট করেছেন লোকজন। তাঁদের অনেকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নদীভাঙনের শিকার হয়ে এখানে ঠাঁই নিয়েছেন। করেছেন বসতঘর।

আবার নদীতে দেওয়া হয়েছে রাবার ড্যাম। শুষ্ক মৌসুমে কৃষিকাজের জন্য পানি প্রত্যাহারে অস্থায়ী বাঁধ দেওয়া হয় নদীর বিভিন্ন জায়গায়। পলি জমে নিয়মিত ভরাট হচ্ছে নদী। কমছে গভীরতা। হ্রাস পেয়েছে পানির ধারণক্ষমতাও। বর্ষাকালে বন্যার সময় ভাঙনের তীব্রতাও বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। নদীর ওপর অত্যাচার এখানে থেমে নেই। দখল ও ভাঙনের পাশাপাশি দূষণও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীর খনন এবং ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প নেওয়া হলেও মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

জেলার প্রধান নদীর মতো শহরের প্রধান খালও দখল-দূষণের কবলে পড়ে বিপর্যস্ত। খাগড়াছড়ি খাল নামের এই খালের জায়গা দখল করে বিপণিবিতান, আবাসিক ভবন, হোটেলসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাদের অবকাঠামোর কারণে খাল সংকুচিত হয়েছে। পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বৃষ্টি হলেই শহরে জলজট হচ্ছে।

প্রধান নদী ও খালের ওপর এমন ‘অত্যাচারের’ প্রতিদান দিতে শুরু করেছে প্রকৃতি। পাহাড়ি জনপদে গত বছর স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। জেলা শহরসহ আশপাশের উপজেলাগুলোও পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল।

শুধু চেঙ্গী নদী নয়, দখল হচ্ছে খাগড়াছড়ি শহরের পানিনিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম খাগড়াছড়ি খালও। বিপণিবিতানের প্রতিরোধদেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে খালের জায়গায়। খাগড়াছড়ি সদর থেকে সম্প্রতি তোলা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিকের রিমান্ড চায় পুলিশ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আবদুল হান্নানের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।

আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম হাসান এ আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলমের আদালতে আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আবদুল হান্নানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর পল্টন থানার এসআই শামীম হাসান আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের চারটি কারণে দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেলে হেলমেট পরা অজ্ঞাতনামা দুজন সন্ত্রাসী ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। গুলিতে ওসমান হাদি গুরুতর জখম হন। র‍্যাব-২ ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ যাচাই করে মোটরসাইকেলের মালিক মো. আবদুল হান্নানের বিষয়ে জানতে পারে। ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোটরসাইকেলের বিষয়ে কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি আসামি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আবেদনে আরও বলা হয়, আসামিদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও মোটরসাইকেল উদ্ধার, জড়িত অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের নাম–ঠিকানা সংগ্রহসহ অবস্থান জানা, মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন ও তথ্য-অর্থের সম্পর্ক সংগ্রহ এবং কোন স্থান থেকে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, তার উৎস জানার জন্য পুলিশের নিজ হেফাজতে রেখে আবদুল হান্নানকে সাত দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।

এর আগে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর প্লেটের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর) সূত্র ধরে গতকাল শনিবার আবদুল হান্নানকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আটক করে র‍্যাব-২। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মোটরসাইকেলটি নিজের বলে স্বীকার করেছেন। পরে তাঁকে পল্টন মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়।

গত শুক্রবার বেলা ২টা ২৪ মিনিটে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। পেছন থেকে অনুসরণ করে আসা একটি মোটরসাইকেল থেকে এক ব্যক্তি ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করেন। তিনি বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুনওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর ধরে মালিককে আটক৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ