Samakal:
2025-09-18@02:47:53 GMT

পরীক্ষার নীতিমালাতেই ভুল

Published: 21st, January 2025 GMT

পরীক্ষার নীতিমালাতেই ভুল

সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার নীতিমালায় ভুল রয়েছে। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সংশোধিত মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হয়েছে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়। গত রোববার পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে। এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। ভর্তি পরীক্ষায় কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভও করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে কোটা বিষয়ে ভুলের দায় নিচ্ছে না চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)।

বিএমডিসির ২০২৪ সালের নীতিমালায় মেডিকেল ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ২ শতাংশ ছিল। তবে এবার ৫ শতাংশ উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৫ সালের পরীক্ষার জন্য গত ২১ ডিসেম্বর বিএমডিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নীতিমালার ৯.

১.১ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৩ জুলাই ২০২৪ তারিখের স্মারক অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য মোট আসনের ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকিবে। তবে এই কোটার আসন শূন্য থাকিলে সাধারণ মেধা তালিকা হইতে মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে এই কোটার আসন পূরণ করা যাইবে।’ 

সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে এই আন্দোলন অভ্যুত্থানে রূপ নিয়ে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটায়। ২১ জুলাই আপিল বিভাগ রায় দেন, সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য ২ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়। দেখা গেছে, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার কোটার বিধি আর মেডিকেল ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিধি এক। আদতে চাকরির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কোটার এই প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে মেডিকেলে ভর্তির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
নতুন নীতিমালায় বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত আলীর সই রয়েছে। তবে তিনিও এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। নতুন বিধিমালায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫ শতাংশ কেন করা হলো– জানতে চাইলে লিয়াকত আলী সমকালকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিএমডিসির প্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিক মিটিং করে নতুন বিধিমালা করা হয়েছে। কোটা ৫ শতাংশ কেন করা হলো, সে বিষয়ে এখন বলতে পারব না। কারণ সেই মিটিংয়ে আমি ছিলাম না।’

কোটা বাতিল ও ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় থাকা কোটা বাতিল এবং রোববার প্রকাশিত ফল বাতিল করে আবারও প্রকাশের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। সকাল ৯টা থেকে সর্বস্তরের মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থী, চিকিৎসকবৃন্দ এবং সর্বস্তরের শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে তাদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। দুপুরেও তারা সেখানে ছিলেন। তাদের দাবি, কোটা থাকায় অনেক যোগ্য শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাননি। অবিলম্বে কোটা বাতিল করতে হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনর্বিবেচনা করে ফের প্রকাশের দাবিতে গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৬৮৬ আবেদন
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এবার সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ প্রার্থী অংশ নেন। তাদের মধ্যে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য ৫ হাজার ৩৭২ জন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মেধায় আবেদন করেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৭৪ জন। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৫৯ হাজার ৫৫৪ জন। এবার ৩০৮টি কোটার আসনের বিপরীতে আবেদন করেন ১ হাজার ৮৮৭ জন। তাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের নির্ধারিত ২৬৯টি আসনে এবার আবেদন পড়ে ৬৮৬টি। পাস করেছেন ১৯৩ জন। সেই হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার ২৮ শতাংশ আসন এখনও ফাঁকা। এগুলো মেধা তালিকা থেকে পূরণ হবে। 

কোটায় উত্তীর্ণদের ভর্তি সনদ বাছাইয়ের পর
বিএমডিসি প্রণীত ভর্তি নীতিমালার ৯.৩ নম্বর অনুচ্ছেদে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তান এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর কোটার আসনে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি যাচাই-বাছাইপূর্বক অনুমোদনক্রমে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ রয়েছে। সে অনুযায়ী যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কোটায় উত্তীর্ণদের ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি কাগজপত্র নিয়ে ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন।
তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার এত বছর পর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার কথা নয়। যারা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পাস করেছেন, তাদের তথ্য বিশেষভাবে যাচাই-বাছাই করা ছাড়া কিছু বলা যাবে না। সে জন্য এসব শিক্ষার্থীকে অধিদপ্তরে সরাসরি আসতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের অনলাইনে আপলোড করতে বলা হয়েছে কাগজপত্র।
গতকাল বিকেলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাও প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী হয়েছে। তার পরও এটা তদন্ত করা হবে। সেখানে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে, তাহলে সেটা দেখা হবে। এমবিবিএস পরীক্ষায় মূল কোটা থাকবে কিনা, সেই নীতিগত সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, রাষ্ট্রের।

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ ব এমড স র ক ট র আসন পর ক ষ য় পর ক ষ র কর ছ ন র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
  • রূপালী লাইফের আর্থিক হিসাবে ৬৯ কোটি টাকার গরমিল
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটে ভর্তি: মাইগ্রেশন, বিষয় ও প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ প্রকাশ
  • হেলথ টেকনোলজি কোর্সে ভর্তি, অপেক্ষমাণ থেকে তৃতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে