গাইবান্ধায় আগুনে ১০ পরিবার নিঃস্ব, ৭ গরুর মৃত্যু
Published: 22nd, January 2025 GMT
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দশটি পরিবারের ঘরবাড়ি, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোটরসাইকেল, গবাদিপশু ও ঘরের আসবাবপত্র পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এতে অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের নীলকন্ঠপুর গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সকালের দিকে নীলকন্ঠপুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে শাহ আলম, ওয়াহেদ আলীর ছেলে ইমরান আলী, ইজার উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম এবং শরিফুল ইসলাম, শহিদ ইসলাম, আতিকুল ইসলাম, মিটু ইসলাম, আব্দুর রশিদ, আনারুল ইসলামসহ দশটি পরিবারের ঘরে এবং গোয়াল ঘরে আগুন লাগে।
আগুনে ঘরে থাকা মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও নগদ টাকাসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে যায়। এসময় গোয়াল ঘরে থাকা সাতটি গরু অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শালমারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সঞ্জীব হোসেন পলাশ বলেন, “উপজেলা শহর থেকে অনেক গ্রামটি অনেক দূরে হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসার আগেই গরুসহ সবকিছু পুড়ে যায়। আগুনে নিমিষেই পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে গেল।”
গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আতিকুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে আমরা পৌঁছানোর আগেই তাদের সবকিছু পুড়ে গেছে। স্থানীয়দের চেষ্টায় কিছু কিছু আসবাবপত্র ও গবাদিপশু সরিয়ে নেওয়া গেলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২০ লাখ টাকা।”
ঢাকা/মাসুম/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।