গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) দুই ধাপের প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন আজ শনিবার। ফজরের পর থেকে আমবয়ান, জিকির ও ইবাদত চলছে। আগামীকাল রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে শুরায়ে নেজামের দুই ধাপের প্রথম পর্ব ইজতেমা। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশ মাওলানা জুবায়ের।

ফজরের নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা খোরশেদ সাহেবের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। তার বয়ান অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মুফতি উসামা ইসলাম। সকাল ১০টায় তালিম হবে। এরপর ওলামাদের উদ্যোমে বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। তলাবাদের (মাদ্রাসার ছাত্রদের) উদ্দেশে নামাজের মিম্বরে বয়ান করবেন- ভারতের মাওলানা আকবর শরিফ। যোহর নামাজের পর বয়ান করবেন মাওলানা ইসমাঈল গোদরা। 
আসর নামাজের পর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা জুহায়ের। এরপর যৌতুক বিহীন বিয়ে হবে। মাগরিবের পর বয়ান করবেন ভরতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা।

২ জানুয়ারি রোববার ইজতেমার মোনাজাতের আগে ফজরের পর বয়ান করবেন মাওলানা আব্দুর রহমান সাহেব। আখেরি মোনাজাতের পূর্বে নসিহতমূলক বক্তব্য দিবেন মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা।

ইজতেমায় প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর লম্বা সময় নিয়ে বয়ান (ধর্মীয় বিষয়ে বক্তৃতা) করা হয়। জোহর ও আসরের সময় বয়ান হয় ছোট পরিসরে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশেষ শ্রেণি–পেশার মানুষ যেমন ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবী আলেমদের নিয়ে আলাদা বয়ান হয়। এ সময় ইজতেমার মাঠে অন্যরা তালিমের কাজে ব্যস্ত থাকেন।

বয়ান সাধারণত ভারত ও পাকিস্তানের আলেম ও মুরব্বিরা করে থাকেন। বয়ান উর্দু ভাষাতে হয়। এটা সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তবে বাংলাদেশের কেউ বয়ান করলে সরাসরি বাংলায় করেন।

আজ সকালে ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা যায়, শামিয়ানার ভেতরে যত দূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। মাঠে পাটি ও চট দিয়ে বিছানা পেতে বসে বয়ান শুনছেন মুসল্লিরা। কেউ বসে বয়ান শুনছেন, কেউ আবার রান্না করা অবস্থায় বয়ান শুনছেন। কেউ কেউ করছিলেন অজু ও গোসল। তবে সবাই অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেও মনোযোগ ছিল মাইকে ভেসে আসা বয়ানের দিকে।

ফজরের নামাজের পর শুরু হওয়া বয়ান শেষ হয় সকাল ১০টায়। এরপর দ্বিতীয় বয়ান শুরু হবে জোহরের নামাজের পর। এ সময়টা মুসল্লিরা ব্যস্ত থাকবেন তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্যে ইসলামি আলোচনা, জিকির-আসকার ও অন্যান্য কাজে।

আগত বিদেশি মুসল্লিদের জন্য ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে তৈরি করা হয়েছে বিদেশি নিবাস। দ্বিতীয় দিনও ইজতেমায় যোগ দেওয়া দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের ময়দানে আসা অব্যাহত রয়েছে। ইজতেমা উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের পদচারণায় টঙ্গীর ইজতেমাস্থল এবং এর আশপাশ এলাকা এখন যেন ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে।

আগামী তিন ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে সুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) দ্বিতীয় পর্ব। ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তাদের ইজতেমা। আগামী ১৪ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদ কান্দলভী অনুসারীদের ইজতেমা হওয়ার কথা রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত বল গ জ ম ত ত বল গ ইজত ম র ন ম জ র পর র ইজত ম র পর ব ফজর র

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার