তুরাগ তীরে ইবাদতে মশগুল মুসল্লিরা, আখেরি মোনাজাত কাল
Published: 1st, February 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) দুই ধাপের প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন আজ শনিবার। ফজরের পর থেকে আমবয়ান, জিকির ও ইবাদত চলছে। আগামীকাল রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে শুরায়ে নেজামের দুই ধাপের প্রথম পর্ব ইজতেমা। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশ মাওলানা জুবায়ের।
ফজরের নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা খোরশেদ সাহেবের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। তার বয়ান অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মুফতি উসামা ইসলাম। সকাল ১০টায় তালিম হবে। এরপর ওলামাদের উদ্যোমে বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। তলাবাদের (মাদ্রাসার ছাত্রদের) উদ্দেশে নামাজের মিম্বরে বয়ান করবেন- ভারতের মাওলানা আকবর শরিফ। যোহর নামাজের পর বয়ান করবেন মাওলানা ইসমাঈল গোদরা।
আসর নামাজের পর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা জুহায়ের। এরপর যৌতুক বিহীন বিয়ে হবে। মাগরিবের পর বয়ান করবেন ভরতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা।
২ জানুয়ারি রোববার ইজতেমার মোনাজাতের আগে ফজরের পর বয়ান করবেন মাওলানা আব্দুর রহমান সাহেব। আখেরি মোনাজাতের পূর্বে নসিহতমূলক বক্তব্য দিবেন মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা।
ইজতেমায় প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর লম্বা সময় নিয়ে বয়ান (ধর্মীয় বিষয়ে বক্তৃতা) করা হয়। জোহর ও আসরের সময় বয়ান হয় ছোট পরিসরে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশেষ শ্রেণি–পেশার মানুষ যেমন ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবী আলেমদের নিয়ে আলাদা বয়ান হয়। এ সময় ইজতেমার মাঠে অন্যরা তালিমের কাজে ব্যস্ত থাকেন।
বয়ান সাধারণত ভারত ও পাকিস্তানের আলেম ও মুরব্বিরা করে থাকেন। বয়ান উর্দু ভাষাতে হয়। এটা সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তবে বাংলাদেশের কেউ বয়ান করলে সরাসরি বাংলায় করেন।
আজ সকালে ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা যায়, শামিয়ানার ভেতরে যত দূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। মাঠে পাটি ও চট দিয়ে বিছানা পেতে বসে বয়ান শুনছেন মুসল্লিরা। কেউ বসে বয়ান শুনছেন, কেউ আবার রান্না করা অবস্থায় বয়ান শুনছেন। কেউ কেউ করছিলেন অজু ও গোসল। তবে সবাই অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেও মনোযোগ ছিল মাইকে ভেসে আসা বয়ানের দিকে।
ফজরের নামাজের পর শুরু হওয়া বয়ান শেষ হয় সকাল ১০টায়। এরপর দ্বিতীয় বয়ান শুরু হবে জোহরের নামাজের পর। এ সময়টা মুসল্লিরা ব্যস্ত থাকবেন তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্যে ইসলামি আলোচনা, জিকির-আসকার ও অন্যান্য কাজে।
আগত বিদেশি মুসল্লিদের জন্য ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে তৈরি করা হয়েছে বিদেশি নিবাস। দ্বিতীয় দিনও ইজতেমায় যোগ দেওয়া দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের ময়দানে আসা অব্যাহত রয়েছে। ইজতেমা উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের পদচারণায় টঙ্গীর ইজতেমাস্থল এবং এর আশপাশ এলাকা এখন যেন ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে।
আগামী তিন ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে সুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) দ্বিতীয় পর্ব। ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তাদের ইজতেমা। আগামী ১৪ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদ কান্দলভী অনুসারীদের ইজতেমা হওয়ার কথা রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত বল গ জ ম ত ত বল গ ইজত ম র ন ম জ র পর র ইজত ম র পর ব ফজর র
এছাড়াও পড়ুন:
চুয়েটে দিনভর তারুণ্যের ‘তর্ক-যুদ্ধ’
তীব্র উত্তেজনা চলছে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে। একদিকে তাইওয়ানের স্বাধীনতা রক্ষার আকাঙ্ক্ষা, অন্যদিকে চীনের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষার দৃঢ় অবস্থান। এর মাঝখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ঘিরে তৈরি হচ্ছে বৈশ্বিক কূটনৈতিক টানাপোড়েন। সামরিক মহড়া, যুদ্ধজাহাজের টহল আর রাজনৈতিক হুমকিতে যখন অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে, ঠিক তখনই এসব জটিল আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে তর্ক-যুদ্ধে মেতে ওঠেন তরুণ বিতার্কিকেরা।
আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল ভবনে বিতার্কিকদের দেখা গেল। তাইওয়ান ও চীনের সাম্প্রতিক উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা, অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্র ও সমন্বয়কের অন্তর্ভুক্তির ভালো-মন্দ—এমন আরও নানা আলোচিত বিষয় নিয়ে বিতার্কিকেরা যুক্তি, পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটি। আয়োজনের সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো।
এবারের আয়োজনের নাম ছিল ‘তারুণ্য উৎসব’। এতে দেশের ২৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ দল অংশ নেয়। তিন দিনের আয়োজনে গতকাল ছিল দ্বিতীয় পর্ব। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে এ প্রতিযোগিতা চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। যুক্তির এই লড়াই চলে চারটি ধাপে। প্রতিটি ধাপ শুরুর ১৫ মিনিট আগে প্রতিযোগীদের বিতর্কের বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর চটপট যুক্তি সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিতার্কিকেরা। পরে তাঁদের মধ্য থেকে বাছাই করা ৮টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় কোয়ার্টার ফাইনাল।
আয়োজকেরা জানান, কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিজয়ী চারটি দল নিয়ে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে সেমিফাইনাল রাউন্ড। এরপর সেমিফাইনালের বিজয়ী দুটি দল সরাসরি অংশগ্রহণ করবে চূড়ান্ত পর্বে। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন অতিথিরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এদিন বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে বই বিনিময়, ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ ও গুপ্তধন খোঁজা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন।
চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি গোলাম মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিতর্কের মাধ্যমে নানা বিষয়ে জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিতর্ক আমাদের চিন্তা, চেতনা ও মেধা বিকশিত করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের অংশগ্রহণের ফলে নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের এ সুযোগ তৈরি করে দিতেই নবমবারের মতো এই বিতর্ক উৎসব বা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসেছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। আলাপকালে তিনি বলেন, এ রকম প্রতিযোগিতায় সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক করার ফলে জ্ঞানের পরিধি সমৃদ্ধ হয়। পাশাপাশি অনেকের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
দিনভর বিতর্ক শেষে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটকসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি কনসার্টে মঞ্চ মাতায় জনপ্রিয় গানের দল ‘সহজিয়া’ ও ‘লেভেল ফাইভ’।