রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে কলেজের মূল ফটকের সামনে ৫ম দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৮ টার দিকে তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ব ঘোষিত বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছে, আমরা সেটি প্রত্যাখ্যান করছি। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আমাদের সাত দফা দাবি থেকে একদফা দাবি ঘোষণা করছি। সেটা হলো - মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কলেজে এসে আমাদের বলবেন, আপনাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে। আজ থেকে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করা হলো।এখন থেকে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতির একদফা দাবিতে অনশন ও ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।”
তারা আরো বলেন, “তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আমাদের শিক্ষার্থী ভাই-বোনরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এরইমধ্যে আমাদের চারজন শিক্ষার্থী অনশন করায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরপরও রাষ্ট্রের কোনো মাথাব্যথা নেই। সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমাদের দাবি আদায় না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না। এতে করে যদি আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবন দিতে হয়, তাতেও আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা জনসাধারণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করতে চাই না। যার ফলে গতকাল ঘোষিত ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিকেল থেকে একটি মিছিল মহাখালী থেকে গুলশান-১ নম্বর সড়ক সাময়িকভাবে অবরোধ করে। তবে আমরা বলতে চাই, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অবরোধ করা হবে। পর্যায়ক্রমে আমাদের আন্দোলন আরও কঠোর অবস্থানে যাবে।”
এর আগে, শনিবার তাদের পূর্ব ঘোষিত অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে মহাখালীতে সড়ক অবরোধ করেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আবার কলেজের সামনে ফিরে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তারা গুলশান-১ নম্বর চত্বর ব্লকেড করে আবার কলেজের প্রধান ফটকে ফিরে আসে।
ঢাকা/উম্মে হাফছা/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ত ম র কল জ কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।