চুরি হওয়া প্রাইভেট কার উদ্ধারে তল্লাশি, দুই নারীসহ মিলল ৪০ কেজি গাঁজা
Published: 4th, February 2025 GMT
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে চুরি করা প্রাইভেট কারে ৪০ কেজি গাঁজা, ৩৬৫ পিস ইয়াবা ও দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার পৌর এলাকার আক্কেলপুর-বগুড়া সড়কে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার চকবাজার শুভপুর এলাকার মৃত আব্দুল ছাত্তারের ছেলে রুবেল হোসেন (২৫), জয়পুরহাট সদর উপজেলার সাখিদারপাড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪২) এবং কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ছাইকট গ্রামের রাকিব হোসেনের স্ত্রীর নাসরিন আক্তার (২৫)।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কুমিল্লা থেকে একটি প্রাইভেট কার চুরি হয়েছে বলে পুলিশ খবর পায়। এসময় থানা-পুলিশ পৌর সদরের আক্কেলপুর-বগুড়া সড়কের সোনামুখী মসজিদ এলাকায় তল্লাশি চৌকি বসায়। একপর্যায়ে চুরি হওয়া সাদা রঙয়ের প্রাইভেট কারটি থামানো হয়। এসময় প্রাইভেট কারের সামনে থাকা একজন লাফিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গাড়িসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। পরে জব্দ করা প্রাইভেট কার তল্লাশি করে ১৪টি প্যাকেটে মোড়ানো ৪০ কেজি গাঁজা এবং ৩৬৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার নাজমা বেগম বলেন, পাঁচ হাজার টাকা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তারা কুমিল্লা থেকে জয়পুরহাট সদর উপজেলার দূর্গাদহ বাজারে গাঁজা এবং ইয়াবাগুলো নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। তবে গাড়িটি চুরি করা কিনা তা তিনি জানেন না।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, কুমিল্লা থেকে একটি প্রাইভেট কার চুরি করে নিয়ে আসছিল এমন সংবাদ পেয়ে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। গাড়িটি আটক করে থানায় এনে তল্লাশি করলে গাঁজা ও ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। আটক তিনজনের বিরুদ্ধ মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মতলবে দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন যুবদল নেতা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. হোসেন মিয়া হঠাৎ করেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি এ ঘোষণা দেন। ভিডিওতে তাকে দুধ দিয়ে গোসল করতে দেখা যায়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ভিডিওর সাথে দেওয়া স্ট্যাটাসে ক্ষোভ, হতাশা ও বঞ্চনার কথা প্রকাশ করেছেন হোসেন মিয়া। তিনি লিখেছেন: আমার এই ভিডিওটা দেখার পর সবার কাছে আমি হাসির পাত্র হিসেবে থাকবো, এমনিতেই আমি আজ সবার হাসির পাত্র। আমি ধ্বংস হইনি। আমাকে ধ্বংস করা হয়েছে, আর সেটা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সিস্টেমের কাছে যে সিস্টেমটার নাম হচ্ছে টাকা আর ষড়যন্ত্র।
তিনি আরও লেখেন, আমার কাছের মানুষগুলো আমার সাথে ষড়যন্ত্র করেছে। আমার মতো মানুষের রাজনীতিতে দুই-চারটা না থাকলে কিছুই হবে না। কিন্তু একটা প্রশ্ন রেখে যাই আমার লড়াইটা কিসের জন্য ছিল? আমার লড়াইটা ছিল বিএনপির জন্য, যুবদলের জন্য, চাঁদপুর-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী জালাল সাহেবের জন্য।
হোসেন মিয়া দাবি করেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ‘দোসরদের যোগসাজশে’ তাকে রাজনীতি থেকে সরানো হয়েছে। আজ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের দোসররা মিলেমিশে ষড়যন্ত্র করে, টাকার পাওয়ারে, ক্ষমতার পাওয়ারে আমার মত ক্ষুদ্র কর্মীকে ধ্বংস করেছে- লেখেন তিনি।
পোস্টে তিনি আরো উল্লেখ করেন, সকল প্রকার রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। বলার মতো অনেক কথা আছে কিন্তু ভাষা নেই। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
হোসেন মিয়ার ভিডিও ও বক্তব্য ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, অনেকে এ ঘটনাকে ‘আবেগী সিদ্ধান্ত’ বা ‘অতিরঞ্জন’ হিসেবে দেখছেন।
কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক রফিক তাতী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের অন্যতম সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ হোসেনের প্রতি গ্রাম্য সালিশে অপমানজনক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা শুধু তার প্রতি নয় কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলসহ সংগঠনের মর্যাদা ও আত্মসম্মানের ওপর প্রকাশ্য আঘাত।
তারা আরও বলেন, রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপমান ও অসম্মান করার এই আচরণ অগ্রহণযোগ্য, নিন্দনীয় এবং পরিকল্পিত। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
যুবদল নেতারা দাবি করেন, এই সালিশ বিচারের মাধ্যমে যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত এবং যারা অপমানজনক রায় প্রদান করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ জামান টিপু বলেন, ‘‘আমরা হোসেন মিয়ার ভিডিওটি দেখেছি। রাজনীতি হচ্ছে আদর্শ ও সংগঠনের জন্য কাজ করার জায়গা। ব্যক্তিগত হতাশা বা চাপের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া দুঃখজনক। তিনি আমাদের কর্মী ছিলেন, ভুল বোঝাবুঝি বা অভিমান থাকলে আলোচনা ও সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যেই সমাধান হতে পারত। আমরা তাকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘যুবদলে কাউকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কখনো ব্যক্তিগতভাবে নেয় না। দলের নিয়ম, কমিটি ও মূল্যায়নের ভিত্তিতেই সব সিদ্ধান্ত হয়। যদি তিনি মনে করেন কেউ অন্যায় করেছে সংগঠন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’’
ঢাকা/অমরেশ//