ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. তানভীর আহমেদ আশা প্রকাশ করেছেন, সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির (সিআরইউ) কার্যালয়ে সংগঠনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন।

জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকদের নিউজগুলো আমি সুশাসন ও নানা অভিযানে কাজে লাগিয়েছি। তাদের তথ্যের মাধ্যমে অনেক অ্যাকশান নিয়েছি। এজন্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে মিডিয়া উইং থাকে। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের কাজে সহযোগিতা করেন।”

আরো পড়ুন:

টেন্ডার জমা ‌নি‌য়ে ২ পক্ষের হাতাহাতি, ‌মারধরে সাংবাদিক আহত

আরএফইডির সভাপতি জেবেল, সম্পাদক রাব্বানী

জেলা প্রশাসক তার কিছু পরিকল্পনার কথাও জানান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার কিছু পরিকল্পনা আছে, এর মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্য হ্রাস, ঢাকার বিভিন্ন খাস জমিতে জনতার বাজার হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাজার কন্ট্রোল করা। চাইলেই কোনো সিন্ডিকেট যেন পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে। আমরা ঢাকার ২১টা খাল উদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বাউনিয়া খালের মাধ্যমে আমরা এ কার্যক্রম শুরু করেছি। সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে এ প্রত্যাশা করছি।”

এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নতুন ভবন করে জায়গা মেনেজমেন্ট করার পরিকল্পনা আছেও বলে জানান তানভীর আহমেদ। তিনি বলেন, “তখন বিশৃঙ্খলভাবে ছড়িয়ে থাকা ভেন্ডার (দলিল লেখক) ও কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির জন্য আলাদা বড় পরিসরে অফিস করার পরিকল্পনা আমরা নিব।”

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই আদালত পাড়ায় সাংবাদিকদের উপস্থিতি বেড়েছে। সে সময় দেখেছি বসার জায়গা না থাকায় সাংবাদিকরা সারাদিন গাছতলায় অতিবাহিত করলেও নিরপেক্ষতার জন্য কখনো আইনজীবীদের থেকে সুবিধা নিতেন না। তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোর্টে কি হচ্ছে তা জাতির কাছে তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের মাধ্যমে রাষ্ট্রে বার্তা যায়। ছাত্র আন্দোলনেও সাংবাদিকদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদালতে ফ্যাসিস্ট আসামিদের আদালতে আনা হলে সাংবাদিকরা তাদের অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরছেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাদের রুমের স্পেস বড় করাসহ অফিসের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি জেলা প্রশাসক দেখবেন বলে প্রত্যাশা রাখছি।”

ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, “আদালত পাড়ার নিউজ আপনারা (সাংবাদিক) কাভার করেন। যার যে দলই থাক, সবাই সত্য প্রকাশ করবেন। ঢাকা আইনজীবীদের সঙ্গে আপনাদের সাংবাদিকদের সমন্বয় থাকবে বলে আশা করি। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সংগঠনটি আরো বড় হবে। অফিস রুম যেন আরো বড় হয় সেজন্য আমরা ঢাকা আইনজীবী সমিতি আপনাদের পাশে থাকব। ছাত্র-জনতার নতুন বাংলাদেশের যে আশা আকাঙ্ক্ষা তা আপনারা বজায় রাখবেন প্রত্যাশা করছি।”

কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট প্রশান্ত কুমার কর্মকার বলেন, “হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৪ বছর অতিবাহিত করল কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটি। প্রথমে ১২ জন দিয়ে শুরু। এখন প্রায় শতাধিক সাংবাদিক এই সংগঠনে। এই সংগঠনে পেশাদার মেইনস্ট্রিম গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাই কাজ করেন। সবাই নিরপেক্ষ জায়গা থেকে পেশাদারিত্ব বজায় রাখেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকরা জাতীয় পর্যায়ে অনেক বড় বড় সংবাদ প্রকাশ করেন। আমি প্রত্যাশা করবো, পেশাদার এই সংগঠনের জায়গার পরিধি বৃদ্ধি করা হয়। এছাড়া ডিসি প্রসিকিউশন বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানাব, আদালতে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টা দেখবেন।”

সংগঠনের সদ্য বিদায়ী সভাপতি হাসিব বিন শহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কোষাধাষ্য আব্দুর রশিদ মোল্লা, পুলিশের অপরাধ ও প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি নাসির উদ্দিন,  বর্তমান সভাপতি লিটন মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক মামুন খান প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ট র প র ট র স ইউন ট র আইনজ ব ব দ কর কম ট র স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইন কেন্দ্রীয়ভাবে যাচাইয়ে যথাযথ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘বংশাল থেকে জনসন, সানসিল্কসহ দামি ব্র্যান্ডের নকল পণ্য জব্দ’ শিরোনামে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘ঢাকার চারপাশে প্রকাশ্যেই বানানো হচ্ছে বিদেশি পণ্য’ শিরোনামে ২ এপ্রিল আরেকটি দৈনিকের অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এ দুটিসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়াসহ ১০ আইনজীবী ২০ এপ্রিল রিটটি করেন।

রিটে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারানো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অন্যতম রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, রাগীব কবির ও আরফান সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রুলে গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন প্রতিবেদনের আলোকে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো প্রতিরোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরি করতে কমিটি গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বাণিজ্যসচিব, অর্থসচিব, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক—এই সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্ট সাত বিবাদীকে ওই কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাজারে প্রচুর অনুমোদিত ও নকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি; বিশেষত শিশুস্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এতে করে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

রিট আবেদনকারী আরও বলেন, এসব কারণে কিউআর কোডসহ কেন্দ্রীয় অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা চালু এবং অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ডেটাবেজ তৈরির নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

রিট আবেদনকারী আইনজীবীরা হলেন—মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, মো. রোকনুজ্জামান, রাগিব কবির, আবু শাহেদ, রেহেমিন চৌধুরী, আরফান সুলতানা, মো. সাইফুল ইসলাম, হাসান ইসহাক ভূঁইয়া, মো. আরিফ চৌধুরী ও উম্মে আইমান জেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
  • শ্রম আদালতে ঝুলছে ২২ হাজার মামলা
  • মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
  • চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার ফের শুনানি
  • চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
  • ট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ মার্কিন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে
  • আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক
  • আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
  • কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ