স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে আয়োজনের দাবির বিরোধিতা করে বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দেওয়া মানে হলো রাজনীতিবিদদের অবিশ্বাস করা। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সরকারের অধীনেও যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে, এটা দেখার জন্য তো আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।

আজ শনিবার দুপুরে মেঘনা উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কারণটা কি, সে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, ‘কেন এই কথাগুলো সামনে আসছে, আমি জানি না। তাহলে কি যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে, শেখ হাসিনা যাদের দমন-পীড়ন করেছে, তাদের প্রতি কি আপনাদের বিশ্বাস নেই?’ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা, তার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে দিতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে সব নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক সরকারের অধীনেও যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে, এটা দেখার জন্য তো আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।’

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এই দানব টিকে থাকলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ইজ্জত-সম্মান কিছুই থাকত না। ছাত্র-জনতা ও মাসুম বাচ্চারা ঝাঁপিয়ে পড়ার কারণেই আজ আমরা মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে পারছি, কিছুটা স্বস্তিতে জীবনযাপন করতে পারছি, গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এখন আমাদের প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং চর্চা করার জন্য কাজ করতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়ে রিজভী বলেন, জনগণের প্রত্যাশা এই সরকার জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কারণটা কী, আমি জানি না। তার মানে কি তারা বিশ্বাস করছেন না যে, রাজনৈতিক দলের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু হবে? তাহলে তো অবিশ্বাস থেকেই গেল, যে অবিশ্বাস শেখ হাসিনা সৃষ্টি করেছিলেন।’

সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অব শ ব স র জন ত ক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ