বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় হামলায় যুবদল নেতা রাশেদ মিঞা (২৭) নিহতের ঘটনায় ২০ জনের নামে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২৫ জনকে।

গতকাল রোববার রাতে সোনাতলা থানায় এ মামলা করেন নিহত রাশেদুল মিঞার মা ওজেনা বেগম। আসামিদের মধ্যে আছেন পাকুল্যা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়ামুল কবির, তাঁর চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম এবং পাকুল্যা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নান।

রাশেদ মিঞা পাকুল্যা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছুদিন আগে পাকুল্যা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে পাকুল্যা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পাকুল্যা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়ামুল কবির স্বপদে বহাল থাকার জন্য তাঁর চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলমকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে বহাল রাখার জন্য গোপনে নানা অপচেষ্টা করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২ ফেব্রুয়ারি ব্যবস্থাপনা কমিটি বাতিল এবং প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন করে। এ সময় প্রধান শিক্ষকের মদদে পাকুল্যা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নানসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগের দোসররা শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং মানববন্ধনের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

যুবদল নেতা রাশেদ মিঞা শিক্ষার্থীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন এবং হামলার প্রতিবাদ করেন। এ সময় হামলাকারীরা রাশেদসহ তাঁর লোকজনকে হত্যার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ৪ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেন। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিএনপি নেতা আবদুল হান্নানসহ আসামিরা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে রাশেদ মিঞার ওপর হামলা করেন। এ সময় মাথায় ইটের আঘাত করা ছাড়াও ধারালো অস্ত্র, চাপাতি ও রড দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাশেদ মারা যান।

সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মিলাদুন্নবী বলেন, রোববার রাতে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুনবগুড়ায় হামলায় যুবদল নেতার মৃত্যু, অভিযুক্ত বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বদল ন ত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’